|
|
|
|
মিমি-র সঙ্গে এখনও বিয়ে হয়নি
কয়েক বছর ‘ব্লকবাস্টার’ না থাক, অন্য রকম ছবি করে ‘ক্লাস’য়ের কাছে পৌঁছতে চান তিনি।
মিমির সঙ্গে পুরী যাওয়া থেকে নিজের টুইট লোককে দিয়ে করানো। রাজ চক্রবর্তীর সাক্ষাৎকার নিলেন ইন্দ্রনীল রায় |
রাজ, কলকাতায় গরম বেশি, না পুরীতে?
মানে?
না, জিজ্ঞেস করছি কলকাতায় বেশি গরম না পুরীতে?
(হেসে) কলকাতায়।
সবাই তো এখানে বলছে যে পুরীতে তাপমাত্রা খুব বেশি?
কেন?
কারণ রথের সময় আপনি আর মিমি চক্রবর্তী নাকি ওখানে একসঙ্গে গিয়েছিলেন?
শুধু আমরা দু’জনে কেন, অনেকেই গিয়েছিল। আমাদের একটা বড় গ্রুপ গিয়েছিল পুরী। অরূপ (বিশ্বাস)-দারও যাওয়ার কথা ছিল।
হ্যাঁ, কিন্তু লোকজন তো আপনাদের দু’জনকেই দেখেছে। পুরীর মন্দিরে আপনারা দু’জনেই গিয়েছিলেন।
সে, লোকে আমাদের চেনে বলে দেখেছে। তবে হ্যাঁ, গিয়েছিলাম পুরীর মন্দিরে একসঙ্গে।
ইন্ডাস্ট্রিতে জোর গুজব আপনার আর মিমির বিয়ে হয়ে গিয়েছে!
না, না (হেসে)। এখনও কিছু হয়নি।
কিছু হওয়া নয়, বিয়ের কথা বলছি।
না, বিয়ে করিনি আমরা। এখনও অবধি কিছু ঠিক হয়নি বলতে পারেন। বিয়ের কথা ভাবিনি আমি। এটাই সত্যি। আর কিছু জিজ্ঞেস করবেন না প্লিজ। সে দিন কে আমাকে বলল রণবীর কপূরের মতো আমিও নাকি যে যে হিরোইনের সঙ্গে কাজ করি, তাকেই বিয়ে করতে চাই। কী আর বলব! এটুকু অবশ্য জানি, ইন্ডাস্ট্রির সব নায়িকাই আমার সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক।
কসবাতে আপনার বাড়ির কাছে নাকি মিমিও বাড়ি কিনেছেন?
না, বাড়ি কেনেনি (হেসে)। ভাড়া নিয়েছে। |
|
ওহ্ আচ্ছা। মিমির প্রসঙ্গ ছেড়ে অন্য প্রশ্নে আসি। আপনার বিরুদ্ধে কিন্তু অনেক অভিযোগ।
বলুন।
অভিযোগ নম্বর এক, বাণিজ্যিক ছবিতে আপনিই ছিলেন এক নম্বরে। কিন্তু সেটায় আটকে না থেকে সৃজিত মুখোপাধ্যায় হওয়ার ভূত চাপল আপনার...
একদমই নয়। আমার সৃজিত মুখোপাধ্যায় হওয়ার কোনও ইচ্ছে নেই। তবে আমি সৃজিতের পড়াশোনাটাকে হিংসে করি। সেই পড়াশোনা করার ধৈর্য আমার নেই। তবে পরিচালক সৃজিতকে হিংসে করি না।
তা হয়তো করেন না। কিন্তু লোকে বলে যে হালিশহর কী বোলপুরের দর্শক আপনাকে রাজ চক্রবর্তী বানাল, তাঁদের ছেড়ে আজ আপনার কাছে লেক গার্ডেন্স কী বালিগঞ্জের গ্রহণযোগ্যতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গিয়েছে?
না, সেটা বোধহয় ঠিক নয়। দেখুন মানুষ হিসেবে একটা গ্রোথ তো হবেই আমার। সেটা আমার জীবনযাত্রাতেও প্রতিফলিত হবে। আমার সিনেমাতেও তার প্রতিফলন হবে। আমি ‘মাস’য়ের কাছে পৌঁছে গিয়েছি। এ বার আমি ‘ক্লাস’-এর কাছে পৌঁছতে চাই। শুধু হালিশহরের দর্শক কেন আমার ছবি দেখবে? আমি তো বালিগঞ্জের দর্শককেও হলে টানতে চাইব। ছবির নির্মাতা হিসেবেও আমার খিদে আর ক্যানভাস বাড়ছে প্রতিদিন। আজ আর আমি তো শুধু এমন ছবি বানাব না যেখানে হিরো শেষে মারা যায়। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ছবি বানাব। যেমন ‘প্রলয়’ বানালাম।
হঠাৎ এ রকম একটা বিষয় বেছে নিলেন?
দেখুন বরুণ বিশ্বাসের জীবন-কাহিনি আমার খুব প্রিয়। যে দিন জানলাম বরুণ বিশ্বাসের কথা, তার পর থেকেই প্রচুর রিসার্চ করেছি। আমি এর আগে ছবিতে অনেক হিরো তৈরি করেছি। বরুণ বিশ্বাসকে সিনেমায় হিরো বানাতে পারি কি না, এটাই আমার কাছে চ্যালেঞ্জিং ছিল।
পুরুলিয়াতে শ্যুটিং করেছেন তো? পরমব্রত বলছিলেন গরমকালেও ওঁদের সোয়েটার পরিয়ে শ্যুটিং করিয়েছেন?
(হেসে) হ্যাঁ, তা করিয়েছি। পুরুলিয়া পছন্দ করেছিলাম কারণ পুরুলিয়ার লোকেশনগুলোর মধ্যে একটা নিঃসঙ্গতা রয়েছে, যন্ত্রণা আছে। এই ছবিতে লোকেশন শুধুই লোকেশন নয়, অবশ্যই একটা চরিত্র। ছবিটা বানানোর সময় আমার মাথায় ছিল যে এই ছবিটা হয় ‘দবাং’-এর মতো হবে, না হলে ‘রং দে বসন্তি’র মতো। অনেক ভেবে আমি ‘রং দে বসন্তি’র মডেলেই ছবিটা বানিয়েছি যেখানে বাণিজ্যিক উপকরণ থাকলেও মানুষ ভাবতে বাধ্য হবে। তাই ‘প্রলয়’ আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ছবি।
তার কারণ কি এটাও যে গত কয়েক বছরে আপনার ব্লকবাস্টার কোনও ছবি নেই?
না, সেটার জন্য নয়। গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার অন্যতম কারণ বহু বছর ধরে শুনছি আমি রিমেক ফিল্মমেকার। এ বার এমন একটা গল্প বেছেছি যেটার একটা নিজস্বতা আছে। আমার ইনপুটস রয়েছে। ‘প্রলয়’ না চললে আমাকে আবার সাউথের রিমেক ছবি বানাতে হবে। আর এ রকম বিষয় নিয়ে ছবিতে প্রযোজক পাওয়া দুষ্কর। ‘প্রলয়’-এর জন্য তো আমি প্রযোজক পাচ্ছিলাম না। তার পর নিজেই প্রোডিউস করব সিদ্ধান্ত নিই। শেষমেশ শ্রীকান্তদা প্রোডিউস করবে বলে ঠিক করেন। এ জন্য আমি ওঁর কাছে খুবই কৃতজ্ঞ।
কিন্তু এটা তো স্বীকার করেন আজ থেকে তিন বছর আগে আপনার অবস্থান যতটা শক্ত ছিল, আজ তা নেই?
আমার মনে হয় না কথাটা ঠিক।
আপনার মনে না-ও হতে পারে। কিন্ত এটা তো মানবেন এক সময় ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের নয়নের মণি ছিলেন আপনি। আজ আপনার সেই জায়গাটা নেই?
ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের নয়নের মণি বদলাতে থাকে। শ্রীকান্তদা সবার কাছ থেকেই বেস্টটা আদায় করে নিতে জানেন, যে যখন ওঁদের সঙ্গে কাজ করে, তখন সেই ওঁদের নয়নের মণি। আর একটা জিনিস মনে হয়। ইট’স হাই টাইম, ইন্ডাস্ট্রিতে আরও কিছু ভাল প্রোডিউসর আসুক। ওঁরাই বা আর কত ছবি প্রযোজনা করবেন? আজ ‘সত্যান্বেষী’ও করছেন, ‘অপুর পাঁচালি’ও করছেন, ‘প্রলয়’ও করছেন। আর কত ছবির চাপ নেবেন ওঁরা? ইন্ডাস্ট্রিতে আরও কিছু সেন্সিবল প্রযোজক আসা দরকার।
কেন, অশোক ধানুকা তো আছেন?
সেন্সিবল প্রোডিউসর দরকার বললাম তো। অশোক ধানুকা শুধুই প্রোডিউসর। |
|
রানা সরকার?
রানা সরকারও তো শুধু প্রোডিউসর।
আপনার নামে আর একটা অভিযোগ। আপনি নাকি লোক রেখেছেন যে আপনার হয়ে টুইট করে?
বাজে কথা। আমি নিজেই টুইট করি।
কিন্তু টুইটারে আপনার ইংরেজি লেখা দেখে অনেকেই বলেন, এত ভাল ইংরেজি আপনার হতেই পারে না।
না, টুইট আমি নিজেই করি। কিন্তু পোস্ট করার আগে আমার অফিসের ছেলেমেয়েদের দেখিয়ে নিই। গ্রামার, পাংচুয়েশন, বানান ঠিক আছে কি না ওরা দেখে দেয়।
আচ্ছা, ইন্ডাস্ট্রিতে তো আপনারা মানে পরিচালকেরা একটা গ্রুপ বানিয়েছিলেন। নাম ছিল ‘কোবরা গ্যাং’। সেটার কী হল?
ইন্ডাস্ট্রিতে কোনও গ্রুপ হয় না সেটা আমি বুঝে গেছি। সবাই নিজের নিজের কাজে ব্যস্ত। পরিচালকদের একটা গ্রুপ হলে ভাল হত। কিন্তু সেটা হওয়ার নয়। আমি উদ্যোগ নিয়েছিলাম এক সময়ে। আর ইচ্ছে নেই। তবে এর পাশাপাশি দুর্দান্ত কাজও আজ হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রিতে। কৌশিকদা, সৃজিত, কমলেশ্বর, বিরসা, মৈনাক সবাই ভাল কাজ করছে।
বিরসা আর মৈনাকের মধ্যে কাকে এগিয়ে রাখবেন?
বিরসাকে এগিয়ে রাখব। মৈনাক একই ধরনের ছবি বানায়। আমি আজও বিশ্বাস করি বিরসা যদি মাথা ঠান্ডা রাখে, এসএমএস কী বিবিএম কম করে কাজে মন দেয়, তাহলে ও অসাধারণ ছবি বানাতে পারে।
আর আপনার কথামতো যদি পরিচালকরা এক হত, তা হলে কী সুবিধে হত?
বলতে তো পারতাম কী কী দরকার আমাদের। এই যে মাল্টিপ্লেক্স আমাদের ট্রেলার চালায় না হিন্দি ছবির সঙ্গে, সেটা তো সমস্বরে বলতে পারতাম। এই যে মাল্টিপ্লেক্সে আমরা ভাল শো পাই না, তাই বা কেন হবে। এই মুহূর্তে যেটা সব চেয়ে দরকার, তা হল ছোট শহরে ছোট ছোট মাল্টিপ্লেক্স। যেখানে এসি চলবে। বাথরুমটা ভাল হবে। শুধু ভাল সিনেমা বানালে হবে না। সেটা ভাল জায়গায় দেখাতেও হবে।
আপনি তো মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ, আপনি বলছেন না কেন?
বলেছি। আরও ভাল করে ওঁকে একটা প্রেজেন্টেশন দিতে হবে।
‘প্রলয়’য়ের বিষয়বস্তু নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নাকি অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন?
বাজে কথা। কেউ একজন দুষ্টুমি করে এই প্রচারটা করেছে। আমার সঙ্গে এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কোনও কথাই হয়নি।
আচ্ছা, অঞ্জন দত্ত যে রাজ চক্রবর্তী হতে চান, সেটা নিশ্চয়ই জানেন?
হ্যাঁ, আনন্দplus-এই পড়েছিলাম।
আপনার প্রতিক্রিয়া কী ছিল?
এটুকুই বলব অঞ্জনদাকে, মানুষ সম্পর্কে পজিটিভ মাইন্ডসেট রাখুন। যে মানুষদের সঙ্গে আজ কাজ করছেন, তিন দিন
পরে তাদের নামে গালাগালি দেবেন না। আর একটা জিনিস বলব, আমার কাছে বাজে অভিনেতা হওয়াটা ইম্পর্ট্যান্ট নয়, ভাল মানুষ হওয়াটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আচ্ছা, নায়িকাদের মধ্যে একটা র্যাঙ্কিং করবেন?
বলুন, কী রকম?
পায়েল, শুভশ্রী, শ্রাবন্তী, পূজা আর মিমি-র মধ্যে র্যাঙ্কিং করুন।
হুমমম্। একটু ভাবতে দিন। র্যাঙ্কিং হবে এ রকম শ্রাবন্তী, পায়েল, মিমি, শুভশ্রী, পূজা।
এই লিস্ট দেখলে তো বাড়িতে অশান্তি হবে, মিমিকে তিন নম্বরে রাখলেন যে!
(খুব হেসে) না, মনে হয় না মিমি অশান্তি করবে। |
|
|
|
|
|