সস্ত্রীক বেঙ্গালুরুতে ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার পথে চলন্ত ট্রেন থেকে ‘রহস্যজনক’ভাবে মৃত কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়র সাগ্নিক পালের কফিনবন্দি মৃতদেহ সোমবার মালদহে এসে পৌঁছাল। ঘটনাটি মালদহে শহরে হায়দারপুর পাড়ায় শোকের ছায়া নেমে আসে। মৃত ইঞ্জিনিয়রের পরিবার এবং তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের একাংশের অবশ্য এই মৃত্যুকে ঘিরে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে গিয়েছে। তাঁরা জানান, সাগ্নিক ট্রেন থেকে পড়ে গিয়েছিল না তাঁকে ফেলে দেওয়া হয়েছে তা এখনও পরিস্কার নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে। সেই ক্ষেত্রে নতুন করে মামলার চিন্তাভাবনাও শুরু হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “সাগ্নিক পালের মৃত্যু নিয়ে তাঁর পরিবারের তরফে আমাদের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হলে, পুলিশ অবশ্যই নতুন করে তদন্ত শুরু করবে।” এদিন ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে দেহটি পৌঁছাতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর মা মঞ্জরীদেবী। মাঝেমাঝেই তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিলেন। একই অবস্থা মৃত ইঞ্জিনিয়রের স্ত্রী শ্বেতাদেবীর। এলাকায় লোকজনও ভিড় করতে থাকেন। অনেকে কান্নায় ভেঙেও পড়েন। স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর আশিস কুণ্ডু বলেন, “আমরা ভাবতেই পারছি না। ছেলেটা খুবই মেধাবী ছিল।” |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেঙ্গালুরুতে ইন্টারভিভ দিতে গত সোমবার সন্ধ্যায় মালদহ টাউন স্টেশন থেকে সস্ত্রীক গুয়াহাটি- বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেসের বাতানুকূল কামরায় ওঠেন সাগ্নিক পাল ও তাঁর স্ত্রী শ্বেতাদেবী। তাঁরা যে কামরায় উঠেছিলেন, সেই কামরায় তিনজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা জওয়ানও ছিল। সেই অবসরপ্রাপ্ত সেনা জওয়ানেরা সাগ্নিককে জোর করে মদ খাওয়ায় বলে অভিযোগ। তা নিয়ে সাগ্নিকের সঙ্গে শ্বেতার ঝগড়া হয়েছিল। রাগে শ্বেতা ঘুমাতে চলে যান। পরেরদিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ চেন্নাই স্টেশনে ঘুম ভাঙতে শ্বেতাদেবী দেখেন সাগ্নিক তাঁর বার্থে নেই। গত ৩১ জুলাই রাতে বেঙ্গালুরুতে রেল পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শ্বেতাদেবী।
এর পরেই দুই পরিবারের লোকজন বেঙ্গালুরুতে যান। গত শুক্রবার অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ সাগ্নিক পালের পরিবারের লোকজের জানান, ওনগোল স্টেশন থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে রেল লাইনের ধার থেকে ২৪-২৫ বছর বয়সী একজন যুবকের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। তার পরে দেহটি সনাক্ত হয়। শনিবার দেহটি নিয়ে তাঁরা মালদহের উদ্দেশ্যে রওনা হন। মৃতের শ্বশুরমশাই তাপস সরকার বলেন, “আমরা পুলিশকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম সাগ্নিক ট্রেন থেকে পড়ে গিয়েছিল না ওকে কেউ ধাক্কা মেরেছে কী জানা গিয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে , ট্রেন থেকে পড়েই সাগ্নিকের মৃত্যু হয়েছে। আমরা দেখছি কী করা যায়।”
|