একটি সাইকেল পড়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) ও এসএফআই সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ মহাবিদ্যালয়। সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ মহাবিদ্যালয় চত্বরে ওই সংঘর্ষে দুপক্ষের ১৪ জন সমর্থক জখম হয়েছেন। তাঁদের পাঁচ টিএমসিপি সমর্থক ও এক এসএফআই সমর্থককে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ দিকে সংঘর্ষের ঘটনায় টিএমসিপির তরফে ৭ জন এসএফআই সমর্থক ও এসএফআইয়ের তরফে ৬ জন টিএমসিপি সমর্থকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। রায়গঞ্জ থানার আইসি দীনেশবাবু বলেন, “দুই পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনার পর অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে টিএমসিপি ও এসএফআই সমর্থকেরা দুপুর ১টা থেকে কলেজ সংলগ্ন শিলিগুড়িমোড় এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। টিএমসিপি ও এসএফআই সমর্থকেরা একই জায়গায় পথ অবরোধ শুরু করলে দুপক্ষের মধ্যে ফের বচসা ও ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। সেই সময় পুলিশ কর্মীদের এসএফআই-কর্মীরা ধাক্কাধাক্কি করেন বলে অভিযোগ। |
পুলিশের আশ্বাসে দুপুর সাড়ে ৩টা নাগাদ এসএফআই সমর্থকেরা পথ অবরোধ তুলে নিলেও সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ অবরোধ তোলে টিএমসিপি। তার আগে তাতে যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা এবং দলের রায়গঞ্জ পুরসভার কাউন্সিলরেরা। অবরোধের ফলে জাতীয় সড়কে ব্যাপক যানজটের জেরে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। বহু যাত্রীকে রায়গঞ্জ থেকে ১০ কিমি দূরের পানিশালা এলাকায় গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে শহরে যেতে দেখা যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন থেকে মহাবিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ক্লাস ও দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের পরীক্ষার ফর্ম পূরণের কাজ শুরু হয়। সেই কারণে সকাল থেকেই মহাবিদ্যালয় চত্বরে টিএমসিপি ও এসএফআই সমর্থকেরা ভিড় করেন। ১৯৮৭ সালে মহাবিদ্যালয় স্থাপিত হওয়ার পর থেকে এসএফআই কলেজের ছাত্র সংসদ দখলে রেখেছে। এ দিন দুপুরে এক টিএমসিপি কর্মী বাইকে চেপে কলেজ থেকে বার হচ্ছিলেন। সেই সময় তাঁর বাইকে ধাক্কা লেগে এসএফআই সমর্থকদের কয়েকটি সাইকেল পড়ে যাওয়ায় গোলমাল শুরু হয়। টিএমসিপির জেলা সভাপতি অজয় সরকার বলেন, “দুর্ঘটনায় বাইকের ধাক্কায় এসএফআই সমর্থকদের কয়েকটি সাইকেল পড়ে যায়। তাতে এসএফআই সমর্থকেরা লাঠিসোটা ও রড নিয়ে আমাদের ওই কর্মীকে মাটিতে ফেলে মারধর করে। পরে বহিরাগত এসএফআই সমর্থকেরা আমাদের কর্মী, সমর্থকদের উপরে হামলা চালায়।” এসএফআই জেলা সম্পাদক প্রাণেশ সরকার ও ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সুজয় মুন্সি জানান, টিএমসিপি সমর্থকেরা এ দিন নেশাসক্ত হয়ে বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে ঢুকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এসএফআই সমর্থকদের সাইকেল ফেলে দেয়। প্রতিবাদ করলে মহিলা সমর্থকদের উদ্দেশে কটূক্তি শুরু করে। এর পরে ওঁরাই হামলা চালায়। ছয়জন জখম হন। এদিন বিকালে টিএমসিপির তরফে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মধুমিতা রায়ের কাছে লিখিত ভাবে অভিযুক্ত এসএফআই সমর্থকদের বহিষ্কার ও বহিরাগত প্রবেশ রুখতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। মধুমিতাদেবী বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখে মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইন মতো যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।” |