অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে শিশুদের দেওয়া খাবারে পোকা মিলেছে। এর প্রতিবাদে এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাকে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে তাঁদের আটকে রাখা হয়। বাঁকুড়ার হিড়বাঁধ থানার ভেদুয়া গ্রামে সোমবারের ঘটনা। খবর পেয়ে হিড়বাঁধ ব্লকের সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক রাণু চক্রবর্তী সেখানে গিয়ে গ্রামবাসীদের বোঝানোর পর অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা ছাড়া পান।
হিড়বাঁধ ব্লকের ভেদুয়া গ্রামের ওই ৩১ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে এলাকার ৫৩ জন খুদে পড়ুয়াকে খাবার বিলি করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এ দিন সকালে একটি শিশু ওই কেন্দ্র থেকে খিচুড়ি নিয়ে আসে। খেতে যাওয়ার সময় খিচুড়িতে পোকা দেখা যায়। এর পরেই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ওই খিচুড়ি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে কর্মী ও সহায়িকাকে দেখান। তাঁদের কাছ থেকে সদুত্তর না পেয়ে গ্রামবাসীদের একাংশ সকাল ৯টা থেকে কর্মী ও সহায়িকাকে কেন্দ্রের মধ্যেই আটকে রাখেন।
গ্রামবাসী প্রণব রায়, অজিত রায়, পদ্মলোচন রায়দের অভিযোগ, “দীর্ঘদিন ধরেই ওই কেন্দ্র থেকে নিম্নমানের শিশুখাদ্য দেওয়া হচ্ছে। বার বার প্রতিবাদ করেও কোনও লাভ হয়নি। তাই এ দিন শিশুদের যে খাবার দেওয়া হয়েছে, তা খেলে খেলে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ত। সেটা জানানোর পরেও কর্মী ও সহায়িকা আমাদের কথা কানে তুলতে চাননি।” খবর পেয়ে দুপুর ১২টা নাগাদ হিড়বাঁধের সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক রাণু চক্রবর্তী ওই কেন্দ্রে যান। গ্রামবাসীদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথাবার্তা বলেন তিনি। তাঁর কাছ থেকে আশ্বাস পাওয়ার পরে দুপুর দু’টো নাগাদ ঘেরাও মুক্ত হন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা। কর্মী মিনতি রায় ও সহায়িকা অর্চনা রায় অবশ্য নিম্নমানের খাবার দেওয়ার অভিযোগ মানতে চাননি। তবে এ দিন খিচুড়িতে পোকা মিলেছে, তা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, “মজুত চালের মধ্যে হয় তো পোকা ছিল। ভাল ভাবে জল দিয়ে ধোওয়ার পরেও আমাদের নজর এড়িয়ে পোকা রয়ে গিয়েছিল। তাতেই বিপত্তি হয়েছে।” ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবে না বলে আশ্বাস দেওয়ার পরেই তাঁদের ছাড়া হয়।
রাণুদেবী বলেন, “ওই কেন্দ্র থেকে নিম্নমানের শিশুখাদ্য দেওয়া হচ্ছে বলে গ্রামের মানুষ যে, অভিযোগ করেছেন সে জন্য চাল-সহ খাদ্য সামগ্রীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। অভিযোগের তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” হিড়বাঁধের বিডিও অনুপম চক্রবর্তী বলেন, “ভেদুয়া গ্রামে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে বিলি করা শিশুদের বরাদ্দ খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। ওই প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে কেন্দ্রে গিয়ে সরজমিনে তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে। তদন্তে ওই কেন্দ্রের কর্মী ও সহায়িকার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
|