শুধুমাত্র ন্যায্য মূল্যে রোগীদের হাতে ওষুধ পৌঁছে দেওয়াই নয়, তা পেতে যাতে কোনও হয়রানি না হয়, এ বার সেটিও নিশ্চিত করতে চাইছে রাজ্য সরকার। সেই কারণেই আজ, মঙ্গলবার থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে একটি প্রকল্প চালু করা হচ্ছে এসএসকেএম হাসপাতালে।
ন্যায্য মূল্যের দোকানে ওষুধ কেনার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় রোগীর পরিবারের লোকেদের। আর তার পরে যখন তাঁদের সুযোগ আসে, তখন জানা যায় ১০টা ওষুধের মধ্যে হয়তো দোকানে রয়েছে মাত্র দু’টি কি তিনটি। আগে থেকে সেটা জানা থাকলে হয়তো ওই দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর কষ্টই করতেন না তাঁরা। বেশির ভাগ দোকানেই এই এক চিত্র। এই হয়রানি বন্ধ করতে এ বার বিশেষ ব্যবস্থা চালু হচ্ছে এসএসকেএম হাসপাতালে। স্থির হয়েছে, প্রয়োজনীয় কোন কোন ওষুধ হাসপাতালে মজুত নেই, তার একটি তালিকা এ বার থেকে দোকানের বাইরে মজুত থাকবে। দোকানের পাশে সহায়তা কেন্দ্রে গিয়ে সেই তালিকা দেখে তবেই লাইনে দাঁড়াবেন রোগীরা। এসএসকেএমে পরীক্ষামূলক ভাবে এই ব্যবস্থা চালু হলেও পরে ধাপে ধাপে অন্য হাসপাতাল সংলগ্ন দোকানেও এই ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। |
এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসএসকেএমে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান পরিদর্শন করে রোগীদের হয়রানি কমানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী এক জরুরি বৈঠকে স্থির হয়েছিল, ওষুধের দোকানের রোগী হয়রানি ঠেকানোর দায়িত্ব দেওয়া হবে এক জন সহকারি সুপারকে। এ বার সেই সিদ্ধান্তও বলবৎ হচ্ছে। মঙ্গলবার থেকে ওই সহকারি সুপারের তত্ত্বাবধানে সহায়তা কেন্দ্রটি চলবে। এসএসকেএমের ভারপ্রাপ্ত রাজ্যের মন্ত্রী মদন মিত্র জানিয়েছেন, ওষুধের দোকানে ক্রেতার সংখ্যা হু হু করে বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু পাশাপাশি হয়রানির অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে লাগাতার। সেই জন্যই তড়িঘড়ি এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে।
প্রশ্ন হল, রোগীরা না হয় জানলেন যে কোন কোন ওষুধ দোকানে অমিল। তাতে তাঁদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর কষ্ট হয়তো কমল। কিন্তু প্রয়োজনীয় বেশির ভাগ ওষুধই যাতে দোকানে মজুত থাকে, সে ব্যাপারে কী বন্দোবস্ত হচ্ছে? মদনবাবু জানান, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দোকান মালিককে তিন মাস সময় দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে বেশির ভাগ প্রয়োজনীয় ওষুধই যাতে মজুত থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
এসএসকেএম তথা ‘ইনস্টিটিউট অফ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসাচর্’-এর অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র বলেন, “শুধু দোকানকে সতর্ক করলে চলবে না। চিকিৎসকদেরও এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে। কোন কোন ওষুধ খুবই জরুরি, তার তালিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই একটি বুকলেট ছাপানো হয়েছে। শিক্ষক-চিকিৎসক থেকে হাউসস্টাফ পর্যন্ত সকলের কাছে পৌঁছে গিয়েছে ওই বুকলেট। সেটা দেখেই তাঁদের প্রেসক্রিপশন করা উচিত।”
মিল্কব্যাঙ্কঃ পূর্বাঞ্চলের প্রথম হিউম্যান মিল্ক ব্যাঙ্ক চালু হচ্ছে এসএসকেএমে। হাসপাতালের নবজাতক বিভাগে ওই ব্যাঙ্কের উদ্বোধন হবে বুধবার। হাসপাতাল সূত্রে খবর, যে মায়েদের নিজের সন্তানকে খাওয়ানোর পরেও অতিরিক্ত দুধ থাকছে বা যাঁদের সন্তান জন্মের পরে মারা গিয়েছে, তাঁরা ওই ব্যাঙ্কে দুধ দান করতে পারবেন। পাস্তুরাইজ করে তা সংরক্ষিত রাখা হবে। যে শিশুদের মা জন্মের পরে মারা গিয়েছে বা মায়েরা কোনও কারণে সন্তানকে স্তন্যপান করাতে পারছেন না, তাঁরা ওই ব্যাঙ্ক থেকে দুধ নিয়ে শিশুকে খাওয়াতে পারবেন।
|