প্রায় পাঁচ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু বগুলায় ছাত্রী খুনের ঘটনায় পুলিশ এক পা-এগোতে পারেনি।
দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীকে খুন করার পাশাপাশি দুষ্কৃতীরা ওই ছাত্রী প্রতি রাতে যে বাড়িতে শুতে যেত সে বাড়ির কর্ত্রীকেও ঘায়েল করে গিয়েছিল। সিপিএমের স্থানীয় নেত্রী সেই মহিলাও গুরুতর জখম অবস্থায় আপাতত কলকাতার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। মজার ব্যাপার, মাথায় আঘাত লাগায় তিনিও কিছু মনে করতে পারছেন না। আর নদিয়া জেলা পুলিশও সেই ‘অজুহাত’ দেখিয়ে পাঁচ দিনের মধ্যে এক বারও ওই মহিলার সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন মনে করেনি।
ওই মহিলার পরিবারের লোকজনের অবশ্য দাবি, এনআরএস হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসাও কার্যত কিছুই হচ্ছে না। তাঁদের অভিযোগ, বিরোধী দলের সদস্য বলেই ওই মহিলার চিকিৎসা নিয়ে তেমন মাথা ব্যথা নেই হাসপাতালের। যেমন তদন্তে গা করছে না পুলিশ।
নদিয়া জেলা পুলিশ সুপার অবশ্য সোমবার দাবি করেছেন, “ডাক্তারি পরীক্ষায় যা রিপোর্ট পেয়েছি তাতে ওই মহিলার উপরে যৌন নির্যাতন হয়নি। তবে ওই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারলে অনেক কিছুই পরিষ্কার হয়ে যেত। উনি তো কথা বলার মতো অবস্থাতেই নেই।” ওই ছাত্রীর উপরেও যৌন নির্যাতন হয়নি বলে তাঁর দাবি। জেলার পুলিশের বড়কর্তা যেহেতু পা বাড়াননি, তাই তদন্তকারী অফিসারও আর কলকাতায় এসে ওই মহিলার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেননি। অতএব তদন্ত যেখানে ছিল, থমকে রয়েছে সেখানেই।
তবে জেলা পুলিশ কর্তারা অবশ্য তা মানতে চাইছেন না। আততায়ী গ্রেফতার নাই বা হল, তদন্ত ‘অনেকটাই’ এগিয়েছে বলে দাবি করছেন তাঁরা। এ ব্যাপারে পুলিশ কয়েকটি প্রশ্নও তুলছে।
তাঁদের অনুমান, ঘটনা ওই ছাত্রীকে ঘিরে আবর্তিত। বাড়ির কর্ত্রী সম্ভবত কিছু দেখে ফেলেছিলেন কিংবা দুষ্কৃতীদের কাউকে চিনে ফেলেছিলেন বলেই তাঁর উপরে আক্রমণ হয়েছিল।
বুধবার রাতে দুষ্কৃতীরা ছাদের সিঁড়ি দিয়েই নেমে এসেছিল। প্রশ্ন, ছাদের সিঁড়ি কেউ কি ইচ্ছে করেই খুলে রেখেছিল? তা ছাড়া, তারা যখন পালিয়ে যায়, সাধারণ ভাবে বাড়ির সদর দরজা খুলেই তাদের চলে যাওয়ার কথা ছিল। সে ক্ষেত্রে দরজা বন্ধ ছিল ভিতর থেকেই। প্রশ্ন, দুষ্কৃতীরা ফের ছাদে উঠে আম গাছ বেয়ে নেমে, পাঁচিল টপকে পালানোর মতো এমন কষ্টসাধ্য পথ বেছে নিল কেন?
তদন্তে নেমে একাধিক ব্যক্তিরই নাম উঠে আসছে। পুলিশের এক কর্তা জানান, ইতিমধ্যেই বারো জনের একটা তালিকা তৈরি করেছে পুলিশ। তার মধ্যে চার জনকে ইতিমধ্যেই জেরাও করা হয়েছে। |