খন্দ রাস্তা নিজেরাই সারিয়ে নিল পড়ুয়ারা
ক কিলোমিটারও নয়। কিন্তু ওই পথটুকু ‘দুস্তর পারবার’ হয়ে উঠেছে পড়ুয়াদের কাছে। ফলে নবগ্রামের শিবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সীমানা লাগোয়া কিরীটেশ্বরী পঞ্চায়েত এলাকার খেকুল হাইস্কুলে ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি দিন দিন তলানিতে এসে পৌঁছেছিল। স্কুলে পৌঁছনোর ওই বেহাল পথের দশা ফেরাতে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকারাই পঞ্চায়েতের ভূমিকা পালন করলেন।
পঞ্চায়েত থেকে সংস্কার না করে দেওয়া ওই এক কিলোমিটার রাস্তা স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকারাই মেরামত করলেন। তাঁদের চাঁদা তোলা টাকায় সোমবার ওই রাস্তার খানখন্দ ভরাট করা হল ইটভাটার ঘেস ও ভাঙা ইট দিয়ে।
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে ৪-৫ কিলোমিটার পূর্বদিক দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের সীমান্ত লাগোয়া জয়কৃষ্ণপুর, গঙ্গারামপুর, খেকুল, বাথান ও মিলকি-সহ ওই তল্লাটের ৭-৮টি গ্রামের ছেলেমেয়েদের উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত লেখাপড়া নির্ভর করে খেকুল গ্রামের ওই উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের উপর।
রাস্তা সারাতে ব্যস্ত পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।
ওই স্কুলের শিক্ষক অসীম প্রামাণিক বলেন, “এ রকম একটি স্কুলে যাতায়াতের পথে মোরাম বিছানো হয়েছিল প্রায় দু’দশক আগে। সেই রাস্তার দশা এখন আর কহতব্য নয়। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় সাইকেল-সহ পড়ে গিয়ে হামেশাই জখম হচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। অথচ রাস্তা মেরামতের সরকারি কোনও উদ্যোগ নেই।” ওই স্কুলের আর এক শিক্ষক তাজদার হোসেন বলেন, “ওই তো দু’দিন আগে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুই ছাত্রী স্কুলে যাওয়ার পথে সাইকেল নিয়ে পড়ে যায়। তাদের কোমরে খুব লেগেছে। তাই দেখে রাস্তা মেরামত করার জন্য ছাত্রছাত্রীরা নিজেরাই চাঁদা তুলতে শুরু করে দেয়। তাই দেখে আমরাও বেশ কয়েক জন শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সামিল হই।”
অবশেষে সোমবার গঙ্গারামপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে খেকুল গ্রামের বটতলা মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার বেহালা রাস্তার হাল ফেরানো হয়। একাদশ শ্রেণির ছাত্র সুকান্ত মণ্ডল বলেন, “নতুন পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করে দায়িত্ব গ্রহণ করার কাজ শুরু করতে এখনও অন্তত মাস দু’য়েক দেরি। রাস্তা মেরামতির জন্য তত দিন অপেক্ষা করলে আমাদের স্কুলের হাজার খানেক ছাত্রছাত্রীর অর্ধেকেরই হাত-পা আর আস্ত থাকত না। তাই চাঁদা তুলে রাস্তা মেরামতিতে নেমে পড়লাম।”
সদ্য সমাপ্ত ভোটে নবগ্রাম থেকে নির্বাচিত হয়েছেন জেলাপরিষদের কংগ্রেস প্রার্থী ধীরেন্দ্রনাথ যাদব। তিনি বলেন, “গত পাঁচ বছর ধরে লাগোয়া দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত শিবপুর ও কিরীটেশ্বরী, স্থানীয় নবগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতি ও মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদ—এক কথায় গ্রামীন উন্নয়নের সব ক’টি সরকারি সংস্থা শাসন করল সি পি এম। নবগ্রাম বিধানসভাও সি পি এমের দখলে। তবুও ছোট ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়ার রাস্তার ওই বেহাল দশা কেন তার জবাব তো ওঁদেরই দিতে হবে।” স্থানীয় বিধায়ক কানাইলাল মণ্ডল সি পি এমের মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটির সদস্য। তিনি বলেন, “মোরাম বিছানো রাস্তা দিয়ে ট্রাক্টর চলাচলের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। ফলে রাস্তায় অস্বাভাবিক রকমের খানাখন্দ তৈরি হচ্ছে। প্রতি বছর সেই বেহাল রাস্তা বর্ষার আগে মেরামত করা হয়। কিন্তু এ বার পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে গত ৬ মাস ধরে যে ভাবে টানাহেচড়া চলেছে তার ফলে কয়েক মাস ধরে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে পড়েছিল। তারই পরিণতিতে বেহাল রাস্তা সংস্কার করা সম্ভব হয়নি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.