এক সপ্তাহ ধরে নানা চেষ্টা চালিয়েও নড়ানো যাচ্ছে না। বরং লুকোচুরি খেলে যাচ্ছে। বন দফতরের আশঙ্কা, গড় পঞ্চকোট পাহাড়েই স্থায়ী ভাবে ডেরা বাঁধতে চাইছে পূর্ণবয়স্ক দাঁতাল।
গত সাত দিনে হাতিটি হুলাপার্টির তাড়া খেয়ে বারবারই পাহাড় থেকে নেমে ফের উঠে পড়ছে উপরে। রঘুনাথপুরের রেঞ্জ অফিসার সোমনাথ চৌধুরী সোমবার বলেন, “এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত দাঁতালটি রয়েছে পাহাড়ের উপরে। ওর ভাবগতিক দেখে মনে হচ্ছে, পাহাড়েই ডেরা বাঁধতে চায়।” প্রথমে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের ‘রেসিডেন্ট’ হাতি বলে মনে করলেও এখন বন দফতরের বক্তব্য, সেটি অন্য এলাকা থেকে আসা দলছুট দাঁতাল।
এক সপ্তাহ আগে মঙ্গলবার ভোরে বাঁকুড়ার দিক থেকেই দাঁতালটি পুরুলিয়ার সাঁতুড়ি, রঘুনাথপুর হয়ে ঢুকেছিল নিতুড়িয়ার গড় পঞ্চকোট পাহাড়ে। বুধবার বিষ্ণুপুর থেকে হুলাপার্টি এনে দাঁতালটিকে তাড়ানো শুরু করে বন দফতর। হুলাপার্টির জনা ১৫ সদস্যের সঙ্গে রয়েছেন ১০-১২ জন বনকর্মী। দলটির নেতত্বে নিতুড়িয়ার বিট অফিসার মনজিৎ শেঠ। গত বৃহস্পতিবার হাতিটি নীচের দিকে থাকলেও পরে উঠে পড়ে ১৫০০ ফুট উঁচু পাহাড়ের চুড়োয়। মশাল জ্বালিয়ে, পটকা ফাটিয়ে, ক্যানেস্তারা বাজিয়ে দাঁতালটিকে নীচে নামাতে সক্ষম হয়েছিল হুলাপার্টি। শনিবার রাতে দাঁতালটি নিতুড়িয়ার রায়বাঁধ পঞ্চায়েত এলাকায় ডিভিসি-র নির্মীয়মাণ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রর পাশ দিয়ে গিয়েছিল ঝাড়খণ্ড সীমানায়। কিন্তু, বন দফতরের মাথাব্যথা বাড়িয়ে সেটি ফের ফিরে এসে উঠেছে গড় পঞ্চকোট পাহাড়ে।
মনজিৎ শেঠ জানান, গত কয়েক দিনে হাতিটি ঘুরেছে পাহাড় লাগোয়া পর্বতপুর, পাহাড়বেড়া, তিলতোড়, পুয়াপুর, লালপুর, মদনডি, বাগমারা গ্রামে। মাঝে একবার দাঁতালটি গড় পঞ্চকোট পাহাড়ে প্রকৃতি ভ্রমণকেন্দ্রের বাংলোর পাশ দিয়ে উপরে উঠেছিল। বন দফতরের এক কর্তার কথায় “এই হুলাপার্টির সদস্যেরা যথেষ্ট দক্ষ। কিন্তু, এ বার তাঁরাও সমস্যায় পড়েছেন দাঁতালটি বারেবারেই পাহাড় থেকে নেমে ফের পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়ায়।” রেঞ্জ অফিসার সোমনাথবাবু জানান, দলে থাকা কোনও পুরুষ হাতি দলপতির সঙ্গে সংঘর্ষের পরে হেরে গেলে দলছুট হয়ে অন্য এলাকায় চলে যায়। সেই সময়ে তারা যে ধরনের আচরণ করে, এক্ষেত্রে সেটাই করছে দাঁতালটি। রবিবার সন্ধ্যায় হাতিটিকে হারিয়ে ফেলেছিলেন বনকর্মীরা। সোমবার সকালে তার পায়ের দাগ অনুসরণ করে দেখা যায় পাহাড়বেড়া গ্রাম থেকে ফের পাহাড়ে উঠেছে সে। এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত পাহাড়ের উপরেই ছিল দাঁতালটি। অন্য দিকে, ঝালদা ১ ব্লক এলাকায় জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত উপদ্রব চালিয়ে প্রচুর ভুট্টা ও সব্জি নষ্ট করেছে ঝাড়খণ্ড থেকে আসা হাতির দল।
|