রিলায়্যান্সকে লাইসেন্স
দিতে সিদ্ধান্ত পুরসভার
লকাতায় ফোর-জি টেলিকম পরিষেবা প্রকল্পের কাজ শুরু করার জন্য মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স গোষ্ঠীকে লাইসেন্স দেওয়ার ব্যাপারে আরও একধাপ এগোলো পুরসভা। সোমবার ওই বেসরকারি সংস্থার বিজনেস হেড (পূর্বাঞ্চল) তরুণ ঝুনঝুনওয়ালার সঙ্গে কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষের বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকের পরে পুরসভার মেয়র পারিষদ (ইঞ্জিনিয়ারিং) অতীন ঘোষ জানান, পুর আইন অনুযায়ী ফোর-জি কাজের জন্য রিলায়্যান্সকে লাইসেন্স দিতে একটি চুক্তি হবে। সেই চুক্তির খসড়া রিলায়্যান্সকে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওঁরা মতামত জানিয়ে দিলেই তা চূড়ান্ত করা হবে। তবে সেই সিদ্ধান্তকে আনুষ্ঠানিকতা দিতে মেয়র পরিষদের অনুমোদন নেওয়া হবে।”
পুরসভার তৎপরতায় খুশি রিলায়্যান্স-কর্তা তরুণ ঝুনঝুনওয়ালাও। তিনি বলেন, “বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে কলকাতায় ফোর-জি প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে।” পুরসভা সূত্রের খবর, মেয়র পরিষদের পরের বৈঠকেই ওই প্রকল্পের কাজ শুরু করার ছাড়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ফলে অল্পদিনের মধ্যেই ফোর-জি টেলিকম প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে আশা করছেন পুরকর্তারা।
গত ১ অগস্ট মুম্বইয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মুকেশ অম্বানীর বৈঠকের আগে পর্যন্ত অবশ্য এই প্রকল্পটি নিয়েই কলকাতা পুরসভার কোনও হেলদোল ছিল না! কলকাতায় ফোর-জি চালু করতে চেয়ে গত ডিসেম্বরেই পুরসভার কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল রিলায়্যান্স গোষ্ঠী। কিন্তু তার পর থেকে সেই প্রস্তাব পড়েছিল ঠান্ডা ঘরে। মুখ্যমন্ত্রী-অম্বানী বৈঠকের পরে এখন সেই প্রকল্প নির্মাণের প্রক্রিয়াই জেট গতিতে এগোচ্ছে।
আগেই ঠিক ছিল, প্রকল্পটি চূড়ান্ত করতে এ দিন পুরসভায় আসবেন রিলায়্যান্স-কর্তা। সেই মতো বিকাল সাড়ে ৪টে নাগাদ পুরসভার কনফারেন্স হলে পুরকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শুরু হয় তরুণ ঝুনঝুনওয়ালার। পুরসভার পক্ষে অতীন ঘোষ ছাড়াও ছিলেন পুর কমিশনার খলিল আহমেদ। ছিলেন দু’পক্ষের একাধিক অফিসারও। প্রায় ৪০ মিনিট বৈঠক হয়। কোন পদ্ধতিতে শহরে ফোর-জি’র ফাইবার কেবল্ বসানো হবে, পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের তা বুঝিয়ে বলেন রিলায়্যান্সের কর্তারা।
বৈঠক শেষে তরুণবাবুকে প্রশ্ন করা হয়, এই প্রকল্পের অনুমোদন কি আরও আগেই পাওয়া উচিত ছিল না? রিলায়্যান্স কর্তা সরাসরি উত্তর এড়িয়ে বলেন, “যা হয়ে গিয়েছে, তা নিয়ে আর আলোচনা করে লাভ নেই। এখন আমরা ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে কাজ করতে চাই।” তিনি বলেন, “কলকাতা পুরসভার উপর আমাদের ভরসা আগেও ছিল, এখনও আছে। পুরসভার দেওয়া চুক্তির খসড়া নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর জানিয়ে দেব।”
একই প্রশ্নে অতীনবাবুর বলেন, “কলকাতা ঘিঞ্জি শহর। দিল্লি বা মুম্বইয়ের মতো নয়। এই শহরে রাস্তার নীচ দিয়ে বিভিন্ন সংস্থার কেবল লাইন গিয়েছে। তাই নতুন করে কোনও কেবললাইন পাতার অনুমতি দেওয়ার আগে মাটির অবস্থা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট নিতে হয়েছে। সেই কারণেই কিছুটা দেরি হয়েছে।” তবে আর কোনও দেরি হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, রাস্তার নীচে কাজ করতে গিয়ে অতীতে শহরের বেশ কিছু জায়গায় স্থানীয় স্তরে বাধা পেয়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। অতীনবাবুর আশ্বাস, “আর কোনও বাধা আসবে না। আমরা দায়িত্ব নিয়ে বলছি।”
কিন্তু ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য পুরসভা কি লাইসেন্স-ফি নেবে? তরুণবাবু বলেন, “লাইসেন্স ফি দেওয়া নিয়ে একটা প্রস্তাব পেয়েছি। তাই নিয়ে নিজেরা আলোচনা করব। তবে এ নিয়ে কোনও মতভেদ হবে না।” তিনি আরও জানান, ফোর-জি-র জন্য কলকাতা পুর এলাকায় ৭৫০ কিলোমিটার ফাইবার কেবল বসানো হবে। এ জন্য বিশেষ খোঁড়াখুড়িও করতে হবে না। এইচডিডি (হরাইজন্টাল ডিরেকশনাল ড্রিলিং)-সহ মাইক্রো ট্রেঞ্চিং পদ্ধতির মতো আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হবে। এ দিন পুরসভায় হাজির থাকলেও ওই বৈঠকে ছিলেন না মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে অতীনবাবুর মন্তব্য, “এটা ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের বিষয়। তাই মেয়রের থাকার দরকার ছিল না।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.