|
|
|
|
|
নড়ে বসল পুরসভা, রিলায়্যান্স
কর্তার সঙ্গে বৈঠক কাল
অনুপ চট্টোপাধ্যায় • কলকাতা |
|
ব্যবধান মাত্র তিন দিনের।
রাজ্যে ফোর-জি টেলিকম পরিষেবা প্রকল্প চালু করার ইচ্ছা প্রকাশ করে গত বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মুকেশ অম্বানী। এর পরেই প্রকল্পটি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে পুরসভা ও রাজ্য সরকার। কাল, সোমবারই প্রকল্পটি নিয়ে কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন রিলায়্যান্সের অন্যতম শীর্ষ কর্তা তরুণ ঝুনঝুনওয়ালা। তিনি ফোর-জি প্রকল্পের প্রধান।
রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে মুখ্যমন্ত্রী যাঁকে দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম শনিবার বলেন, “প্রকল্প দ্রুত চূড়ান্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো কাজ এগোচ্ছে।” রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর তরফে জানানো হয়েছে, শহর জুড়ে কেবল লাইন বসানোর জমি ও অন্যান্য সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য সোমবার সরকারের বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে বৈঠক হবে। বেসরকারি সংস্থার এই সক্রিয়তায় নড়েচড়ে বসেছে মহাকরণ।
রিলায়্যান্স গোষ্ঠী অবশ্য কলকাতায় ফোর-জি পরিষেবা চালু করতে চেয়ে গত ডিসেম্বরেই আবেদন জানিয়েছিল। এই টেলিকম নেটওয়ার্ক পরিষেবা দিল্লি, মুম্বই ও চেন্নাই মহানগরীতে আগেই চালু করেছে রিলায়্যান্স। কলকাতায় এইচ ডি ডি (হরাইজন্টাল ডিরেকশনাল ড্রিলিং) পদ্ধতিতে কিছু রাস্তার নীচে কেবল বসানোর অনুমতি চেয়ে পুরসভার কাছে আবেদন করেছিল তারা। কিন্তু এত দিন বিষয়টি নিয়ে তেমন কোনও নাড়াচাড়াই হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মুকেশের বৈঠকের পরেই বিষয়টি অন্য মাত্রা পেয়েছে।
মুম্বইয়ে ‘বেঙ্গল বেকন্স’-এর ধাক্কায় ছ’মাস ঠান্ডা ঘরে পড়ে থাকা রিলায়্যান্সের আবেদনপত্র রাতারাতি আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে। পুরসভা সূত্রের খবর, ১ অগস্ট বাণিজ্য নগরীতে শিল্পপতিদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের দিনই রিলায়্যান্সের আবেদন নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পুর কর্তৃপক্ষ। সেই বৈঠকেই প্রকল্পের জন্য আবেদনকারী সংস্থাকে লাইসেন্স দেওয়া নিয়ে কোনও চুক্তি হবে কি না, কেবল বসানোর অনুমতি দিলেও লাইসেন্স ফি কত নেওয়া হবে, অথবা আদৌ নেওয়া হবে কি না এমন সাতটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। ঠিক হয়, ২ অগস্ট, শুক্রবার মেয়র পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। পুরসভার আইন দফতরকেও আবেদনপত্রটি খতিয়ে দেখতে বলা হয়। লাইসেন্স ফি কত হতে পারে, তা দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয় চিফ ভ্যালুয়ারকে।
বৃহস্পতিবার দুপুরের ওই বৈঠকের পরেই রাতে পুরকর্তারা খবর পান, রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর কর্ণধার মুকেশ অম্বানীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গে ফোর-জি টেলিকম প্রকল্প চালু করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এবং ওই প্রকল্প যাতে দ্রুত কার্যকর করা যায়, মুখ্যমন্ত্রী তা দেখার দায়িত্ব দিয়েছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে। পরের দিনই প্রায় যুদ্ধকালীন তৎপরতা শুরু হয়ে যায় পুরসভায়। এক পদস্থ আধিকারিক জানান, শুক্রবার মেয়র পরিষদের বৈঠকে ফোর-জি টেলিকম প্রকল্পের প্রস্তাবটি নিয়ে কথা ওঠে। তখনই একাধিক মেয়র পারিষদ জানিয়ে দেন, বিষয়টি এখন রাজ্যের হাতে ছেড়ে দেওয়া হোক। রাজ্য যা সিদ্ধান্ত নেবে, তা মেনে নেবে পুরসভা। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এ দিন জানান, রাজ্য জুড়েই ফোর-জি টেলিকম প্রকল্পের কাজ হবে। প্রাথমিক ভাবে তিন হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বলে জানানো হলেও তা প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছবে বলেই খবর। ওই প্রকল্প সম্পূর্ণ হলে উন্নত প্রযুক্তির সুফল মিলবে বাংলায়। মহাকরণ সূত্রে খবর, ওই প্রকল্প নিয়ে আর যাতে দেরি না হয়, সে ব্যাপারে পুর প্রশাসনের কাছে নির্দেশ পাঠানো হচ্ছে। |
কী দেয় ৪-জি |
• ঢের বেশি গতিতে তথ্যের লেনদেন। ৩-জি-তে সর্বোচ্চ গতি সেকেন্ডে ৩.১ মেগাবাইট (এমবিপিএস)। ৪-জি-তে ২ থেকে ১২।
• কমবে ইন্টারনেট বিলের বহর। বা এক খরচে অনেক বেশি নেট ঘাঁটার সুযোগ।
• বেশি ডাউনলোড কম সময়ে। ৩-জি-তে সর্বোচ্চ হার ১০০ এমবিপিএস। ৪-জি-তে তা ১ গিগাবাইট প্রতি সেকেন্ডে। বেশি গতি আপলোডিংয়েও। |
|
পুরনো খবর: সৌজন্যের শিল্পসভায় সঙ্গী সংশয়ও |
|
|
|
|
|