ফের জেরা করতে ডাকা হচ্ছে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রাক্তন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক তথা বর্তমানে মালদহের জেলাশাসক গোদালা কিরণ কুমারকে। শনিবার শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে ডেকে তাঁকে দিনভর জেরা করা হলেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে সন্তোষজনক উত্তর পায়নি পুলিশ। ইতিমধ্যেই দু’দফায় প্রাক্তন সিইও’কে জেরা করেছে পুলিশ। প্রথম দফায় মালদহে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে আসেন তদন্তকারী পুলিশের একটি দল। এর পরেই গত শনিবার শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে দিনভর জেরা করা হয়। ফের তাকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনের বিষয়টি তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। গোদালা কিরণ কুমার অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
অন্য দিকে দুই বিধায়ক-সহ এসজেডিএ’র চার বোর্ড সদস্যদের চিঠি পাঠিয়ে ডেকেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন এসজেডিএ’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকার, শিলিগুড়ি পুরসভায় প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা এবং চন্দন ভৌমিক। এ সপ্তাহেই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। বাকি সদস্যদের চিঠি পাঠানো হয়েছে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার কে জয়রামন বলেন, “এসজেডিএ’র সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সে জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে।” পুলিশেরই একটি সূত্র জানিয়েছে, যে সমস্ত প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে গোদালা কিরণ কুমার সিইও থাকার সময়ই ওই সমস্ত কাজগুলি হয়েছে। তাই সে সব কাজের বিস্তারিত তাঁর জানার কথা। অথচ ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ায় কাজের বরাত দেওয়ার ক্ষেত্রে কী করে জাল নথি তৈরি করে কাজের বরাত দেওয়া হল, কী করে টেন্ডার দরের চেয়ে দু’কোটি টাকা বেশি ঠিকাদার সংস্থাকে পাইয়ে দেওয়া হল সে সব ব্যাপারে সন্তোষজনক উত্তর পায়নি পুলিশ। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু কাজের বরাত প্রক্রিয়া এবং প্রকল্পের জন্য বিপুল টাকা অর্থবরাদ্দ নিয়ে পুলিশের সন্দেহ রয়েছে। সে কারণেই বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করতে প্রাক্তন সিইও’কে ডাকা হচ্ছে।
পুলিশের এক কর্তা জানান, ২০১১-২০১২ সালে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে দুর্নীতি নিয়ে তাদের কাছে যে অভিযোগগুলি করা হয়েছে সেইগুলিই মূলত তদন্ত করা হচ্ছে। তবে অভিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থা অন্য বেশ কিছু প্রকল্পের কাজেও যুক্ত বলে সে সবও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানে নিকাশি তৈরি এবং তিনটি শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানোর কাজে প্রায় ৫০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ হয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এসজেডিএ’র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক শরদ দ্বিবেদী প্রধাননগর থানায় এ ব্যাপারে অভিযোগ জানান। পরে ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ায় জাল নথি তৈরি করে কাজের বরাত দেওয়া নিয়েও অভিযোগ করা হয়। শহরের নিরাপত্তার স্বার্থে ৯ কোটি টাকা খরচে বসানো ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার মান এবং বরাত পাওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরে গভীর রাতে ক্যামেরাগুলি বদলে দেওয়া নিয়ে অভিযোগ ওঠে। সে ব্যাপারেও ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়। পুলিশ ইতিমধ্যে এসজেডিএ-র ৩ জন বাস্তুকার, বিভিন্ন ঠিকাদার সংস্থার কণর্ধার-সহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে। ক্যামেরা কাণ্ডে অভিযুক্ত ঠিকাদার সুব্রত দত্ত পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি এসজেডিএ ও ঠিকাদার সংস্থার কয়েকজনের ব্যাপারে পুলিশকে জানিয়েছেনও। |