আলোচনা চায় নানা দল
পাহাড় সমস্যা সমাধানে সর্বদল বৈঠকের দাবি
লাদা রাজ্যের দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা পাহাড় সমস্যার সমাধানে সর্বদল বৈঠকের দাবি তুলল কয়েকটি দল। সিপিএমের দার্জিলিং জেলার কার্যকরী সম্পাদক জীবেশ সরকার থেকে শুরু করে তাদের শরিক দলের অনেকে নেতাই আলোচনার ক্ষেত্র তৈরির দাবি করেছেন। বামেদের মতে, শুধু সিআরপি, পুলিশ দিয়ে পাহাড়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা ঠিক হবে না। জীবেশবাবুর দাবি, “পাহাড়ের মানুষের আবেগ ওই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে। আলাদা রাজ্য দেওয়া যাবে না। কিন্তু, ওই আবেগকে মর্যাদা দিয়ে আরও বেশি স্বশাসনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। সে জন্য আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। তাতে সব দলই সাহায্য করতে পারে। সে জন্যই সর্বদল বৈঠকের দাবি তুলেছি।”
রাজ্য সরকার অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, মোর্চা নেতারা অনির্দিষ্টকালের বন্ধ, হিংসাত্মক আন্দোলনের পথ থেকে না-সরলে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের কথায়, “জিটিএ গঠনের পরে সবে বছর গড়িয়েছে। পাহাড়ে উন্নয়ন জোরগতিতে হচ্ছে। তা বন্ধ করে মানুষকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা মানা যায় না বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন। কাজেই মোর্চাকেই অশান্তির আন্দোলন থেকে সরে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। তা হলেই আমরা আলোচনায় বসব।” পাশাপাশি, আড়ালে বসে কেউ ওই আন্দোলনে উসকানি দিলে ভবিষ্যত্‌ প্রজন্মের কাছে তাঁদের জবাবদিহি করতে হবে বলেও কটাক্ষ করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। সেই সঙ্গে তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতমবাবু জানান, পাহাড় ও লাগোয়া সমতলে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যে আজ, সোমবার তাঁরা শিলিগুড়িতে মিছিল করবেন।
পাশাপাশি, প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য অতীতের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে জানিয়েছেন, অতীতে সুবাস ঘিসিংয়ের রক্তক্ষয়ী আন্দোলন কিন্তু সিআরপি দিয়ে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। শেষ পর্যন্ত আলোচনার টেবিলে সমস্যার জট খুলেছিল বলে অশোকবাবুর দাবি। উল্লেখ্য, অতীতে পাহাড়ের নানা জটিলতার সময়ে একাধিকবার দিল্লিতে গিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করে জট খোলার চেষ্টা করেন অশোকবাবু।
সিপিআইয়ের পক্ষ থেকে পাহাড়ের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী। তাঁর দাবি, “জিটিএ চুক্তির পরে এমন অসন্তোষ হল কেন? এক বছর পার হওয়ার পরেও বহু দফতর হস্তান্তর হয়নি। বহু প্রতিশ্রুতি পালন করেনি রাজ্য সরকার। যার ফলে ধীরে ধীরে জমা হওয়া অসন্তোষ আন্দোলনের আকার নিয়েছে।” উজ্জ্বলবাবুর মতে, তেলেঙ্গানা গঠনের সিদ্ধান্ত কেন্দ্র নেওয়ার পরে যে পাহাড়ে অশান্তি হতে পারে সেটা বলাই বাহুল্য। তাঁর কথায়, “এখন সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে আলোচনা করে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান করা প্রয়োজন।”
আরএসপি জেলা সম্পাদক তাপস গোস্বামী কেন্দ্রে ও রাজ্যের পাশাপাশি বিজেপি নেতৃত্বের দিকেও আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির ছোট রাজ্যের প্রতি সমর্থন মোর্চাকে ইন্ধন জোগাচ্ছে। তাতে আরও উসকানি দিচ্ছে দার্জিলিঙের সাংসদ যশোবন্ত সিংহ। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব যতই বিরোধিতা করুক বিজেপির ইতিহাস বলছে তাঁরা একাধিক রাজ্য ভেঙে দিয়েছে। সেই সঙ্গে কংগ্রেস সরকারের ভোটের রাজনীতির ফলে পাহাড় অশান্ত হয়ে উঠেছে।”
এমনকি তাপসবাবুর দাবিকে সমর্থন করেছেন দার্জিলিং জেলা বিজেপির সভাপতি নৃপেন দাসও। তিনিও বলেন, “ভিনরাজ্যের নেতারা আমাদের রাজ্যের মানুষের আবেগ কতটা বোঝেন? তা ছাড়া নিয়মিত যোগাযোগও রাখেন না তাঁরা। ফলে, যা হওয়ার তা-ই হয়েছে।” তবে গোর্খাল্যান্ডের দাবি নস্যাত্‌ করে তাঁর বক্তব্য, “মোর্চাকে যত শীঘ্র সম্ভব আলোচনার জন্য আহ্বান করা উচিত। তার জন্য উদ্যোগী হতে হবে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার উভয়কেই।” দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের (সমতল) সভাপতি শঙ্কর মালাকার জানান, তাঁরাও পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখার পক্ষে সবরকম সহযোগিতা করছেন। তিনি বলেন, “যা পরিস্থিতি তাতে ফের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করা দরকার।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.