আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে দার্জিলিঙের শান্তি বজায় রাখতে সর্বদল বৈঠকের পক্ষে সওয়াল করল কংগ্রেস ও সিপিএম। রবিবার দু’দলের পক্ষ থেকে ওই দাবি তোলা হয়েছে। যদিও পাহাড়ের মোর্চা বিরোধী গোর্খা লিগ, সিপিআরএম গোর্খা জনমুক্তির মোর্চার আন্দোলনের ঘোষণাকে ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করেন। সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত জেলার সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, “এই ধরনের সমস্যা সমাধানে সর্বদল বৈঠক করা উচিত। পাহাড়ে, তরাই ও ডুয়ার্সে শান্তি থাকুক এটা আমরাও চাই। সেদিকে লক্ষ্য রেখে ‘জিটিএ’ চুক্তির মধ্যে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকার পরেও আমরা চাই দ্রুত জিটিএ গঠিত হোক। নির্বাচন হোক।” সমস্যা সমাধানে সর্বদল বৈঠকের কথা বলেছে কংগ্রেসও। জেলা কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “যা পরিস্থিতি তাতে দার্জিলিং শান্ত রাখাটা জরুরি। আলোচনায় পথ বার করতে রাজ্য সরকারকেক দ্রুত সর্বদল বৈঠক ডাকা উটিত।” রাজ্য সরকারের এক মুখপাত্র অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্যামল সেনের নেতৃত্বধীন উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটির রিপোর্ট নিয়ে সর্বদল বৈঠক ডাকার কোনও প্রশ্নই নেই। কেননা, শ্যামল সেনের কমিটির সামনে একাধিকবার কংগ্রেস-সহ প্রায় প্রত্যেকটি দলের প্রতিনিধিরা দেখা করছেন। সেখানে সমস্ত বিষয় আলোচনা করার পরই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। সেখানে নতুন করে সর্বদল বৈঠক ডাকার যৌক্তিকতা নেই। শনিবার দুপুরে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটির রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে মোর্চার নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা হয়। তা আঁচ করেই এদিন রিপোর্টের বিরোধিতা করে টানা আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। তবে তাঁদের ওই আন্দোলনকে কটাক্ষ করেছে পাহাড়ের অন্য রাজনৈতিক দলগুলি। সিপিআরএমের সাধারণ সম্পাদক তারামণি রাই বলেন, “গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নাটক করছে। তারা যদি সত্যিই উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটির রিপোর্টের বিরোধিতা করত, তাহলে সব ছেড়ে গোর্খাল্যান্ডের আন্দোলনে নামত।” একই গোর্খা লিগের সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ খাতি আরও একধাপ এগিয়ে মোর্চার আন্দোলনকে ঘোষণাকে ‘গটআপ গেম’ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “মোর্চার সঙ্গে রাজ্য সরকারের আঁতাত রয়েছে। পুরো ‘গটআপ গেম’ চলছে। মোর্চা পাহাড়ের মানুষের সমস্যা নিয়ে চিন্তিত নয়। তাঁদের নেতাদের ক্ষমতা দরকার। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই দর কষাকষি করতে কিছু আন্দোলনের কথা ঘোষণা করেছে তারা। দার্জিলিং নিয়ে বামফ্রন্ট এবং তৃণমূল পরিচালিত সরকারের মধ্যে কোনও ফারাক নেই।” মোর্চা নেতৃত্ব অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেছেন। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, “গোর্খা লিগ বা সিপিআরএমের কোনও অস্তিত্ব পাহাড়ে নেই। আমরা লড়াই করেই দাবি আদায় করব।” |