বিপর্যয় মোকাবিলায় ‘বহুমুখি অসামরিক পরিষেবা কেন্দ্র’ গড়ার কাজ শুরু হল। রবিবার নকশালবাড়ির হাতিঘিষায় ওই প্রকল্প গড়ার কাজের সূচনা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। উপস্থিত ছিলেন ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী সুনীল তিরকি। মাস কয়েক আগে উত্তরবঙ্গ উৎসবে যোগ দিতে এসে ওই প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর এ দিন ওই কেন্দ্রটি গড়ে তোলার কাজ শুরু করা হয়। প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে কেন্দ্রে জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “আদিবাসী অধ্যুষিত নকশালবাড়ির ওই এলাকায় বিপর্যয় মোকাবিলার উদ্দেশ্যে ওই বহুমুখি কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হচ্ছে। এটি উত্তরবঙ্গের আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসাবেই কাজ করবে। বছর দেড়েকের মধ্যেই পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ সম্পূর্ণ করে কেন্দ্রটি চালু করা হবে।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে জানা যায়, প্রকল্পটি রাজ্য অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের। |
প্রকল্পের জন্য জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ১ একর জায়গা দেওয়া হয়েছে। পরিকাঠামো গড়ে তোলার নকশা করেছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। সেই মতো কাজ শুরু হল। পাহাড়ে ধস থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় বন্যায় বিপর্যস্ত বাসিন্দাদের উদ্ধার কাজে সরকারি পরিষেবা সঠিক সময় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হত না। এখনও বিপর্যয় মোকাবিলায় দমকল বা বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরাই ভরসা। দার্জিলিং পাহাড়-সহ উত্তরবঙ্গের একটা বড় অংশ ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা হওয়ার জন্য বিপর্যয় মোকাবিলায় বিশেষ কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি উঠেছে বারবার। এমনকী উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এই এলাকায় বিপর্যয় মোকাবিলায় এ ধরনের কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছিলেন আচার্য তথা রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনও। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে তিনি অনুরোধ করেছিলেন। অথচ ওই ধরনের কেন্দ্র না-থাকায় পাহাড়ে ধস, ঘূর্ণি ঝড়ে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় উদ্ধার কাজে সমস্যা রয়েই গিয়েছে। পাহাড়ে বিজনবাড়িতে একটি সেতু ভেঙে পড়লেও বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। অথচ প্রশিক্ষিত উদ্ধারকারী দল না থাকায় এ সমস্ত ক্ষেত্রেই বিপাকে পড়তে হয়। কী থাকবে নির্মীয়মাণ ওই বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্রে? অসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ সূত্রেই জানা গিয়েছে, যে কোনও রকম বিপর্যয়ের মোকাবিলার জন্য প্রশিক্ষিত উদ্ধারকারী দল থাকবে। উদ্ধার কাজের জন্য ব্যবহৃত সরঞ্জাম রাখার বিশেষ ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হবে। সেখানে ‘স্পিড বোট’ থেকে অত্যাধুনিক মই সমস্ত রকমের সরঞ্জাম মজুত থাকবে। উদ্ধার কাজের জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে এই কেন্দ্রে। |