ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য
ডায়েরি লেখার অভ্যেস নেই। মাঝেমধ্যে খাপছাড়া কয়েক দিন লিখি, আবার বন্ধ। পাতাগুলোতে কিছু ঠিকানা লেখা থাকে, হয়তো কিছু কোটেশন কিংবা দরকারি তথ্য। যেমন— হেঁচকি উঠলে চুনের জলে চিনি মিশিয়ে খেলে... গাদিয়াড়ার সস্তার হোটেল... প্রসেনজিৎ আজও টাকাটা ফেরত দিল না— এই সব, যা ডায়েরির মধ্যেই ফের হারিয়ে যায়। বাজি তৈরির ফর্মুলা কোন এক ডায়েরিতে লিখে রেখেছিলাম, সেটা খুঁজতে গিয়ে ১৯৮৯ সালের একটা ডায়েরি পেয়ে গেলাম। খুলে দেখি, বেশ কিছু ভাল ভাল কথা লেখা। মনে পড়ে গেল, এগুলো সব নারদবাণী।
নারদচন্দ্র হালদার ছিল আমাদের বেলুন অ্যাসিস্ট্যান্ট। আমাদের হাওয়া অফিসের ‘গ্রুপ ডি’ স্টাফ। সব বিমানবন্দরের সঙ্গে একটি করে হাওয়া অফিস থাকে। দমদমেও আছে। তখন দমদমের ‘মেট’ ডিপার্টমেন্ট-এ কাজ করি। ওখানে সারা দিনে চার বার করে বেলুন ওড়াতে হয়। নারদ বেলুন ওড়ানোর কাজে সাহায্য করত। গেরুয়া পোশাক পরত, গলায় রুদ্রাক্ষের মালা, মাথায় ঝাঁকড়া চুল। বেলুনে হাইড্রোজেন গ্যাস ভরে দিত, থিয়োডোলাইট নামে একটা যন্ত্র সেট করে দিত। সামনে স্টপওয়াচ রেখে ধরত। বেলুনটা উড়িয়ে দিয়ে আমরা থিয়োডোলাইটে চোখ রেখে বেলুনের যাত্রাপথ লক্ষ করতাম। নির্দিষ্ট সময় পর পর রিডিং নিতাম। হিসেব কষে আকাশের কত ওপরে বাতাসের কেমন গতি, কোন দিকে গতি, এই সব বোঝা যেত। পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য এটা দরকার, আরও দরকার বিমানের জন্য। পাইলটদের জানতে হয় আকাশের বিভিন্ন স্তরে বাতাসের চরিত্র। এখনও বেলুন ওড়ে, তবে কম্পিউটারই হিসেব করে রিপোর্ট দিয়ে দেয়।
যে বেলুন ওপরে ওঠে, সেটা তো মহাশূন্যে মিলিয়ে যায় না, আবার পৃথিবীর ওপরই পড়ে। বেলুন ওপরে ওঠে, বাইরের চাপ কমতে থাকায় ক্রমশ ফুলতে থাকে, এক সময় ফেটে যায়। তারপর মা মাটি মানুষের মধ্যেই ফাটা বেলুনটা আছড়ে পড়ে।
নারদ হালদার বিদীর্ণ বেলুনটাকে ভাষা দিত। সুতোয় একটা কাগজ বেঁধে দিত। বেলুনটা যখন নীচে পড়ত, সেই কাগজ সমেত নীচে পড়ত। কাগজের মধ্যে লেখা থাকত নারদবাণী। নারদবাণীগুলো ছিল এ রকম: ‘ধরো, মারো, কাটো, খাও। ভগবানকে ধরো, পশুত্বকে মারো, মায়াপাশ কাটো, প্রেমসুধা খাও।’ ‘সর্বদা আমার আমার করিও, তবে মনে মনে ‘আ’ অক্ষরটি বাদ দিও। ‘আ’ বাদ দিলে সব কিছুই মা’র।’ ‘কালোজামে রক্ত পরিষ্কার, মাতৃনামে ভিতর পরিষ্কার।’ ‘সবাই এমন এক চক্ষু অর্জন কর, যাহাতে জগতের সমস্ত নারীকে মাতৃরূপে দর্শন পাও।’
প্রতি দিনই নতুন নতুন বাণী লিখে বেলুনের সুতোয় ঝুলিয়ে দিত নারদ হালদার। একটা বাণী খুব রিপিট করত: ‘গ্যাস খাইয়া ফুলিলে পতন অনিবার্য, আমিও করিয়াছি সেইরূপ কার্য।’
আমাদের শিফ্ট ডিউটি ছিল। ওর মতো আরও দুজন বেলুন অ্যাসিস্ট্যান্ট ছিল। ওরা নারদ হালদারকে পছন্দ করত না। বলত ভণ্ড। সেয়ানা পাগল। নারদদা শুনত, কিন্তু ঝগড়ায় যেত না। ওর রাগ-ক্ষোভ-অভিমান বেলুনে ঝুলিয়ে আকাশে পাঠিয়ে দিত। যেমন— ‘ভাল নয় বসদের খোশামোদ করা, ভাল নয় ডিউটিতে রোজ দেরি করা, ভাল নয় মনে রাখা কোনও প্রকার ডাউট, ভাল নয় ফল্স রিপোর্ট এইট অক্টা ক্লাউড।’ এইট অক্টা ক্লাউড মানে আকাশ পুরোপুরি মেঘে ঢাকা, বেলুন মেঘে ঢেকে গেছে, দেখা সম্ভব নয়। এটা এক ধরনের ফাঁকিবাজি। আমাদের মধ্যে এক জন সায়েন্টিফিক অ্যাসিস্ট্যান্ট ছিল মহিলা। খুব সাজগোজ করত, বার বার লিপস্টিক লাগাত, কাজে আসতে দেরি করত। ও যখন দেরি করে থিয়োডোলাইটের সামনে এল, নারদ হালদার তত ক্ষণে বেলুনে ঝুলিয়ে দিয়েছে— ‘ডিউটি না করিলে বিউটি বাড়ে না।’ এই সব বাণীসমৃদ্ধ বেলুন শেষ পর্যন্ত কোথায় পড়ত বলা সম্ভব নয়। স্বরূপনগর, বাদুড়িয়া, গাইঘাটা, কৃষ্ণনগর বা বাংলাদেশেও চলে যেতে পারত। নারদ হালদার ওর বাণীতে নিজের নাম প্রচার করত না। শুধু ওর মনের কথা ছড়িয়ে দিত। লোকটা বেশি কথা বলত না। ওর যে কাজ, সেটা মন দিয়ে করত।
এক বার শুনলাম ওর ছেলেটাকে পাওয়া যাচ্ছে না। ছেলেটার মাথায় নাকি একটু গন্ডগোল ছিল। নিরুদ্দেশ। নারদকে দেখতাম, এর পর থেকে বেলুনে বাণী না-লিখে লিখত— ‘নাড়ু ফিরে আয়।’ কতগুলো হ্যান্ডবিল ছাপিয়েছিল নারদ। ওখানে নাড়ুর ছবি এবং বর্ণনা ছিল। কেউ খোঁজ দিলে পুরস্কার ঘোষণাও ছিল। সেই হ্যান্ডবিল লাগিয়ে দিত বেলুনের সুতোয়, তার পর ওর পরিবর্তন দেখতাম। উড়ন্ত বেলুনটার দিকে হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে থাকত। বলত, ‘জোর করে হয় না, করজোড়ে হয়।’
এ সময়েই চাকরিটা ছেড়ে দিই। পুরনো মেট-বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হলে নারদ হালদারের কথা জিজ্ঞাসা করতাম, ওরা বলত, ও পুরো পাগল হয়ে গেছে।
এখন ডায়েরিতে ওর অনেক ঝুলন্তবাণীর কথাই লেখা দেখছি। বাইরের মাইকে তুমুল বক্তৃতা। একটা লেখায় আটকাল চোখ।
‘বেশি গ্যাস পুরিও না বেলুনে বা মনে ফটাস ফাটিয়া যাবে কখন কুক্ষণে।’


• একটা খুব আঁতেল আর বোরিং সিনেমার স্ক্রিপ্ট লিখে ভাবলেন, কিরণ রাওকে শোনালেই কেল্লা ফতে।
অ্যাপয়েন্টমেন্টও পেলেন, কিন্তু স্ক্রিপ্ট শোনানোর মাঝপথে বোর লাগার চোটে নিজেই ঘুমিয়ে পড়লেন।
• প্রচণ্ড জোর দৌড় প্র্যাকটিস করে ভাবলেন
এ বার নিশ্চয়ই অস্ট্রেলিয়ান মেয়ের সঙ্গে
অ্যাফেয়ার পাকা। অস্ট্রেলিয়া আমন্ত্রণও জানাল।
কিন্তু গিয়ে দেখলেন রুমমেট এক জন ক্যাঙারু।
• একটা লাল রঙের সানগ্লাস করালেন
ও ভাবলেন সবাই ডন ভেবে খুব ভয় পাবে।
পাড়ায় সবাই আপনাকে দেখামাত্রই আঁতকে উঠে সাত
হাত দূরে ছিটকে গেল। কিন্তু সেটা ডনের নয়, জয়বাংলার ভয়ে!

নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে গবেষণাকারী এক সংস্থা জানাল: ভারতে যে যত বড় ক্রিমিনাল নেতা, তার ভোটে দাঁড়ানোর ও জেতার ‘রেট’ তত ভাল! গত এক দশকে ভোটে লড়া নানা দলের ষাট হাজারেরও বেশি প্রার্থীর ২২ থেকে ৭৫ শতাংশেরই নামে পুলিশের খাতায় ‘কেস’ উপচে, তন্মধ্যে ১৮% ‘ক্রিমিনাল’, ৮% ‘গুরুতর’ ট্যাগসমৃদ্ধ। নেতাদের তাতে বয়েই গেল, নির্বাচন কমিশনের কাছে সোনাদানা-পাইপয়সা-জমিগরু-ফ্ল্যাটশেয়ারের ফিরিস্তির সঙ্গে গন্ডা গন্ডা পুলিশ কেসও দাপটে উল্লেখ করেন। যেন সিভি-তে আন্ডারলাইনড বুলেট পয়েন্ট। কিন্তু যা দুরন্ততর: নেতা মাত্রেই অপরাধ করবেন/করাবেন ও পরিবর্তে নিজ ট্যাঁক-ব্যাংক ভরবেন/ভরাবেন— জনতার কাছে জলভাত। অর্থাৎ, নিজেদের সুযোগ-সুবিধে নিশ্চিত করতে যে লোকটাকে জনগণ ভোটে জেতাচ্ছে, সে দুর্নীতিগ্রস্ত ভিলেন জেনেও দেশ-দশের তা নিয়ে হেলদোল ঘটছে না। স্ক্যাম-স্ক্যান্ডাল-স্ক্যাভেঞ্জিং’এ পাবলিক নিজেকে ঠকে যাওয়া উল্লু বা বেইমানির শিকার মনে করছে না। বরং কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলছে, ধুস, এই রকমই তো হয়, হয়ে আসছে, হতে থাকবে। এই ‘নিরাসক্ত’, ‘নিয়তিবাদী’, ক্যালাস দেশে তাই নিয়মিত অভ্যাস: অপরাধী নেতাদের দ্বিতীয় বার ভোটে দাঁড়াতে দেওয়া, বিপুল সাপোর্ট-তরঙ্গে ফের জিতিয়ে ক্ষমতায় আনা। এই জনগণ গেট দ্য শাসক দে ডিজার্ভ!

মারা গেলেন ‘ওয়ান ওয়ার্ল্ড মুভমেন্ট’-এর প্রচারক গ্যারি ডেভিস। দেশজাতধর্মের কাঁটাতারে খণ্ডিত এই বিশ্বে তিনি ছিলেন স্বঘোষিত ‘বিশ্বনাগরিক’, রাষ্ট্রবিশেষের নাগরিকতা-অস্তিত্বে বিশ্বাস করতেন না। ‘নো নেশন স্টেটস, নো ওয়ার্স’, বলতেন। রাজনীতিকরা অবজ্ঞায় বলেছেন স্বপ্নালু ইউটোপিয়ান, পাগল, এ কালের দন কিহোতে, কিছুতে দমেননি। ১৯৪৮-এ প্যারিসের মার্কিন দূতাবাসে এক ঘর হতভম্ব কর্তাবিষ্টুর সামনে নিজের পাসপোর্ট বর্জন করেছিলেন। সেই থেকেই স্বেচ্ছায় রাষ্ট্রহীন অনিকেত, অসংখ্য বার অগণিত দেশে ঢুকেছেন-বেরিয়েছেন, বন্দি, নির্বাসিত হয়েছেন। তাঁর বিশ্বাস যে অসার তত্ত্বকথা নয়, বোঝাতে ১৯৭৮-এ তৈরি করেন ‘ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট অব ওয়ার্ল্ড সিটিজেন্স’, পাসপোর্ট, আই-কার্ড, ডাকটিকিট, জন্মদিন-বিয়ের সার্টিফিকেট, মুদ্রাও ছাপাত এই বিশ্ব-সংস্থা। নেই-বাউন্ডারির পৃথিবীর অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রেসিডেন্ট, যুদ্ধে ঘরছাড়া মানুষের দরদি আশ্রয়, এডওয়ার্ড স্নোডেনকেও সম্প্রতি পাঠিয়েছিলেন ওয়ার্ল্ড পাসপোর্ট। বিশ্বে অন্তত এক মিলিয়ন মানুষ তাঁর ভাবনার অনুসারী। ‘বসুধৈব কুটুম্বকম্’ মন্ত্রে জগৎ-জপানো ভারতবর্ষে তাঁর নাম ও কাজ অশ্রুত, দুঃখের।

৬৩০
ইলিশ রপ্তানি করে বাংলাদেশ
সরকার প্রতি বছর যত
মিলিয়ন ডলার রোজগার করেন
(জিডিপি-র এক শতাংশ)
১৮৫০
যত কোটি মার্কিন ডলার ঋণের
বোঝা নিয়ে নিজেকে দেউলিয়া
ঘোষণা করল আমেরিকার
বিখ্যাত ‘গাড়ির শহর’ ডেট্রয়েট

ফরাসি পারফিউম
শ্যানেল ফাইভ-এর বিজ্ঞাপন
করে যত মিলিয়ন ডলার কামালেন হলিউডি তারকা ব্র্যাড পিট
২০০০০০
দেশের মোট যতগুলো গ্রামে
এপ্রিল ২০১৪-র মধ্যে ব্রডব্যান্ড
ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার
লক্ষ্যে কাজ শুরু করল ভারত
ব্রডব্যান্ড নিগম লিমিটেড

৩.১৫
মোট যত কোটি দর্শক টেনে
এ বছর মার্চে সেরা অনলাইন
ভিডিয়ো প্ল্যাটফর্ম
শিরোপা পেল গুগল
ওয়েবসাইট ইউটিউব

৯৮
যত বর্গইঞ্চি
হিটিং এরিয়া-র র‌্যাকেট
নিয়ে সম্প্রতি খেললেন
রজার ফেডেরার। আগে ৯০ বর্গইঞ্চি
হিটিং এরিয়ার র্যাকেটে খেলতেন

২৫৫০০০
আমেরিকায় মোট যতগুলো
অসামরিক বিমান আছে
১৫৪৮২২
দেশে মোট যতগুলো ডাকঘর আছে।
এর মধ্যে ১৩৯০৮৬টি গ্রামাঞ্চলে

ভারতে টেলিভিশন-দর্শকের যত
শতাংশ ইংরেজি সিনেমা চ্যানেলের ভক্ত


সী


চৌ
ধু
রী
‘বাংলা’টা যদি বেঙ্গল হয়
‘ঠাকুর’ মেশেন টেগোর-এ
গোষ্ঠ পালও তো ‘গোসটুয়া’ তবে
হতেই পারেন বেঘোরে!
অ্যারেস্ট কীসের? দেশের দশের ভাল চেয়ে চেয়ে ক্লান্ত বাছারা,
‘বোমা মারো আর আগুন জ্বালাও’... ও’কথা বলতে চায়নি, তা ছাড়া
মানুষ তো বটে... উত্তেজনায়
জিভ মাঝে মাঝে স্লিপ করে যায়
জিতে গেছি আজ। মিছিমিছি দোষ যারা ধরে তারা পাজির পা-ঝাড়া



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.