কলকাতার রাস্তায় পাওয়া গেল বারাসতের যুবকের দেহ
স্ট্র্যান্ড রোডে একটি রেস্তোরাঁর সামনের ফুটপাথ থেকে শনিবার ভোরে বারাসতের এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বেঁধেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত প্রদীপ ঝা (৪২) বারাসতের নবতীর্থ এলাকার বাসিন্দা, দার্জিলিংয়ে হোটেল লিজ নিয়ে ব্যবসা করতেন। তৃণমূল নেতা হিসেবেও প্রদীপবাবু পরিচিত ছিলেন।
তৃণমূলের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “প্রদীপ ভাল ছেলে ছিলেন। পুলিশের উচিত তাঁর মৃত্যুর সঠিক তদন্ত করা।” পুলিশ জানায়, মৃতদেহের ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। এ দিন রাত পর্যন্ত প্রদীপের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
এ দিন ভোরে নীল জিনস ও সাদা টি-শার্ট পরা এক যুবককে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন ফুটপাথবাসী কয়েক জন। পুলিশ তাঁকে কলকাতা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশের দাবি, ওই যুবককে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেই সময় তাঁর মুখ ও কান থেকে রক্ত বেরোচ্ছিল। মুখ থেকে গ্যাঁজলাও বেরিয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের পকেট থেকে মোহনবাগান ক্লাবের সদস্য পরিচয়পত্র মিলেছে। পাওয়া গিয়েছে টেলিফোন নম্বর লেখা একটি নোটবুকও। তা থেকে সোদপুরের পুলক রায় নামে এক ব্যক্তির টেলিফোন নম্বর পেয়ে পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে আসতে বলে। পুলক এসে প্রদীপকে শনাক্ত করেন।
পুলিশ আরও জানায়, ফুটপাথ থেকে উদ্ধারের সময় প্রদীপবাবুর পায়ে জুতো ছিল না। কিন্তু দু’পায়ের মোজা ছিল পরিষ্কার। তাঁর ডান হাতের একটি আঙুলে সোনার আংটি ছিল বলে পরিবারের লোকজন জানালেও সেটির হদিস মেলেনি। পাওয়া যায়নি প্রদীপবাবুর মোবাইলও। তবে তাঁর পকেট থেকে টাকা-সহ ব্যাগ মিলেছে।
পরিবার সূত্রের খবর, প্রদীপবাবুর স্ত্রী অসুস্থ। তাঁর দু’টি শিশু কন্যা রয়েছে। তারা স্কুলে পড়ে। প্রদীপের মা জগত্তারণদেবী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী। দিন তিনেক আগে প্রদীপ দার্জিলিং থেকে বারাসতে আসেন। পাহাড়ে ফের গোলমাল শুরু হওয়ায় তিনি উদ্বিগ্ন ছিলেন। কলকাতার যে ভ্রমণ সংস্থার মাধ্যমে তিনি বুকিং করতেন, সেই সংস্থার সঙ্গে পর্যটন ব্যবসা সংক্রান্ত আলোচনার জন্যই তাঁর কলকাতায় আসা।
এ দিন কলকাতা পুলিশ মর্গে প্রদীপের মা জানান, তাঁর ছেলে শুক্রবার সকাল ন’টা নাগাদ স্নান-খাওয়া সেরে জয়দেব নামে এক বন্ধুর সঙ্গে কলকাতায় যাচ্ছেন বলে বেরিয়ে যান। শনিবার সকালে জয়দেব তাঁদের বাড়ি এসে প্রদীপ বাড়ি ফিরেছে কি না জানতে চান। প্রদীপ বাড়ি ফেরেনি জেনে জয়দেব বিচলিত হয়ে পড়েন। জয়দেবকে তিনি জিজ্ঞাসা করেন, শুক্রবার তাঁরা কোথায় গিয়েছিলেন। জগত্তারণদেবীর দাবি, জয়দেব তাঁকে জানান, কলকাতার একটি হাসপাতালে তিনি ও প্রদীপ ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে জয়দেব বারাসতে ফিরে এলেও প্রদীপ কলকাতায় থেকে যান। স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রদীপের বাড়ি থেকে চলে আসার পর জয়দেব অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রদীপ পরিচিত কারও সঙ্গে স্ট্র্যান্ড রোড এলাকায় ছিলেন। পুলিশের কাছে এখনও যে সব প্রশ্নের উত্তর মিলছে না সেগুলি হল: প্রদীপ স্ট্র্যান্ড রোডে গেলেন কেন? প্রদীপকে না নিয়ে জয়দেব বারাসত ফিরলেন কেন? জয়দেব ছাড়া আর কে শুক্রবার রাতে প্রদীপের সঙ্গে ছিলেন? তাঁর পায়ে জুতোই বা কেন ছিল না?
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.