অভিভাবকেরা মারা যাওয়ার পর সমাজবিরোধীদের আড্ডা খানায় পরিণত হওয়ার অভিযোগ ওঠে নিকিতা দত্ত হত্যার মূল অভিযুক্ত খুলুর বাড়িটি। তদন্তের পর পুলিশ জানাচ্ছে, ফালাকাটার সুভাষকলোনির বাড়ির আড্ডায় নিয়মিত যোগ দিত বিভিন্ন এলাকার যুবকেরা। গভীর রাত অবধি সেখানে মদের আসর বসত। তবে খুলুর ভয়ে এলাকার লোকজন মুখ খোলার সাহস পেতেন না। ফালাকাটার একটি স্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে খুলু পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়। তার পর থেকে সে ধীরে ধীরে নানা অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। এলাকার প্রাক্তন সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য ভোলা দাশগুপ্ত বলেন, “রাতভর ওর বাড়িতে আসর বসত। প্রতিবেশীরা প্রতিবাদ করেননি। সকলেই খুলুকে এড়িয়ে চলতে চাইত।” এলাকার অপর আরেক প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য নীলিমা সরকারের কথায়, “আমরা ওকে সবাই এড়িয়ে চলতাম। মারপিট-সহ নানা অসামাজিক কাজকর্মের কথা শুনতে পেতাম। আত্মীয়দের সঙ্গেও ওর সম্পর্ক ছিল না বলে জানি।” পুলিশ সূত্রের খবর, আট বছর আগে মা মারা যাওয়ার পর খুলুর এক মাত্র বোনের বিয়ে হয়ে যায়। বাড়িতে অবসরপ্রাপ্ত বাবা ও খুলু থাকত। সুভাষ কলোনির বাসিন্দা জানান, ছোটবেলা পড়াশোনাতে ভালই ছিল খুলু। ফুটবলও খেলত ভাল। তবে খুবই বদমেজাজি ছিল। খেলার মাঠে প্রায়ই প্রতিপক্ষের সঙ্গে গোলমালে সে জড়িয়ে পড়ত। এমনকি, নিজে পছন্দ করে বিয়েও করে। তবে তার অত্যাচাকে দুই মাসের মধ্যে স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, খুলু সঙ্গীদের নিয়ে চোরাই কাঠের ব্যবসা চালাত বলে অভিযোগ। কয়েকমাস আগে ১৫ দিনে টাকা দ্বিগুণ করার সংস্থাও খোলে। সেই সংস্থার মাধ্যমে সে কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে বলেও অভিযোগ ওঠে। তবে ভয়ে লগ্নিকারীরা কেউ অভিযোগ জানানি। পুলিশের খাতায় অবশ্য মারপিটের ঘটনা ছাড়া কোনও অভিযোগ ছিল না তার বিরুদ্ধে। তবে তার বেআইনি অস্ত্রের ব্যবসা নিয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট তথ্য হাতে আসেনি। গত রবিবার ফালাকাটার সুভাষ কলোনিতে একাদশের ছাত্রী নিকিতা দত্তকে গুলি করে খুনের অভিযোগ আছে খুলু ও তার এক সঙ্গীর নামে।
|