বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় ৬০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তে নেমে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বোর্ড সদস্যদের একাংশকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠাল পুলিশ। ইতিমধ্যেই বোর্ডের ৪ জন সদস্যকে চিঠি পাঠিয়ে আগামী সপ্তাহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানে নিকাশি তৈরি এবং তিনটি শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানের কাজে ৫০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশে অভিযোগ করে এসজেডিএ কর্তৃপক্ষ। এর পর পুলিশ এসজেডিএ একাধিক বাস্তুকার এবং ঠিকাদার সংস্থার কর্মকর্তা মিলিয়ে অন্তত ৯ জনকে গ্রেফতার করে। সম্প্রতি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা নিয়েও প্রায় ৯ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ জানানো হয়। ধৃতদের থেকে নানা তথ্যও পেয়েছে পুলিশ। সব স্পষ্ট হতেই পুলিশ বোর্ড সদস্যদের সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় বলে জানা গিয়েছে। পুলিশেরই একটি সূত্র জানিয়েছেন, এসজেডিএ বোর্ডের সকল সদস্যকেই জিজ্ঞাসাবাদে ডাকা হচ্ছে। আলাদাভাবে পুলিশ তাদের সঙ্গে কথা বলবে।
অন্য দিকে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা কাণ্ডে অভিযুক্ত সুব্রত দত্তকে বৃহস্পতিবার জেল হাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করল পুলিশ। এ দিন শিলিগুড়ি বিশেষ সংশোধনাগারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকেরা। তদন্তের স্বার্থে তাকে অন্তত ১০ দিনের পুলিশে হাজতে রাখতে চেয়ে আজ, শুক্রবার শিলিগুড়ি আদালতে আবেদন করবে তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিক। পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন বলেন, “শীঘ্রই তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তকে পুলিশে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হবে।” বুধবার শিলিগুড়ি আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা কাণ্ডে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে অভিযুক্ত এম এস কোম্পানিজের কর্ণধার সুব্রত দত্তকে। জেলে জিজ্ঞাসাবাদের প্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্তের স্বার্থে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিতে আবেদন করবে বলে জানিয়েছে। কেন না ওই কাজের বরাত পাওয়ার প্রক্রিয়া এবং প্রথম পর্যায়ে যে ক্যামেরাগুলি লাগানো হয়েছে সেগুলির পিছনে ঠিক কী কারণ রয়েছে সে ব্যাপারে পুলিশ ধোঁয়াশায় রয়েছে। তা ছাড়া ওই সংস্থার সঙ্গে অন্য কোনও ঠিকাদার সংস্থার বা বাইরের লোকের যোগসাজশ রয়েছে কি না তা নিশ্চিত হতে চাইছে পুলিশ।
প্রায় ৯ কোটি টাকা খরচ করে শহরে ৫৪ টি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত হয়। গত বছর পুজোর আগে সেই কাজ করে আনুষ্ঠানিক ভাবে চালুও করা হয়। এর পরেই নিম্নমানের ক্যামেরা বসানোয় কাজের মান এবং বরাত পাওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দল তদন্ত করে নিম্নমানের ক্যামেরা বসানোর বিষয়টি জানিয়ে ছিল। এসজেডিএ’র তরফে তদন্তের কথা জানানো হয়। পুলিশ শহরের নিরাপত্তায় ক্যামেরাগুলি কোথায় কী রয়েছে তা বুঝিয়ে হস্তান্তর করতে বলে। এর পরে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে তাদের কাজ যথাযথ ভাবে বুঝিয়ে দিতে বলা হয়। সেই সুযোগকে কাজে তদন্তের মাঝ পথে গভীর রাতে ক্যামেরাগুলি বদলে দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। |