ভোটে ভরাডুবি উজ্জ্বলের এলাকায়
ভোটে হেরে মন্ত্রীর দিকে আঙুল তুললেন তৃণমূলের বিদায়ী প্রধান। মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের বিধানসভা কেন্দ্রের ভাতজাংলা পঞ্চায়েতের দাপুটে নেতা কমল ঘোষ। তিন বারের প্রধানও বটে। ওই তৃণমূল নেতা এবারের ভোটে হেরে গিয়েছেন এক সময়ে তাঁর ‘ডান হাত’ বলে পরিচিত নির্দল প্রার্থী সুজয় প্রামাণিকের কাছে। তাতেই চটে মন্ত্রীর দিকে গোষ্ঠীকোন্দলের আঙুল তুলেছেন কমলবাবু। শুধু ভাতজাংলা পঞ্চায়েতই নয়, মন্ত্রীর বিধানসভা এলাকায় রীতিমত বিপর্যয় ঘটেছে তৃণমূলের।
ওই বিধানসভার এলাকার ১২টি পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূলের বরাতে জুটেছে মাত্র দুটি। কৃষ্ণনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির দখল নিয়েছে বামফ্রন্ট। জেলাপরিষদের দুটি আসনই পেয়েছে বামফ্রন্ট। এই বিপর্যয়ের জন্য গোষ্ঠী
উজ্জ্বল বিশ্বাস।
—নিজস্ব চিত্র।
কোন্দলকে দায়ী করেছে তৃণমূলের একাংশ। তাদের অভিযোগ, গোষ্ঠী কোন্দলকে প্রশ্রয় দিয়েছেন মন্ত্রী।
তার ফল ভুগতে হয়েছে দলকে। অথচ গত বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্র থেকে প্রায় ১২ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন উজ্জ্বল বিশ্বাস। পরে তিনি কারিগরী দফতরের মন্ত্রীও হন। ওই গোষ্ঠীকোন্দলের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত। তিনি বলেন, “ভাতজাংলায় কিছু গোষ্ঠী কোন্দলের খবর ভোটের আগেই পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু তার সবটা নির্মূল করা যায়নি।”
কৃষ্ণনগর শহর ঘেঁষা ভাতজাংলা পঞ্চায়েত দীর্ঘ দিন ধরেই বামফ্রন্টের দখলে। এলাকায় তৃণমূলের অত্যন্ত দাপুটে নেতা বলে পরিচিত কমল ঘোষ। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাতজাংলা পঞ্চায়েতের ২২টি আসনের মধ্যে ২টি আসনে জয়ী হয় সিপিএম। বাকি ২০টি আসনে জয় হয় কংগ্রেস। লোকসভা ভোটের পরেই কমলবাবু-সহ ১৭ জন তৃণমূলের যোগ দেন। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের কথায়, প্রথম দিকে উজ্জ্বলবাবুর সঙ্গে কমলবাবুর ঘনিষ্ঠতা থাকলেও পরে দূরত্ব বেড়ে যায়। এই সুযোগে এক সময়ের কমলবাবুর ডান হাত সুজয় প্রামাণিক ঝুঁকে পড়েন উজ্জ্বল বিশ্বাসের দিকে।
এবার ভাতজাংলা পঞ্চায়েতের ২৭টি আসনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়ে। শেষ পর্যন্ত জেলা নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে রফাসূত্র বের হয়। কমলবাবু বলেন, “আমরা ১৪টি টিকিট পেয়েছি। আর মন্ত্রীর লোকেরা ১৩টি। তার পরেও ওরা ১৪টি আসনে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করায়।” তিনি বলেন, “মন্ত্রীর টাকার কাছেই আমাকে হার মানতে হল। নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়ে হারানো হয়েছে।” নির্দল প্রার্থীর ভোট কাটাকুটির জেরে কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে ৪ ভোটের ব্যবধানে হারতে হয় তাঁকে। সুজয় প্রামাণিক বলেন, “কমলবাবুরাও তো আমাদের বিরুদ্ধে ১০টি আসনে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করায়। মানুষ প্রমাণ করল কারা প্রকৃত তৃণমূল।”
এদিকে ভাতজাংলা ছাড়াও মন্ত্রীর এলাকায় একাধিক বার তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। ধুবুলিয়ায় ব্লক সম্মেলনে প্রকাশ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর লোকজন। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করেছিলেন কৃষ্ণনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির তৎকালীন সহ-সভাপতি মণি ঘোষ। পরে তিনি সদলবলে কংগ্রেসে যোগ দেন। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের দাবি, এ বারের ভোটে মণি ঘোষ নিজে জয়ী হতে না পারলেও ওই ব্লকে তৃণমূলের ধরাশায়ী হওয়ার পিছনে তাঁর বড় ভূমিকা রয়েছে। মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস অবশ্য বলেন, “কমল ঘোষের অভিযোগ সঠিক নয়। আমার এলাকায় কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। তবে এটা বলব ভাতজাংলায় প্রকৃত তৃণমূলই জিতেছে।” তা সত্ত্বেও ভাতজাংলা পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করতে তৃণমূলকে নির্ভর করতে হবে নির্দল প্রার্থীদের উপরেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.