ওয়ার্কিং কমিটি নিয়ে উত্তাপ বাড়ছে
বৈঠকে এলে ফৌজদারি মামলার হুমকি শ্রীনিকে
ক দিকে, সরে যাওয়া বোর্ড প্রেসিডেন্টের একগুঁয়ে যুদ্ধং দেহি মনোভাব। নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের ঔদ্ধত্যের স্টান্সে অনড় থেকে যাওয়া।
অন্য দিকে, পাল্টা হিসেবে শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার হুমকি! ক্রিকেট-জনস্বার্থ মামলা করে রাতারাতি যিনি বিখ্যাত, সেই আদিত্যপ্রতাপ বর্মার তীব্র প্রতিক্রিয়া— নয়াদিল্লির বৈঠকে একবার ঢুকলে কপালে দুঃখ আছে শ্রীনিবাসনের। এ বার আর জনস্বার্থ মামলা-টামলা নয়, সোজা ফৌজদারি ঠুকে দেওয়া হবে!
ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনের যুযুধান দুই প্রতিপক্ষ। এবং তাঁদের আকচাআকচিকে ঘিরে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল বুধবার দিনভর।
শ্রীনিবাসন এ দিন আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, আগামী ২ অগস্টের বৈঠকে তিনি যাচ্ছেন। একটি সংবাদপত্রে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, “দেখুন, একবার তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট যখন জমা পড়ে গিয়েছে, তখন আমি ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে যাবই। কেউ আটকাতে পারবে না। কারণ এটাই বলা ছিল যে, রিপোর্টটা জমা পড়লেই আমি আবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করতে পারব।” শুধু তাই নয়, বুধবার সকাল-সকালই শ্রীনি-গোষ্ঠী থেকে বলাবলি শুরু হয় যে, বিহার ক্রিকেট সংস্থা তো বোর্ডের অনুমোদিত সদস্যই নয়। তাদের করা জনস্বার্থ মামলাকে গ্রাহ্য করা হবে কেন?
যা শুনে উত্তেজিত হয়ে পড়েন বিহার ক্রিকেট সংস্থার সচিব আদিত্য বর্মা। আনন্দবাজারকে বলে দেন, “গ্রাহ্য হবে কি হবে না, সেটা বলার শ্রীনি কে? ও কি হাইকোর্টের বিচারপতিদের থেকেও উপরে নাকি? হাইকোর্ট যখন আমার মামলা নিয়েছে, তখন শ্রীনিবাসন কী বলল না বলল, কিছু যায় আসে না। আসলে ও বুঝতে পারছে পতন নিশ্চিত। আর সেটা হলে মানুষ এ রকম করতে থাকে।” কিন্তু শ্রীনি শুক্রবার বৈঠকে গেলে কী করবেন? এ বার আদিত্যর নতুন হুমকি, “ঢুকে দেখুক না একবার। মুম্বই হাইকোর্টের রায়ে কী বলা আছে জানি। ওখানে বলা হচ্ছে যে, স্পট ফিক্সিং কেসের সঙ্গে পরোক্ষ ভাবে শ্রীনিও জড়িয়ে আছে। আইনে যাকে প্রাইমা ফেসি বলে। ঢুকুক, সোজা ফৌজদারি মামলা আনব।”
যা শোনার পর বোর্ডের কর্তাদের কারও কারও মনে হচ্ছে, আদিত্য যা যুক্তি দিচ্ছেন তাতে শ্রীনি-র বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা আনা যেতে পারে। ডালমিয়া-গোষ্ঠীর একজন যুক্তি দিলেন, “আর্থিক নয়-ছয়ের কারণে ডালমিয়ার বিরুদ্ধে প্রথমে দেওয়ানি পরে ফৌজদারি মামলা আনা হয়েছিল। তা হলে শ্রীনি-র ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা ঘটতেই পারে।” আরও বলা হচ্ছে, গড়াপেটা আর বেটিংয়ের সঙ্গে জামাই গুরুনাথ মইয়াপ্পন জড়িয়ে পড়ার অভিযোগেই শ্রীনিকে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল। আর এখন শ্রীনি-নিযুক্ত তদন্ত কমিশনকেই বেআইনি বলে দিয়েছে মুম্বই হাইকোর্ট। তা হলে কী ভাবে শ্রীনি দিল্লি-বৈঠকে যাবেন? আর বৈঠকে যে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হবে ঠিক হয়েছিল, সেই তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে কিছু করতে গেলেই তো ‘কনটেম্পট অব কোর্ট’-এর আওতায় পড়তে হতে পারে। বলা হচ্ছে, এই জটের কারণেই নাকি ওয়ার্কিং কমিটির ‘আ্যাজেন্ডা’ এখনও পাঠাতে পারেনি বোর্ড। বৈঠক হবে বলে মেল এসেছে সচিব সঞ্জয় পটেলের থেকে। কিন্তু কোন বিষয় নিয়ে বৈঠক হবে, সেটা লেখা নেই। বৈঠকের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগেও আলোচ্য সূচিতে কী থাকবে, কিছু জানাতে পারেননি বোর্ড সচিব। যা সাম্প্রতিককালে ঘটেছে বলে কেউ মনে করতে পারছেন না।
শ্রীনি-ঘনিষ্ঠদের থেকে আবার পাল্টা বলা হচ্ছে, মুম্বই হাইকোর্টের রায়ে কোথায় বলা আছে শ্রীনিবাসন দিল্লির বৈঠকে যেতে পারবেন না? আরও বলা হচ্ছে, কখনও বলা হয়নি শ্রীনি-র প্রেসিডেন্ট পদ কাউকে দেওয়া হয়েছে। চেন্নাইয়ে জুনের মহাবৈঠকে বলা হয়েছিল, শ্রীনি যত দিন সরে থাকবেন, দৈনন্দিন কাজকর্মগুলো দেখবেন ডালমিয়া। শ্রীনি সে দিনও প্রেসিডেন্ট ছিলেন, আজও আছেন! শ্রীনিবাসন নিজেও চরম ঔদ্ধত্য দেখিয়ে বলে দিয়েছেন, ‘‘নতুন করে বোর্ডে যোগ দিচ্ছি কি না, প্রশ্নটা সেটা নয়। প্রশ্নটা হচ্ছে, আমি কবে যোগ দিচ্ছি!”
আর ডালমিয়া-শিবিরের আগামী স্টান্স?
যা খবর, ডালমিয়া অন্তবর্তিকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবেই নয়াদিল্লির বৈঠকে সম্ভবত যাচ্ছেন। ঘনিষ্ঠদের বলেও দিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট পদ নিয়ে কোনও রকম কাদা ছোড়াছুড়িতে যাবেন না। বৈঠকে বলে দেবেন, তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট জমা না পড়ার পর্যন্ত তাঁকে কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট বেছেছিল ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা। এ বার তাঁরাই ঠিক করবেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে কে থাকবেন। ঘটনা হচ্ছে, বৈঠকে ডালমিয়ার হয়ে ‘লিড’ করার মতো কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। ডালমিয়া গোষ্ঠীর মত, না অরুণ জেটলি, না রাজীব শুক্ল— কারও উপরই ভরসা করার বিশেষ জায়গা নেই। তাই প্রেসিডেন্ট নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটা সদস্যদের উপরে ছেড়ে দেওয়াই ভাল।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.