কলঙ্কিত ক্লডিয়াস-কেশবদের বাংলার হকি
‘বেনিয়মের’ অভিযোগে সাসপেন্ড বিএইচএ
লঙ্কিত হল শতবর্ষ পেরোনো দেশের অন্যতম ঐতিহ্যশালী ক্রীড়া সংস্থা বেঙ্গল হকি অ্যাসোসিয়েশন।
ময়দানে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটিয়ে বিএইচএ-কে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সাসপেন্ড করল হকি ইন্ডিয়া।
একশো পাঁচ বছরে যা কখনও হয়নি সেটা কেন হল?
কারণ হিসাবে সর্বভারতীয় হকি সংস্থা যে যুক্তি দেখিয়েছে তা গুরুতর— পদাধিকারী নির্বাচন এবং আর্থিক হিসাব পেশ ও হকির উৎকর্ষ বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিএইচএ-র ব্যর্থতা। হকি ইন্ডিয়া-র কর্মসমিতির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, দিল্লিতে এক মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে বিএইচএ যে ঠিক রাস্তায় হাঁটছে সেটা প্রমাণ করতে হবে এ রাজ্যের হকির কর্তাদের। এবং যত দিন না হকি ইন্ডিয়া-র কর্মসমিতি বা কার্যনির্বাহী কমিটির পরবর্তী সভায় তা ক্লিনচিট পাচ্ছে, তত দিন বাংলার হকি সংস্থার নির্বাসন উঠবে না। নির্বাসন না উঠলে বড় রকমের সমস্যায় পড়বে বাংলার হকি। জাতীয় স্তরের কোনও টুর্নামেন্টে দল পাঠাতে পারবে না বাংলা। বেটন কাপ-সহ কোনও টুর্নামেন্টও আয়োজন করতে পারবে না। আর্থিক অনুদান থেকেও বঞ্চিত হবে রাজ্য হকি সংস্থা।
রাজ্য হকি সংস্থা-র নানা বেনিয়মের ব্যাপারটা হকি ইন্ডিয়া-র সভায় উত্থাপন করেন অসমের প্রতিনিধি তপন দাশ। তাঁকে সমর্থন করেন মধ্যপ্রদেশের প্রতিনিধি রূপক দুবে। হকি ইন্ডিয়া-র এক প্রভাবশালী কর্তা বুধবার দিল্লি থেকে ফোনে বললেন, “বিএইচএ-র যে কোনও নির্বাচন হয়েছে সেটাই তো আমরা জানি না। ২০০৯ সাল থেকে কোনও হিসাব বা কাগজপত্র পাইনি। প্রচুর বেনিয়ম হয়েছে শুনেছি।”
গত ৮ জুলাই হকি ইন্ডিয়া এ রাজ্যের হকি সংস্থাকে নির্বাসিত করলেও তা এখনও জানেনই না বিএইচএ সচিব সলিল বসু। অন্তত সে রকম দাবি তাঁর। বললেন, “আমার কাছে কোনও খবর নেই। আমাদের সব ই-মেল তো আসে আগের সচিব গুরবক্স সিংহের অফিসের ঠিকানায়।” পরে তিনি ‘খোঁজখবর’ নিয়ে বলেন, “আমাদের প্রেসিডেন্ট প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার গৌতমমোহন চক্রবর্তী দিল্লি যাচ্ছেন কাগজপত্র নিয়ে। ওঁকে ফোন করে ডাকা হয়েছে বলে শুনেছি। ৮ অগস্ট তাঁর সঙ্গে হকি ইন্ডিয়া-র সেক্রেটারি জেনারেলের বসার কথা।”
কিন্তু কার দোষে এত বড় লজ্জাজনক পরিস্থিতির মুখে পড়তে হল বহু গৌরবের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা রাজ্য হকি সংস্থাকে? বর্তমান কর্তাদের গাফিলতি না বিদায়ী সচিব গুরবক্স সিংহের ব্যর্থতা? বর্তমান কর্তারা আড়ালে সব দোষ চাপাচ্ছেন প্রাক্তন সচিব গুরবক্সের উপর। আর গুরবক্স আঙুল তুলছেন বর্তমান কর্তাদের দীর্ঘসূত্রতার দিকে। প্রাক্তন হকি অলিম্পিয়ান গুরবক্স গত দু’মাস যাবত মেয়ের বাড়ি বেড়াতে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। ফোনে ধরা হলে বললেন, “অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। লজ্জার ব্যাপার। এটা রাজ্য হকির লজ্জা। কখনও এ রকম হয়নি। শুনে খুব খারাপ লাগছে। আমি অনেক দিন সরে গিয়েছি। ওরা এত দিন কেন ব্যাপারটা ফেলে রেখেছে জানি না।”
গুরবক্সের মতো হতবাক বাংলার আর এক অলিম্পিয়ান বীরবাহাদুর ছেত্রীও। এ দিন বললেন, “এ রকম লজ্জায় কোনও দিন পড়িনি। এটাও দেখতে হল! আমার মতো সমস্ত হকি খেলোয়াড় ও হকি প্রেমিককেই দুঃখ দেবে এই ঘটনা।”
বাংলার হকি কৌলিন্য হারিয়েছে বহু দিন। মাঠে লোক হয় না। অ্যাস্ট্রোটার্ফ না থাকায় হাল আরও খারাপ হয়েছে। রাজ্য সরকার থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম চত্বরে যে জমি পাওয়া গিয়েছিল তা দিতে নারাজ বর্তমান ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র। তিন প্রধানও হকি খেলে না। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো এর উপর আবার রাজ্য সংস্থারই উপর ঝুলল নির্বাসনের খাঁড়া!




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.