আরবিআই কর্তা পদে খোঁজ নতুন মুখেরই
দুব্বুরি সুব্বারাওয়ের কাজের মেয়াদ বাড়ছে না। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের পদে তাই এ বার আসতে চলেছে নতুন মুখ।
মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে নগদের জোগান কমাতে সুদ বাড়িয়ে রাখা, না কি আর্থিক বৃদ্ধির জন্য কম সুদে ঋণের বন্দোবস্ত করা কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক বনাম রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই দীর্ঘ দড়ি টানাটানির পরে অবশেষে হাল ছেড়ে দিচ্ছেন শীর্ষ
দুব্বুরি সুব্বারাও
ব্যাঙ্কের গভর্নর সুব্বারাওই। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের দাবি, সুব্বারাও নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি মেয়াদ শেষের পরে আর থাকতে চান না। তাঁর মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর। চিদম্বরম বলেন, “ছ’-সাত সপ্তাহ আগে সুব্বারাও আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেই সময়ে আমরা নতুন গভর্নর খোঁজার বিষয়টি নিয়ে ভাবনা-চিন্তাই শুরু করিনি। সুব্বারাও নিজেই আমাকে জানান, তিনি সরে যেতে চান। তিন চান না তাঁর নাম আর একটি মেয়াদের জন্য ভাবা হোক। আমরা তাঁর অনুরোধ মেনে নিয়ে এ বার নতুন গভর্নরের খোঁজ ও বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছি।”
সুব্বারাওয়ের উত্তরসূরি হিসেবে যে-তিনজন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে যোজনা কমিশনের সদস্য সৌমিত্র চৌধুরী ছাড়া বাকি দু’জনই এখন চিদম্বরমের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রকে কর্মরত। এক জন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা রঘুরাম রাজন। অন্য জন অর্থ বিষয়ক সচিব অরবিন্দ মায়ারাম।
অর্থমন্ত্রী হিসেবে চিদম্বরম গত এক বছর ধরেই দাবি তুলে আসছেন, আর্থিক বৃদ্ধিকে চাঙ্গা করতে কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা করুক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু গভর্নর হিসেবে আঁটোসাঁটো ঋণ- নীতির পক্ষেই সওয়াল করে এসেছেন সুব্বারাও। রক্ষণশীল শীর্ষ ব্যাঙ্ক গভর্নরের যুক্তি ছিল, সরকার আগে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করুক। তারপরে সুদের হার কমানো হবে। কিন্তু তাতে আর্থিক বৃদ্ধির হার নিয়ে চিন্তায় পড়তে হয়েছে চিদম্বরমকে। কারণ ৬ শতাংশ হারে আর্থিক বৃদ্ধি ধরে নিয়েই বাজেটের আয়-ব্যয়ের হিসেব কষেছেন অর্থমন্ত্রী। বৃদ্ধির হার কমে গেলে তাঁর হিসেবনিকেশও ওলট-পালট হয়ে যাবে। বাধ্য হয়ে চিদম্বরমকে বলতে হয়েছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তাঁকে সাহায্য না-করলে শেষ পর্যন্ত তিনি একলা চলো নীতি নিয়েই হাঁটবেন।
সুব্বারাও কিন্তু চিদম্বরমের যুক্তি মানতে চাননি কোনও দিনই। শুধু সুদের হার কমানো নয়, ডলার আমদানির লক্ষ্যে সরকারি ঋণপত্র বিদেশের বাজারে ছাড়া নিয়েও গত কাল ঋণনীতি পেশের সময়ে আপত্তি তুলেছেন তিনি। আজ কিন্তু চিদম্বরম নতুন দফায় অর্থমন্ত্রী হিসেবে তাঁর এক বছর পূর্তি উপলক্ষে এক সাংবাদিক বৈঠকে ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিশ্ব জুড়েই শীর্ষ ব্যাঙ্কের প্রধানদের কাছ থেকে এখন শুধু মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখার থেকে আরও বেশি কিছু আশা করা হচ্ছে। চিদম্বরম বলেন, “মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখাটা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু তার সঙ্গে বৃহত্তর লক্ষ্য হবে আর্থিক বৃদ্ধি। এমনকী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও ফেডারেল রিজার্ভের নতুন প্রধানের যোগ্যতা সম্পর্কে বলেছেন, এমন একজনকে প্রয়োজন, যিনি মূল্যবৃদ্ধির হার স্থিতিশীল রাখার সঙ্গেই কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবেন।”
গত পাঁচ বছরে সুব্বারাওকে ২০০৮ সালের আন্তর্জাতিক মন্দার সামাল দিতে হয়েছে। শুধু সরকার নয়, শিল্পমহলের চাপ সহ্য করেও সুদের হার না-কমানোর নীতিতে অবিচল থেকেছেন তিনি। বছরে চার বারের বদলে আট বার করে ঋণনীতির পর্যালোচনায় বসেছেন। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সময়ই বলবে নীতির প্রশ্নে সুব্বারাও ঠিক ছিলেন না ভুল। কিন্তু তিনি যে শীর্ষ ব্যাঙ্কের স্বাধীন অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। নয়া কর্তা তা কতটা বজায় রাখতে পারেন, সেটাও দেখার।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.