পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য ঘোষণা হওয়ার পর মঙ্গলবার রাত থেকেই দার্জিলিং পাহাড়ে নতুন করে জট। কিন্তু বুধবার মুম্বই আসার জন্য যখন তৈরি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন কিন্তু তাঁর মেজাজ বেশ ফুরফুরে। মুম্বইয়ে পা দিয়েও তার বদল হয়নি।
কলকাতা ছাড়ার আগেই বিমল গুরুঙ্গের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। কড়া চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে। এবং একাধারে এই দু’টি কৌশলী এবং কঠোর বার্তা দিয়ে রাজনৈতিক ভাবে অনেকটাই সন্তুষ্ট বোধ করছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুম্বই বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের সঙ্গে অবশ্য কথা বললেন না। স্থানীয় কিছু তৃণমূল সমর্থক ফুল-মালা নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গেও আলাদা করে কথা বললেন না। কিন্তু প্রচ্ছন্ন তৃপ্তির রেশ ছড়িয়ে রইল মমতার মুখে।
বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে শিল্পসভা। হলঘরটা খুব বড় নয়। |
ফুলে ফুলে স্বাগতম। বুধবার মুম্বইয়ে পৌঁছনোর পরে। ছবি: সুমন বল্লভ। |
মেরেকেটে শ’খানেক লোক ধরবে। কী ভাবে তার মধ্যেই শিল্প ও সংস্কৃতি জগতের সব অতিথিদের আপ্যায়ন করা যায়, সেটাই খতিয়ে দেখছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। অরূপবাবুকে এক দিন আগেই মুম্বই পাঠিয়ে দিয়েছিলেন মমতা। মুম্বই প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে যাঁরা সংস্কৃতি, বিশেষত চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করার দায়িত্ব ছিল তাঁর উপরে।
কারণ, মমতা বরাবরই বলে এসেছেন, শিল্প বলতে তিনি শুধু ইট-কাঠের ভারী শিল্প বোঝেন না। সংস্কৃতিও তাঁর কাছে শিল্পের অন্যতম স্তম্ভ। বাংলার চলচ্চিত্র শিল্পে মুম্বইয়ের অংশগ্রহণ বাড়ানোর বিষয়ে মমতা গোড়া থেকেই আগ্রহ দেখিয়ে আসছেন।
শিল্পসভায় সংস্কৃতি জগতের অভ্যাগতরা এ বার অবশ্য কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য আসছেন না। তাঁরা থাকবেন শিল্পসভার অতিথি হয়েই। কারা আসবেন? তবে আমন্ত্রণ পেলেও অমিতাভ বচ্চন বা শাহরুখ খান থাকতে পারছেন না। দু’জনের কেউই মুম্বইয়ে নেই। মিঠুন চক্রবর্তী আসতে পারেন। বাংলার প্রসেনজিৎ এখন কাজের সূত্রে মুম্বইয়ে রয়েছেন। তিনিও হয়তো আসছেন। এ ছাড়া কুমার শানু, শান, বাপ্পী লাহিড়ী, জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়রা থাকবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
শিল্পসভা চলবে পাঁচটা থেকে সাড়ে ছ’টা পর্যন্ত। সভা শুরুর আগে সাংবাদিকদের জন্য ফোটোসেশন থাকছে। সভার পরে সাংবাদিক সম্মেলন। কিন্তু মূল অনুষ্ঠানে সংবাদমাধ্যমকে রাখা হচ্ছে না। সাংবাদিক বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী অতিথিদের সঙ্গে ‘হাই টি’-তে যোগ দেবেন। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র রাজ্যে ফিনান্সিয়াল হাবের ব্যাপারে কথা বলতে কিছু ব্যাঙ্ক-কর্তাদের সঙ্গে মিলিত হবেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন না বলে জানা গিয়েছে।
মালাবার হিলসে মহারাষ্ট্র সরকারের অতিথিনিবাসে উঠেছেন মমতা। বলে দিয়েছেন, মহারাষ্ট্রের সাবেকি খাবারই যেন দেওয়া হয় তাঁকে। বৃহস্পতিবারের হাই টি-তে অবশ্য বাংলার ছোঁয়া। দার্জিলিং চা আর বাঙালি মিষ্টির ব্যবস্থা থাকবে বলে শোনা যাচ্ছে। ঘনিষ্ঠ মহলে মুখ্যমন্ত্রী প্রসন্ন মেজাজে বলেছেন, যে লক্ষ্য নিয়ে বাণিজ্য নগরীতে এসেছেন, সেটা পূরণ হবে বলেই তাঁর আশা। |