পঞ্চায়েত নির্বাচনে হারের পর এক তৃণমূল প্রার্থীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হল। মঙ্গলবার রায়গঞ্জ থানার বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতে চাপদুয়ারে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম আনন্দ বর্মন (৪৫)। পেশায় চাষি আনন্দবাবুর বাড়ি ওই এলাকাতেই। একটি আমগাছ থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহটি পুলিশ উদ্ধার করে। তিনি বাহিন পঞ্চায়েতের চাপদুয়ার সংসদের তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে ভোটে দাঁড়িয়ে হেরে যান। রায়গঞ্জ থানার আইসি দীনেশ প্রামাণিক বলেন, “মৃতের পরিবার বা কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।” পুলিশ জানিয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগের দিন রাতে আনন্দবাবু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরেরদিন তিনি স্বেচ্ছায় হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে যান। ভোটের ফল বার হতে দেখা যায় ১৫২টি ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে। কংগ্রেসের কৃষ্ণা বর্মন ৫৮০টি এবং জয়ী বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী ৬১১টি ভোট পেয়েছেন। আনন্দবাবুর বাবা, মা ছাড়াও স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। ২৫ বিঘা জমিতে সারাবছর চাষবাদ করেই আনন্দবাবুদের সংসার চলে। তিনি কংগ্রেস করলেও পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দেন। এ দিন ভোরে আনন্দবাবু জমিতে কাজ করতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বার হয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। মৃতের বড় ছেলে অনিমেশ রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি বলেন, “বাবা চাপা মানুষ ছিলেন। নিজের সমস্যা বা অসুবিধার কথা বাড়িতে আলোচনা করতেন না। ভোটে হেরে যাওয়ায় মুষড়ে পড়েন। তবে কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করলেন তা বুঝতে পারছি না। বাবাকে কেউ হুমকি দিয়েছিল কি তাও জানি না।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “মৃতের পরিবার ও এলাকার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশে অভিযোগ জানানোর বিষয়টি ঠিক হবে।” তবে জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “তৃণমূল মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছে। আনন্দবাবু নির্বাচনে প্রচুর টাকা খরচ করলেও শেষপর্যন্ত হেরে যান। সেইকারণেই মানসিক অবসাদে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।” |