সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের দক্ষিণ বেরুবাড়ি পঞ্চায়েতে জয়ী হয়েছে বামেরা। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান পদটি তফসিলি উপজাতির মহিলা প্রার্থীর জন্য সংরক্ষিত। অথচ গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী বামেদের প্রার্থীদের মধ্যে তেমন কেউ নেই। যাকে প্রধান পদে বসানোর কথা ভেবে প্রার্থী করেছিলেন তাঁরা, দক্ষিণ বেরুবাড়ির দইখাতা ওখরাবাড়ি গ্রামে দাঁড়িয়ে সেই সুমিত্র ভগৎ জিততে পারেননি। তাই সব হয়েও ওই গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে মহাফাঁপড়ে পড়েছে বামেরা।
কংগ্রেস এবং তৃণমূল থেকে জেতাদের মধ্যে তফসিলি উপজাতির মহিলা রয়েছেন। তাই সংখ্যালঘু হয়ে প্রধান পদে তারাই দাবিদার। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস, না তৃণমূলের প্রার্থী পদ পাবে তা নিয়ে ভোটাভুটি পথে যাওয়ার সম্ভবনাই প্রবল হয়ে উঠেছে। প্রধান পদ সংরক্ষিত হলেও উপপ্রধান পদ সংরক্ষিত নয়। ফব-র জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক প্রবাল রাহা বলেন, “দক্ষিণ বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে কী করা হবে সে ব্যাপারে বামফ্রন্টগত ভাবে আলোচনা চলছে। আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” দক্ষিণ বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা ১৫টি। তার মধ্যে বামফ্রন্ট পেয়েছে ১০টি আসন। ফব ৮টি এবং সিপিএম ২টি। কংগ্রেস পেয়েছে ৪টি আসন এবং তৃণমূল পেয়েছে ১টি আসন। অথচ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েও প্রধান পদে থাকতে পারছে না বাম। প্রধান পদে তাদের প্রার্থী দক্ষিণ বেরুবাড়িতে তৃণমূলের বীণা হেমব্রমের কাছে হেরে গিয়েছে। আসনটিতে তৃণমূল একমাত্র জিতেছে। বীণাদেবী তফসিলি উপজাতি ভুক্ত। তবে তৃণমূল থেকে তাঁর নাম প্রধান পদের জন্য প্রস্তাব এবং সমর্থন করার মতো সদস্য তাদের নেই। কংগ্রেসের চারজন পঞ্চায়েত সদস্যের মধ্যে ধরধরাপাড়া থেকে জিতেছেন রীতা মালপাহাড়ি। তিনি একজন তফসিলি উপজাতির মহিলা। কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, রীতা মালপাহাড়িকে দক্ষিণ বেরুবাড়ি পঞ্চায়েতে প্রধান করতে তারা চাইছেন। কংগ্রেসের মনোরঞ্জন রায় বলেন, “প্রধান পদে রীতা মালপাহাড়ির নাম প্রস্তাব করা এবং সমর্থন করার মত প্রয়োজনীয় সদস্য আছে। বাকিটা সদস্যদের সমর্থনের ওপর নির্ভর করছে।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসু বলেন, “দক্ষিণ বেরুবাড়ির বিষয়টি স্থানীয় নেতৃত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারা যা সিদ্ধান্ত নেবেন তা চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।” প্রধান নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেসের প্রস্তাবক, সমর্থক থাকলেও তৃণমূল কংগ্রেসের বীণা হেমব্রমের নেই। তাও তাঁকে সামনে রেখে প্রধান নির্বাচনের যেতে চাইছে তৃণমূল। দক্ষিণ বেরুবাড়ির সভাপতি নৃপতিভূষণ দাস বলেন, “বামফ্রন্টের নেতৃত্বের কাছে যাব না। নির্বাচিত সদস্যদের কাছে সমর্থন চাইব। প্রধান পদে আমাদের প্রার্থী হবে বীণা হেমব্রম।” প্রধান নির্বাচন নিয়ে বামেদের সামনে দুটি রাস্তা। এক ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকা। বা এক জন সদস্যকে সমর্থন করা। |