তৃণমূল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে কোচবিহার জেলা পরিষদ দখল করতেই সম্ভাব্য সভাধিপতি কে হচ্ছেন তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, সভাধিপতি পদের লড়াইয়ে এগিয়ে জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি চৈতি বর্মন। নির্বাচনের মুখে সিপিএমের প্রাক্তন সভাধিপতি চৈতিদেবী তৃণমূলে যোগ দেন। জেলা নেতৃত্বের প্রভাবশালী গোষ্ঠী তাঁকেই সভাধিপতি পদে বসাতে চাইছেন।
তপসিলি মহিলার জন্য সংরক্ষিত ওই পদে তুফানগঞ্জ-২ পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া এ বার জেলা পরিষদ আসনে জয়ী হয়েছেন। মাথাভাঙা থেকে জয়ী হয়েছেন দলের মহিলা নেত্রী সুমিত্রা বর্মন ও রেণুকা বর্মনও। তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের একাংশ তিন জনের বিষয়ে পৃথক তদ্বির শুরু করেছেন। দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ শুধু বলেন, “সভাধিপতির নাম চূড়ান্ত করার ব্যাপারে দলনেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ই সিদ্ধান্ত নেবেন।” |
কোচবিহার জেলা পরিষদের ৩৩টি আসনের মধ্যে তৃণমূল একাই পেয়েছে ২৭টি। বামেদের দখলে গিয়েছে ৬টি। মেখলিগঞ্জ হলদিবাড়ি ও কোচবিহার ২ ব্লকে দুটি করে আসন। সিপিএম ও ফরওয়ার্ড ব্লক ৩টি করে আসন পায়। মাথাভাঙার দলের নেতাদের একাংশের যুক্তি, বাম আমলে ওই মহকুমার কেউ সভাধিপতি পদ পাননি। মহকুমাবাসীর ওই আক্ষেপ মেটাতে এলাকার কাউকে বেছে নেওয়া উচিত বলে তারা জেলা নেতাদের জানিয়েছেন। তুফানগঞ্জের নেতাদের একাংশের বক্তব্য, মহকুমার ৬টি জেলা পরিষদ আসন তৃণমূল জিতেছে। চৈতি বর্মনের সভাধিপতি পদে অভিজ্ঞতা আছে। পুষ্পিতা ডাকুয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন। দলের পুরানো সৈনিক ফলে অভিজ্ঞতা বা দলীয় আনুগত্যের নিরিখ মানদন্ড যাই হোক সভাধিপতি পদ তাঁদেরই প্রাপ্য। মাথাভাঙার বাসিন্দা বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন অবশ্য বলেন, “কে কি বলছেন জানি না। সভাধিপতি পদ নিয়ে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবেন।” তুফানগঞ্জের বাসিন্দা চৈতি বর্মনের বক্তব্য, “আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হলে তা পালন করব।” জেলায় গোষ্ঠী কোন্দল থাকলেও তৃণমূলের সাফল্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন পড়েছে। তবে দলের একটি সূত্রের বক্তব্য, আখেরে ওই ফলে শেষ হাসি হাসলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবু। তাঁর নেতৃত্বেই এবার কোচবিহারে পঞ্চায়েত লড়াইয়ে নামে তৃণমূল। তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত মিহির গোস্বামীকে আগে আলিপুরদুয়ারের দায়িত্ব দেন রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব। আবার অর্ঘ্য রায়প্রধান সেভাবে সক্রিয় ছিলেন না। হিতেন বর্মন নিজের এলাকা নিয়ে প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন। সার্বিক ভাবে রবীন্দ্রনাথবাবুই গোটা জেলা চষে বেড়ান।
বামেদের মধ্যে দুই শরিক তিনটি করে আসন পাওয়া বিরোধী দলনেতার দাবি নিয়ে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার বামফ্রন্টের জেলা কমিটির বৈঠকে বিষয়টি আলোচনা হবে। ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সভাপতি পরেশ অধিকারি, সিপিএম জেলা সম্পাদমণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “বামফ্রন্ট্রের বৈঠকের সব ঠিক হবে। কোনও সমস্যা নেই।” |