‘সদিচ্ছার অভাব’, ধুঁকছে আয়ুর্বেদিক হাসপাতাল
টানা দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে তালা ঝুলছে রাজ্যের একমাত্র আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে। যদিও হাসপাতালে ডাক্তার আছেন। আছে অপারেশন থিয়েটার, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সব কিছুই। রোগিণী এলে তাঁদের রেফার করা হচ্ছে অন্য অ্যালোপ্যাথিক হাসপাতালে। অথচ, মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্তা সকলেই দাবি করছেন, আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথি-সহ বিভিন্ন বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির উপরে গুরুত্ব বাড়াচ্ছে রাজ্য সরকার। গুরুত্ব বাড়ানোর এমন নমুনা দেখে ওই মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক-চিকিৎসক থেকে শুরু করে পড়ুয়া সকলেই বিরক্ত। নিজেদের বিরক্তির কথা জানিয়ে তাঁরা চিঠিও দিয়েছেন স্বাস্থ্য ভবনে।
জে বি রায় হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার।—নিজস্ব চিত্র
জে বি রায় আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল রাজ্যের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মেডিক্যাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে অন্যতম। আয়ুর্বেদিক পঠনপাঠন ও চিকিৎসার পাশাপাশি অ্যালোপ্যাথ চিকিৎসকেরাও এখানে চিকিৎসা করেন। দিনে গড়ে তিন থেকে চারটি সাধারণ প্রসব, দু’টি সিজারিয়ান প্রসব হত এখানে। কিন্তু বছর দেড়েক সব বন্ধ।
কেন? কলেজের অধ্যক্ষ গোবিন্দচন্দ্র পোল্লের যুক্তি, “নার্স কম, অ্যালোপ্যাথ চিকিৎসক থাকেন না বেশিরভাগ সময়েই। হঠাৎ প্রসূতির অবস্থা খারাপ হলে সামলাবেন কে? তাই ঝুঁকি না নিয়ে প্রসূতি বিভাগ বন্ধ রাখা হয়েছে।”
কিন্তু এই মুহূর্তে আয়ুর্বেদ চিকিৎসকের পাশাপাশি এখানে এক জন স্ত্রী-রোগ চিকিৎসকও তো রয়েছেন। তা হলে প্রসূতি বিভাগে তালা ঝুলল কেন? অধ্যক্ষের জবাব, “প্রসূতি বিভাগে যে অ্যালোপ্যাথি ডাক্তার রয়েছেন, তিনি মাস খানেক পরেই অবসর নিচ্ছেন। তাঁর জায়গায় কেউ আসবেন কি না, এখনও নিশ্চিত নয়। এখন যদি কোনও প্রসূতি এখানে কার্ড করাতে আসেন, তাঁর প্রসব তো হবে কয়েক মাস পরে। তখন ওই চিকিৎসক থাকবেন না। আমরা ঝুঁকি নেব কী ভাবে?” কিন্তু এটা তো সাম্প্রতিক সমস্যা। দেড় বছর ধরে বিভাগ বন্ধ থাকার যুক্তি কী? অধ্যক্ষের কাছে তার কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তবে স্বাস্থ্য ভবনের আয়ুর্বেদ বিভাগ সূত্রে খবর, দীর্ঘ সরকারি অবহেলাই এই হাসপাতালটিকে ক্রমশ এমন পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্তা স্বীকার করলেন, “হেল্থ সার্ভিস থেকে সেই সব চিকিৎসকদেরই আয়ুর্বেদিক হাসপাতালে পাঠানো হয়, যাঁদের অবসরের সময় প্রায় ঘনিয়ে এসেছে। শেষ ছ’মাস হয়তো তাঁরা সেখানে কাজ করলেন। তার পরে তাঁরা অবসর নিলে টানা দু’-আড়াই বছর পদ খালিই পড়ে থাকছে। আয়ুর্বেদ নিয়ে সরকারি স্তরে কোনও ভাবনাচিন্তাই নেই।”
১২০ শয্যার এই হাসপাতালে ২৪টি শয্যা প্রসূতি বিভাগের জন্য বরাদ্দ। সেখানে কাজকর্ম শিকেয় ওঠায় পড়ুয়াদের পঠনপাঠনেও সমস্যা হচ্ছে। মেডিক্যাল শিক্ষায় রোগীর শয্যার পাশে থেকে হাতেকলমে যে শিক্ষা, তা থেকে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন পড়ুয়ারা। এ ব্যাপারে তাঁদের তরফে স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়েছে।
কবে হবে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন? তার উত্তর কারও কাছে নেই। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য নিয়মমাফিক জানিয়েছেন, বিশদে খোঁজ নিয়ে তবেই তিনি জানাতে পারবেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.