ঝুঁকির অস্ত্রোপচার,বাঁচল কিশোর
ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে জটিল অপারেশন করে এক কিশোরের গলায় এ ফোঁড় ও ফোঁড় হয়ে বিঁধে থাকা গাছের ডাল বের করে ফেলা হল। রাজ্যের ক্ষমতায় তৃণমূলের সরকার আসার পর ঝাড়গ্রাম মহকুমা হাসপাতালটিকে জেলা স্তরের হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। জেলা হাসপাতাল হলেও এখনও পরিকাঠামোগত কিছু খামতি থেকে গিয়েছে বলে অভিযোগ। তা সত্ত্বেও রোগীকে ‘রেফার’ করেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঝুঁকির অপারেশন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেওয়া হল বছর এগারোর দেবাশিস মাহাতোকে। বেলপাহাড়ির বৈষ্ণবপুর গ্রামে দেবাশিসের বাড়ি। স্থানীয় বামুনডিহা হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে সে।
হাসপাতালে দেবাশিস। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
সোমবারের সকালে বেলপাহাড়ির বৈষ্ণবপুর গ্রামে বাড়ির অদূরে খেলাচ্ছলে একটি পেয়ারা গাছে চড়েছিল দেবাশিস। ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে আচমকা গাছের মগডাল থেকে পা পিছলে নিচে পড়ে যায় সে। পড়ে যাওয়ার সময় পেয়ারা গাছের তলায় থাকা অন্য একটি গাছের ডাল দেবাশিসের গলার ডানদিকে ঢুকে এ ফোঁড় ও ফোঁড় হয়ে যায়। ওই অবস্থায় দেবাশিসকে প্রথমে বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান পরিজনেরা। সেখান থেকে রেফার করে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয় ওই কিশোরকে। দেবাশিসের বাবা খগেন্দ্রনাথ মাহাতো ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেন, আর কোথাও তিনি ছেলেকে নিয়ে যাবেন না। ভালমন্দ যাই হোক, ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালেই হবে। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সুদীপ কাঁড়ার বলেন, “হাসপাতালের শল্য চিকিত্‌সক গৈরিক মাজি অপারেশনটি করার সিদ্ধান্ত নেন। সোমবার বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রায় এক ঘণ্টা ধরে গৈরিকবাবুর সঙ্গে অস্ত্রোপচারে সাহায্য করেন অ্যানেস্থেটিস্ট দীপক মণ্ডল, ইএনটি বিশেষজ্ঞ শঙ্খ চৌধুরী। অপারেশনটি অত্যন্ত ঝুঁকির ছিল। কিন্তু আমরা সফল হয়েছি।” শল্য চিকিত্‌সক গৈরিক মাজি বলেন, “গাছের ডালটা দেবাশিসের গলায় এ ফোঁড় ও ফোঁড় হয়ে ঢুকে থাকায় অপারেশনে ভীষণরকম সমস্যা হচ্ছিল। আমাদের কাছে প্রধানততম চ্যালেঞ্জ ছিল মস্তিকে রক্তসংবহকারী শিরা ও ধমণী এবং মুখমণ্ডলের স্নায়ুগুলিকে বাঁচিয়ে অপারেশনটি করা। সেটা আমরা সফলভাবে করতে পেরেছি।”
মঙ্গলবার থেকেই হাসপাতালের শয্যায় বসে কথা বলছে দেবাশিস। দেবাশিস এ দিন সে বলে, “আর গাছে চড়ব না।” খগেন্দ্রনাথবাবু চোখের জল মুছে বলেন, “আমি পেশায় দিনমজুর। ছেলেকে সুস্থ ভাবে ফিরে পাবো ভাবতেই পারিনি। ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের চিকিত্‌সকদের জন্য ছেলেকে ফিরে পেলাম।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.