জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার।
এর জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে রাজ্যের ৫টি দুর্ঘটনাপ্রবণ রাস্তা২, ৬, ৪১ ও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং দিঘা-কলকাতা রাজ্য সড়ক। এই রাস্তাগুলিতে কোনও দুর্ঘটনা হলে আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। রাস্তার ধারে নার্সিংহোম ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির সঙ্গে চুক্তিও হয়ে গিয়েছে। ঠিক ভাবে এই কাজ হচ্ছে কি না দেখবে সংশ্লিষ্ট এলাকার জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পশ্চিম মেদিনীপুরের সহকারী জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গি বলেন, “চুক্তিবদ্ধ হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের তালিকা চলে এসেছে রাজ্য থেকে। শীঘ্রই এই পরিষেবা চালুর জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” জাতীয় সড়ক মানেই দ্রুত গতি। একটু নিয়ন্ত্রণ হারালেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার পরেই টহলদারি পুলিশ এসে আহতদের উদ্ধার করছেএমনটা কমই হয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে খবর পেয়ে পুলিশ যতক্ষণে আসে দুর্ঘটনাস্থলে, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। আবার পুলিশ সব সময় চেষ্টা করে সরকারি হাসপাতালে পাঠাতে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে সরকারি হাসপাতাল দূরে হলে আহতদের পৌঁছতে বেশ কিছুটা দেরি হয়ে যায়। অযথা দেরি হওয়ার কারণে চিকিৎসা না পেয়ে বেঘোরে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে প্রায়শই। কিন্তু রাস্তাতেই অ্যাম্বুল্যান্স থাকলে, রাস্তার দু’পাশে বেসরকারি নার্সিংহোমকে চিকিৎসার কাজে যুক্ত করলেদুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই কমানো যেতে পারে। একটি নির্দিষ্ট সংস্থা এই কাজের দায়িত্বে থাকলে সুবিধা আরও বেশি। তাই চলতি বছর মার্চ মাসে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে এই দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। জেলায় সেই নির্দেশিকা পৌঁছেছে ১৩ জুন। জেলাগুলি সরকার নির্দিষ্ট হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে। যত দ্রুত সম্ভব এই পরিষেবা চালু করতে সব ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। মূলত হুগলি, হাওড়া, বর্ধমান ও দুই মেদিনীপুর জেলার ৪৭টি থানা এলাকায় ওই পাঁচটি রাস্তার উপর নজরদারি চালাবে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি। হাওড়া থেকে কোলাঘাট, খড়্গপুর হয়ে ঝাড়গ্রাম পর্যন্ত যেমন এই পরিষেবা থাকবে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে তেমনই খড়্গপুর থেকে বেলদা-নারায়ণগড় হয়ে দাঁতন অর্থাৎ ওড়িশা সীমান্ত পর্যন্ত এই পরিষেবা মিলবে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে। এ ভাবেই হুগলির ডানকুনি, চণ্ডীতলা, সিঙ্গুর, হরিপাল, দাদপুর, ধনেখালি, গুড়াপ থানা এলাকাতেও মিলবে পরিষেবা। বর্ধমানের জামালপুর, গলসি, বর্ধমান, দুর্গাপুর, আসানসোল হয়ে কুলটি পর্যন্ত পরিষেবা মিলবে। পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থেকে হলদিয়া, আবার কাঁথি, রামনগর হয়ে দিঘা পর্যন্ত মিলবে এই পরিষেবা। তৈরি থাকবে অ্যাম্বুল্যান্সও। কোথাও দুর্ঘটনার খবর পেলেই আহতদের নিয়ে রওনা হবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তার জন্য সব মিলিয়ে ৫৩টি হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। যার মধ্যে রাস্তার ধারে থাকা বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল যেমন রয়েছে তেমনই রয়েছে সরকারি খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল, ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতাল, তমলুক হাসপাতাল, উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল, মেমারি হাসপাতাল প্রভৃতি। |