ভোটের ফলে অবাক বামেরাই
বিধানসভা ভোটে জেলায় বামের আসন ১১ থেকে ৫ এ নেমে এসেছিল। বিধানসভা পরবর্তীতে বামদুর্গ বলে পরিচিত ধূপগুড়ি পুরসভা বাম বিপর্যয় হয়। বিধানসভা ভিত্তিক আসন পরিসংখ্যানে হোক কিংবা সামগ্রিক রাজনৈতিক বিশ্লেষণে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ ত্রিশঙ্কু হতে চলেছে বলে জেলার বাম নেতাদের আশঙ্কা ছিল। খুব ভাল ফল হলে অন্তত ১৬ থেকে ২০টি আসন পাওয়া যাবে বলে মনে করেছিলেন তাবড় বাম নেতারা।
কিন্তু সোমবার মাঝরাত পার করে জেলা পরিষদের পূর্ণাঙ্গ ফল প্রকাশের পরে জেলার ৩৭টি জেলা পরিষদের আসনেই ২৭টিতেই বামেদের জয়ের খবর শুনে তা অপ্রতাশিত বলে মন্তব্য করেন জেলার একাধিক শীর্ষ বাম নেতা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক তথা জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক কৃষ্ণ বন্দোপাধ্যায়ের কথায়, এমনটা আশা করিনি তা নয়, তবে বেশ কিছু আসন নিয়ে সংশয় ছিল। রাজনীতি নিয়ে ওয়াকিবহাল মহলের মতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ এবং প্রার্থী বাছাই নিয়ে ক্ষোভ এবং কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের সমন্বয়ের অভাবই এবং এ বারেই প্রথম জেলায় সার্বিক বাম ঐক্য জেলায় বামফ্রন্টকে বাড়তি সুবিধে দিয়েছে।
দলের অন্দরের খবর, প্রার্থী বাছাই নিয়ে ক্ষোভে রাজগঞ্জ, আলিপুরদুয়ার, মালবাজার, ধূপগুড়ির মতো এলাকায় তৃণমূলের একাংশ নেতা কর্মীরা গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রচার করেই দায় সেরেছেন। পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদে দলের প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করেননি। যে কারণে ধূপগুড়ি ব্লকের ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৮টি তৃণমূল দখল করলেও পঞ্চায়েত সমিতি দখল করতে পারেনি শাসক দল। ধূপগুড়ি থেকে জেলা পরিষদ আসন জিততে পারেনি তৃণমূল। শিবিরের ব্যাখা, বিধানসভায় হারা আসন ময়নাগুড়িতে পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত সমিতিতে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা এবং জেলা পরিষদের দুটি আসন মিলেছে। ফালাকাটায় পর্যদুস্ত বামপন্থীরা। তৃণমূল নেতাদের অনেকের চোখেই সেই সমন্বয় চোখে পড়েনি জেলার অন্য ব্লকে। একই ভাবে সোমবার দলের ফল প্রকাশ হওয়ার পরেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে কংগ্রেসের অন্দরে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে প্রতিটি ব্লকের দায়িত্ব দলের একজন করে জেলা নেতাকে দেওয়া হয় পরে সকলে মিলে কোনও বৈঠকই হয়নি। বহু ক্ষেত্রে জেলার শীর্ষস্তর থেকে রাজনৈতিক মদত না মেলার অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস প্রার্থীরা। কালচিনি পঞ্চায়েত সমিতি থেকে জেলা পরিষদের তিনটে আসনের মধ্যে সবকটিতেই কংগ্রেস জিতলেও জেলার অন্য ব্লকগুলিতে কংগ্রেস কার্যত তৃতীয় শক্তিতে পরিণত হয়েছে। ডুয়ার্সে আঞ্চলিক শক্তি কংগ্রেসকে ঠেলে দিয়েছে চতুর্থ স্থানে। জেলায় কংগ্রেসের তিন বিধায়কের এলাকাতেও কংগ্রেস একটি জেলা পরিষদের আসন জিততে পারেনি। জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসু বলেন, “জেলার ফল এটা প্রমাণ করেছে যে কংগ্রেসের সমর্থন ছাড়া বামফ্রন্টকে হারানো যাবে না। তবে আমরা আরও ভাল ফল আশা করেছিলাম। কেন হল না পর্যালোচনা করে দেখতে হবে।” জেলায় বাম দুর্গ অটুট বলে মানতে চাননি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি চন্দন ভৌমিক। তিনি বলেন, “ফল আশানুরূপ হয়নি এটা ঠিকই। তবে চা বলয় বা ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, ফালাকাটা মতো কৃষি বলয়ের গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। জেলার ওই অংশে বাম বিপর্যয় হয়েছে। আমাদেরও কিছু ত্রুটি ঘটেছে। এর থেকে শিক্ষা নিয়ে লোকসভায় লড়ব।”
ত্রিস্তর পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা কায়েমের পর থেকে এবারই প্রথম জেলা পরিষদ স্তরে বাম ঐক্য হয়েছে। ভোটের আগে জেলা নেতাদের নির্দেশে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত সমিতিতেও লড়েছে বামফ্রন্ট। সিপিএমের জেলা সম্পাদকর কৃষ্ণবাবু বলেন, “গত দু বছরে তৃণমূল সরকারের কাজ দেখে জেলার মানুষ বামেদের উপরেই আস্থা রেখেছেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.