মন্ত্রীর এলাকায় ফল ভাল নয় কেন, প্রশ্ন দলেই
শিলিগুড়ি ও লাগোয়া জলপাইগুড়ি এলাকায় উন্নয়ন করেও কিছু নেতার ‘ঔদ্ধত্য ও দুর্নীতি’র দায় কাঁধে নিয়ে বিধানসভা ভোটে হারতে হয়েছিল প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যকে। যে ধরনের অভিযোগের তির বিঁধেছিল সিপিএমের প্রাক্তন মন্ত্রীকে, তা-ই যেন এখন তাড়া করছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবকেও। শিলিগুড়ি লাগোয়া ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি ও রাজগঞ্জ বিধানসভায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে দলের ফল যে মনে ধরেনি, ঘনিষ্ঠ মহলে তা মানছেন মন্ত্রী। দলের একাংশ আবার ফল খারাপ হওয়ায় অভিযোগের আঙুল তুলছে মন্ত্রীরই দিকে।
গৌতমবাবুর নিজের বিধানসভা কেন্দ্র ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে একটিতে একক ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূল। অন্য তিনটির মধ্যে একটি বামেদের, বাকি দু’টি কার্যত ত্রিশঙ্কু। গত বার অবশ্য তাঁদের দখলে একটিও পঞ্চায়েত ছিল না। তবে একটি পঞ্চায়েত সমিতির আসন ছিল। এ বার তা বেড়ে পাঁচটি হয়েছে। ওই কেন্দ্রের জেলা পরিষদ আসনটি এ বারও বামেরা পেয়েছেন। অন্য দিকে লাগোয়া রাজগঞ্জ বিধানসভাতে ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের একক ভাবে ছিল একটি আসন। এ বার হয়েছে তিনটি। দু’টি জেলা পরিষদ আসনের একটি তৃণমূল পেলেও অন্যটি বামেদের হাতেই রয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের বাড়ি যেখানে, সেই পাতিলাভাসায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রার্থী হেরেছেন।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
কেন এলাকার ভোটের ফল নিয়ে অসন্তোষ তৃণমূল-অন্দরে? ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি দিয়ে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির বিকল্প দ্বিমুখী রাস্তা, এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় গড়া, রাজগঞ্জে একটি ইংরেজি মাধ্যম কলেজকে ‘সেন্টার ফর এক্সেলেন্স’ হিসেবে তৈরির চেষ্টা, ও ফি বছর উত্তরবঙ্গ উৎসব আয়োজন-সহ নানা কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে রয়েছে গৌতমবাবুর নাম। তার পরেও তাঁর এলাকাতেই প্রত্যাশিত ফল না হওয়ায় চটেছে দলের একটা অংশ।
তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের দুর্নীতিগ্রস্ত একাংশের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছেন গৌতমবাবু। কিন্তু দুর্নীতিগ্রস্ত আর একটি অংশ তাঁর সামনেই ছড়ি ঘোরানোর সুযোগ পাচ্ছে, এই অভিযোগে ক্ষোভ রয়েছে দলের অন্দরে।
পক্ষান্তরে খগেশ্বরবাবুর বিরুদ্ধে উদ্ধত আচরণের একাধিক অভিযোগ পৌঁছেছে তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির কাছে। সেই কমিটির চেয়ারম্যান আবার গৌতমবাবু। তিনি অবশ্য বলেছেন, “অভিযোগ এলেই তো হল না। খতিয়ে দেখার সময় দিতে হবে। আর ফল খারাপের পিছনে সাংগঠনিক ত্রুটিও দেখতে হবে।” খগেশ্বরবাবুর অবশ্য দাবি, “দলের কেউ নয়, সিপিএম আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে।”
প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “বাম-আমলে শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকায় উন্নয়ন করা হলেও হাতেগোনা কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, দুর্নীতির অভিযোগের কারণে অনেক মানুষ দূরে সরে যান। ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি ও রাজগঞ্জ এলাকার মানুষ যে তৃণমূলের নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে ওঠা ঔদ্ধত্য, দাদাগিরি, দুর্নীতির অভিযোগের দিকেও নজর রাখছেন, সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন।”
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতমবাবুর পাল্টা জবাব, “আমাদের দলে উদ্ধত, দুর্নীতিগ্রস্ত, দুর্বিনীতদের জায়গা নেই। অন্যায় করলে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের নেতাদেরও জেলে পাঠাতে দ্বিধা করেন না। বাম-আমলে যা স্বপ্নেও ভাবা যায়নি। যাঁরা এখন নানা কথা বলছেন, তাঁরা আগে আয়নার দিকে তাকালেই ভাল করবেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.