|
|
|
|
বিরোধীশূন্য জঙ্গলমহল, স্বস্তিতে গোয়েন্দারা
সুরবেক বিশ্বাস • কলকাতা |
এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে জঙ্গলমহল কার্যত বিরোধীশূন্য হওয়ায় স্বস্তিতে পুলিশ এবং গোয়েন্দাকর্তারা!
এমন নয় যে, পুলিশ ও গোয়েন্দা অফিসারদের সকলে তৃণমূলের পক্ষে ছিলেন এবং বিরোধীদের পরাজয় চেয়েছিলেন। আসলে জঙ্গলমহলে এ বারের পঞ্চায়েতের ফল মাওবাদী হামলা বা তাদের জোরদার কার্যকলাপের আশঙ্কাকে আপাতত দূরে সরিয়ে রাখল বলে মনে করছেন রাজ্যের পুলিশ ও গোয়েন্দা অফিসারদের অধিকাংশ। তাঁদের ব্যাখ্যা, সাধারণত বিরোধীদের সঙ্গী করে মাওবাদীরা কোনও তল্লাটে ঢুকে প্রভাব বিস্তার করে। এ বার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জঙ্গলমহলে তৃণমূল যতটা নিরঙ্কুশ ভাবে জিতেছে, তাতে এই মুহূর্তে সেখানে তেমন শক্তিধর বিরোধী নেই। ফলে, মাওবাদীরা হাত বাড়ালেও ‘বন্ধু’ পাবে না বলেই মত তাঁদের।
প্রথমে ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেস নেতাদের উপরে হামলা, বিহারে ট্রেনে হামলা এবং সব শেষে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার গা ঘেঁষা ঝাড়খণ্ডের দুমকায় পাকুড় জেলার এসপি-সহ পুলিশকর্মীদের নিহত হওয়ার ঘটনার পরে এ রাজ্যের গোয়েন্দাদের আশঙ্কা ছিল, জঙ্গলমহলে যে কোনও দিন মাওবাদীরা বড় হামলা চালাবে। একটি গোয়েন্দা-রিপোর্টে বলা হয়, মাওবাদীরা পঞ্চায়েত ভোট পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। তারা দেখতে চাইছে জঙ্গলমহলের পুরনো রাজনৈতিক শক্তি ও তাদের ‘পুরনো মিত্র’ ঝাড়খণ্ডীরা কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারে। জঙ্গলমহলের কয়েকটি ‘পকেটে’ মাওবাদীরা ঝাড়খণ্ড থেকে এ দিকে এসে ঝাড়খণ্ডীদের ভোট দিতে বলে প্রচারও করেছিল বলে গোয়েন্দাদের দাবি। কিন্তু ঝাড়খণ্ডীরা সিজুয়া, জামবনি, বিনপুরের মতো নিজেদের পুরনো ঘাঁটিতেও পর্যুদস্ত।
রাজ্য পুলিশের এডিজি পদমর্যাদার এক অফিসার বলেন, “পঞ্চায়েতে জঙ্গলমহলে যা ফল, তাতে মাওবাদী হামলার আশঙ্কা আপাতত নেই। মাওবাদীদের সাহায্য করতে পারে, এমন বিরোধী শক্তি সেখানে নেই।” রাজ্য গোয়েন্দা শাখার (আইবি) এক কর্তার বক্তব্য, “গোয়েন্দা-তথ্য যাতে নিখুঁত হয়, সে জন্য শাসক ও বিরোধী দু’পক্ষের কাছ থেকেই খবর সংগ্রহ করা উচিত। জঙ্গলমহলে বিরোধী সে অর্থে না থাকলেও মাওবাদীদের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন মানুষ কিন্তু এখনও জঙ্গলমহলে আছেন।” এডিজি পদমর্যাদার আর এক অফিসার বলেন, “আগামী কয়েক মাস গণ্ডগোলের আশঙ্কা কম। কিন্তু পঞ্চায়েতে যদি দুর্নীতি শুরু হয়, তা হলে অসন্তোষ, সেখান থেকে জনরোষ এবং শেষমেশ সেই জায়গা দিয়েই ঢোকার সুযোগ নিতে পারে মাওবাদীরা।” |
|
|
|
|
|