ভোটের গণনার দিনই বেশ কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ ও বসিরহাট মহকুমায়। সোমবার রাতেই এই সংঘর্ষগুলি হয়েছে।
বনগাঁর গোপালনগরের হিংলিতে সোমবার রাতে একটি ক্লাবে চড়াও হয়ে তৃণমূলের লোকেরা ভাঙচুর চালিয়েছে বলে সিপিএমের অভিযোগ। কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। হাবরা থানার বেতপুলেও তৃণমূল কর্মীরা একটি ক্লাবে ভাঙচুর করে বলে দাবি সিপিএমের। জেলা পরিষদের সিপিএম প্রার্থী হাবরার স্বপ্না ঘোষের অভিযোগ, হাবরা শ্রীচৈতন্য কলেজে গণনার সময় তাকে জোর করে তৃণমূলের লোকেরা বের করে দেয়। ফের গণনার দাবি করেছেন তিনি। গোপালনগরের চালকিতে সিপিএম সমর্থকদের বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। হাবরার মারাকপুরে এক সিপিএম সমর্থকের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
সোমবার বিকেলে বনগাঁর বাগদা ব্লকের মামাভাগিনা পাড়ুইপাড়াতে সিপিএম সমর্থক মহিলাদের কটূক্তির অভিযোগ ওঠে তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। দু’পক্ষের মধ্যে মারামারিও হয়। দু’পক্ষেরই চার জন জখম হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। বনগাঁ ব্লকের ঘাটবাওর গ্রাম পঞ্চায়েতে ঘিড়া গ্রামে আনিসুর মণ্ডল এবং মঞ্জুয়াড়া ধাবক নামে দুই তৃণমূল কর্মীকে সিপিএমের লোকেরা মারধর করে বলে অভিযোগ। তাঁরা বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএম। অন্য দিকে, গাইঘাটার ট্যাংরা গ্রামে সিপিএমের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী তৃপ্তি অধিকারীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
ভোটের ফল প্রকাশের পরে স্বরূপনগরের বালতি, নিত্যানন্দ কাটি, গোয়ালবাথান, বিথারি ও হাকিমপুরে তৃণমূল সমর্থক ও সদস্যদের বাড়ি বাড়ি চড়াও হয়ে সিপিএম মারধর ও ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগরে তৃণমূলের কাউন্টিং এজেন্ট হওয়ার ‘অপরাধে’ এক যুবক ও তাঁর বাবাকে সিপিএমের লোক জন মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই যুবকের বাবার কান ছিঁড়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের। সোমবার সন্ধ্যায় সন্দেশখালি-১ ব্লকের সেহেরা রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়তের প্রাক্তন বিজেপি উপপ্রধানের বাড়ির সামনে বোমা ফাটানো হয় বলে অভিযোগ। এর জেরে এলাকায় গোলমাল বাধে। এছাড়া ন্যাজাট হাটখোলায় সিপিএম এবং তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে বচসাকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। হাসনাবাদের আবাদ খড়মপুর গ্রামে সিপিএম সমর্থকেরা স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী আমিনা বেগমের বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়এবং তাঁর কিশোরী কন্যার শ্লীলতাহানিরও চেষ্টা করা হয় বলে দাবি তৃণমূলের। আমিনা বেগমকে টাকি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। প্রতি ক্ষেত্রেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএম।
দেগঙ্গার আমুলিয়া পঞ্চায়েতের মুরারীডাঙা গ্রামে সিপিএম এবং কংগ্রেসের মধ্যে সংঘর্ষে ৮ জন আহত হয়েছেন বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তাঁদের দু’জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বারাসত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাদুড়িয়ার তেঘড়িয়া গ্রামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে পুলিশ দু’বালতি বোমা এবং বোমা তৈরির মশলা উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এলাকায় কড়া নিয়ন্ত্রণ রাখা হচ্ছে।”
|