চোখের সামনে ঠিক যেন কোনও হিন্দি ছবির দৃশ্যপট। পুলিশের ছদ্মবেশে উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের ডেরা ইসমাইল খানের একটি জেলে সোমবার গভীর রাতে হাজির হল এক দল তালিবান জঙ্গি। তার পরই বোমা মেরে জেলের দেওয়াল উড়িয়ে এবং গ্রেনেড, মেশিনগান নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ চালিয়ে ২৫৩ বন্দিকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেল তারা। সংঘর্ষে ৬ পুলিশ-সহ মোট বারো জনের মৃত্যু হয়েছে।
জেলের মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সোমবার গভীর রাতে ১০০ জনের একটি জঙ্গি দল অতর্কিতে পাকিস্তানের ওই জেলে হামলা চালায়। মুহুর্মুহু বোমা ছুড়ে জেলের দেওয়াল ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়ে তারা। উড়িয়ে দেয় বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মারও। সঙ্গে ছিল মেশিনগান ও গ্রেনেড। জেলের দখল নেওয়ার পরই মাইকে বন্দিদের নাম ঘোষণা করতে শুরু করে। মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত পুলিশ ও জঙ্গি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ চলে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় সেনাও। কিন্তু তত ক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে।
হামলা চলাকালীন জেলের ভিতরেই ছিলেন নিরাপত্তা রক্ষী খালিদ আব্বাস। পরে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “রাতের অন্ধকারে প্রথমে বুঝতেই পারিনি ঠিক কী হচ্ছে। রোজকার মতোই সব চলছিল। হঠাৎ শুনলাম বোমার আওয়াজ। তার পরই দেখি হামলাকারী দলের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছে।”
ডেপুটি কমিশনার অমর খট্টক জানিয়েছেন, ঘটনায় ছ’জন পুলিশকর্মী-সহ বারো জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে দু’জন জঙ্গি রয়েছে। তিনি আরও জানান, ওই জেলে মোট পাঁচ হাজার বন্দি ছিল। তাদের মধ্যে ২৫৩ জন জঙ্গিই ছিল কুখ্যাত তালিবান জঙ্গি। গোটা ঘটনার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান।
অন্য দিকে পরে তালিবানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রায় ১০০ জন জঙ্গির একটি দল এবং সাত জন আত্মঘাতী জঙ্গি পাঠানো হয়েছিল ওই ২৫৩ জন বন্দিকে জেল থেকে বের করে আনার জন্য। তার মধ্যে ছ’জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছিল পাক আদালত। পরে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ওই পাক জেল পরিদর্শনে যান। |