ভোট কেটেছে হাত, ঘাসফুল ছাঁটল কাস্তে
বাড়ি-বাড়ি ভোটার স্লিপ পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারেনি সিপিএম। অথচ সেখানেই সব হিসেব উল্টে গেল।
জেলা জুড়ে যখন ‘দে গরুর গা ধুইয়ে’ ঢঙে জিতছে তৃণমূল, কালনার একাধিক পঞ্চায়েত সিপিএম শুধু দখলে রাখল তা-ই নয়, কয়েকটি ছিনিয়েও নিল। সৌজন্যে, কংগ্রেস-তৃণমূল ভোট কাটাকাটি এবং বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে তৃণমূলের গোষ্ঠী-কোন্দলের জেরে সাংগঠনিক দুর্বলতা।
রাজ্যে পালাবদলের পরে তৃণমূল যে বহু জায়গাতেই বামফ্রন্টের হাত থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের আসন ছিনিয়ে নেবে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু তৃণমূলের ভোট কংগ্রেস কতটা কাটবে, তা নিয়ে নিশ্চিত ছিলেন না কেউই। দক্ষিণবঙ্গে বেশির ভাগ জায়গায় কংগ্রেস সাইনবোর্ড হয়ে গেলেও, ভোট কেটে তৃণমূলের নাক কাটার ক্ষমতা যে তাদের পুরোপুরি যায়নি তার প্রমাণ কালনা।
জ্বলজ্বল করছে ধাত্রীগ্রামে সিপিএমের দলীয় কার্যালয়। —নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘদিন ধরেই কালনা-১ ব্লকের নান্দাই পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় ছিল তৃণমূল ও কংগ্রেস জোট। এ বার জোট হয়নি। ১৬টি গ্রামসভার মধ্যে ১০টির দখল নিয়ে পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় এসেছে সিপিএম। একই ছবি কৃষ্ণদেবপুর পঞ্চায়েতেও। এই পঞ্চায়েতে আগে ক্ষমতায় ছিল তৃণমূল-বিজেপি জোট। এ বার জোট নেই। ১৪ টি গ্রামসভার মধ্যে সিপিএম পেয়েছে ৯টি। মন্তেশ্বর ব্লকের বামুনাড়া পঞ্চায়েতেও ১২টি আসনের মধ্যে দু’দলই পেয়েছে ৬টি করে আসন। ওই পঞ্চায়েতটি আগে ছিল তৃণমূলের দখলে। আবার পূর্বস্থলী-২ ব্লকের পাটুলি ও মেড়তলা পঞ্চায়েত এ বার ছিনিয়ে দিয়েছে সিপিএম। পাটুলির ১১টি আসনের মধ্যে ৭টি ও মেড়তলার ৮টি আসনের মধ্যে ৬টিই পেয়েছে সিপিএম। মন্তেশ্বর ব্লকের জামনা পঞ্চায়েতও তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে সিপিএম।
নিজেদের দখলে থাকা পঞ্চায়েতও ধরে রেখেছে বামেরা। কালনা-২ ব্লকের বাদলা ও অকালপৌষ পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় ছিল সিপিএম। এ বার বাদলা পঞ্চায়েতে সিপিএম ও তৃণমূল উভয় দলই ৮টি করে আসন পেয়েছে। টসে নির্ধারিত হবে ভাগ্য। ১৫ আসনের অকালপৌষ পঞ্চায়েতেও ৬টি করে আসন পেয়েছে সিপিএম ও তৃণমূল। বাকি আসনগুলি পেয়েছে এআইইউডিএফ এবং সিপিআই(এমএল)। পূর্বস্থলী-২ ব্লকের কালেখাঁতলা-২ পঞ্চায়েতে ১৪টি আসনের মধ্যে সব ক’টিই পেয়েছে সিপিএম। মন্তেশ্বর ব্লকে দেনুড় পঞ্চায়েতটি তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে সিপিএম।
কেন এই উলটপুরাণ?
কংগ্রেসের ভোট কাটা তো আছেই, এলাকায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথাও। তার প্রথম প্রমাণ রয়েছে কালনা মহকুমায় তৃণমূলের কার্যালয়ের সংখ্যাতেই। অনেকেই পরিহাস করে বলেন, ‘কালনায় তৃণমূলের যত নেতা, তত পার্টি অফিস!’ সেই সঙ্গে স্থানীয় স্তরে যোগ্য নেতার অভাব রয়েছে বলেও অভিযোগ করছেন তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীরা। সিপিএমের কালনা জোনাল কমিটির সদস্য স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ভোটের আগে এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল। তবুও দলের এই ফলে আমরা খুশি।” এই ফল থেকে শিক্ষা নিয়ে অবশ্য নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলছেন তৃণমূল নেতারা।
কাজের কাজ কতটা হল, তার পরীক্ষা হবে ফের আসন্ন লোকসভা ভোটেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.