রবিবার কাজে ফিরলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর থানার পুলিশ অফিসারেরা। রবিবারও জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের নিগ্রহের অভিযোগ মানতেই চাননি। এ দিন পুলিশ সুপার বলেন, “হরিরামপুরে কিছুই হয়নি।” এ দিন নিগৃহীত পুলিশ অফিসার শিবপ্রসাদ বসু থানায় গিয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন। তবে থানার পরিবেশ ছিল থমথমে। এ দিন আইসি দেবাশিস বসু বলেন, “ভোট গণনার প্রস্তুতি চলছে।” ভোটের দিন ‘কড়া ব্যবস্থা’ নেওয়ায় গত শুক্রবার রাতে হরিরামপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তৃণমূল পার্টি অফিসের সামনে গাড়ি আটকে সাব ইন্সপেক্টার শিবপ্রসাদবাবুকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক শুভাশিস পালের নামে। শুভাশিসবাবু আইসি’র উদ্দেশ্যে গালিগালাজ করেন বলেও অভিযোগ ওঠে। এর পর থানার পুলিশ কর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ক্ষোভ এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে অপমানে অধিকাংশ পুলিশ কর্মী ডিউটি থেকে গুটিয়ে নেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বুনিয়াদপুর থেকে ছুটে গিয়ে দু’দিন ধরে এসডিপিও স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে হরিরামপুর থানায় ঘাঁটি গেড়ে থাকতে হয়। অসুস্থ ও অপমানিত শিবপ্রসাদবাবু শনিবার দিনভর বাড়িতে কাটান। থানার আইসি-সহ কয়েকজন অফিসার ‘ব্যাজ’ খুলেই ডিউটি করে প্রতিবাদ জানান। তবে ঘটনার তিনদিন পরেও জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষ অপমানিত পুলিশ কর্মীদের পাশে না দাঁড়ানোয় নানা প্রশ্ন উঠছে পুলিশ মহলেই। জেলার কয়েকজন অফিসার জানান, জেলার পুলিশ কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় থানার কর্মীদের মনোবল তলানিতে ঠেকেছে। পুলিশের মালদহ-দিনাজপুর রেঞ্জের ডিআইজি শ্যামল ভট্টাচার্য বলেন, “জেলা পুলিশ সুপার উদ্যোগ না নিলে আমাদের পক্ষে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত কিছুই করার নেই।”
বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরেও হরিরামপুরের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ উঠেছে। জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক মানবেশ চৌধুরী এই দিন বলেছেন, “নিজের বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণের ঘটনাকে কর্তৃপক্ষ হজম করে ওই পুলিশ অফিসারেরা নজির তৈরি করলেন।” তবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “হরিরামপুরে শুভাশিস পাল পুলিশের গায়ে হাত দিয়েছেন বলে যা রটানো হচ্ছে, তা কি সিপিএম নেতারা দেখেছেন? সিপিএম পুলিশের মুখপাত্র না হলেই ভাল।” কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নীলাঞ্জন রায় এই দিন বলেছেন, “নিচুতলার কর্মীদের দাবিয়ে রেখে জেলা পুলিশের সর্বোচ্চ মহলের কর্তারা যা করছেন, তা কিন্তু বুমেরাং হয়ে ফিরে আসতে বাধ্য।” |