ঠিকাদারের বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে ধরে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে উত্তেজিত বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে ইসলামপুর থানার পণ্ডিতপোতা এলাকায়। পুলিশ জানায়, নিহতদের নাম মহম্মদ জাবাদুল (৩২) এবং মহম্মদ মুরাদ (৩০)। দুই জনই গোয়ালপোখরের বাসিন্দা। নিহতের পরিবারের তরফে ওই ঠিকাদার-সহ স্থানীয় কয়েক জন বাসিন্দার নামে খুনের অভিযোগ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁর বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে ও নিহত দুই জনের বিরুদ্ধে একাধিক ছিনতাই এবং ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। মৃত জাবাদুল ও মুরাদ বছর খানেক আগে জেলার কানকির এক হোটেল ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিল। ধৃত জাবাদুল জামিনে থাকলেও মুরাদ ফেরার ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। দু’জনেরই দিল্লিতে পোশাক কারখানা রয়েছে। ওই ঠিকাদার এলাকায় তৃণমূল সমথর্র্ক বলে পরিচিত।
শনিবার রাত ১১টায় পণ্ডিতপোতা এসাকার বাসিন্দা তথা ঠিকাদার মহম্মদ বাবলুর বাড়িতে সাত-আট জন হামলা চালায়। বাসিন্দারা চলে এলে অন্যরা পালাতে পারলেও জবাদুল ও মুরাদ পালাতে পারেননি। দু’জনকে প্রথমে লাঠি পেটা করার পরে ধারাল অস্ত্রে কোপানো হয় বলে অভিযোগ।
ইসলামপুরের এসডিপিও সুবিমল পাল বলেন, “লেনদেন সংক্রান্ত বিবাদ বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। মৃত দুই জন এবং এবং মহম্মদ বাবলুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধমুলক ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল চলছে।”
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, একাধিক চোরাই বাইক বিক্রির টাকা নিয়ে দুপক্ষের গোলমালের সূত্রপাত। মহম্মদ বাবলুর কাছে লক্ষাধিক টাকা পেত মৃতেরা। টাকা আদায় করতেই শনিবার রাতে সদলবল হামলা হয় বলে মনে করা হচ্ছে। তবে মহম্মদ বাবলু বিষয়টিকে রাজনৈতিক বলে দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, “আমি তৃণমূল সমর্থক। কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে। বাইকের বিষয়টি ভিত্তিহীন।” নিহত জাবাদুলের বাবা হাজি জামিরুদ্দিন বলেন, “আমার ছেলের সঙ্গে দিল্লিতে থাকতেই পরিচয় হয় বাবলুর। ছেলে বাড়িতে এসেছে শুনে বাবলুই ওঁদের ডেকে পাঠায়। ওকে বাড়িতে ডেকে মারধর করে।”
কংগ্রেস এবং তৃণমূল উভয় দলই ঘটনার পেছনে রাজনীতি নেই বলে দাবি করেছেন। এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরী এ দিন বলেছেন, “আমাদের এক সমর্থকের বাড়িতে এক দল দুষ্কৃতী হামলা চালায় বলে শুনেছি। রাজনৈতিক কারণ নেই।” কংগ্রেস নেতা কানাইয়ালাল অগ্রবাল বলেন, “ওই ঘটনায় রাজনীতি নেই। লেনদেন নিয়ে বিবাদ থাকতে পারে।” |