শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন প্রকল্পে ৫০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগে প্রাক্তন চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য এবং তৎকালীন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক গোদালা কিরণ কুমারের নিরাপত্তা কর্মী এবং আপ্তসহায়কদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করল পুলিশ। ইতিমধ্যেই ওই অভিযোগে এসজেডিএ একাধিক বাস্তুকার এবং বিভিন্ন ঠিকাদার সংস্থার কণর্ধার-সহ ৯ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। কিন্তু যাঁর আমলে ওই সমস্ত প্রকল্পের কাজ হয়েছে তৎকালীন চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ না করা বা তৎকালীন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা কেনও নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। এই পরিস্থিতিতে সে সময় তাঁদের নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা কর্মী এবং আপ্তসহায়কদের জিজ্ঞাসাবাদ করার বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন বলেন, “এসজেডিএ’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং তৎকালানী মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকের নিরাপত্তা কর্মী এবং আপ্তসহায়কদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত এখনই বলা সম্ভব নয়।” প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রবাবু অবশ্য নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে তদন্তের কাজে সমস্ত রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এমনকী পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইলেও তিনি সাহায্য করবেন বলে জানান। প্রাক্তন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক গোদালা কিরণ কুমার বর্তমানে মালদহের জেলাশাসক। তিনি জানিয়েছেন, এ সব নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না।
মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানে নিকাশি তৈরি এবং বাগডোগরা, মালবাজার এবং ময়নাগুড়ি শ্মশানে ৩ টি বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানোর কাজের ৫০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এসজেডিএ’র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক শরদ দ্বিবেদী প্রধাননগর থানায় এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট অভিযোগ জানান। তার পরও দোষীদের ধরতে গড়িমসি করা নিয়ে অভিযোগ ওঠে। এর পর একে একে এসজেডিএ বাস্তুকার মৃগাঙ্কমৌলি সরকার, সপ্তর্ষি পাল, প্রবীণ কুমারের মতো বাস্তুকতারদের গ্রেফতার করা হয়। ওই কাজগুলির সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদার সংস্থার ইউরেকা ট্রেডার্স ব্যুরোর কর্ণধার অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর চেলেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ধরা হয় তাদের সঙ্গে যুক্ত অপর একাধিক ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার শঙ্কর পাল, অজয় মৈত্র এবং তাপস বসুকে।
পাশাপাশি ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ার ‘পাস ওয়ার্ড’ ব্যবহার করে নথি জাল করে ঠিকাদার সংস্থাকে কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়ার বিষয়টি পুলিশে তদন্তে উঠে আসে। এসজেডি’র তরফে সে ব্যাপারেও পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়। ওই ‘পাস ওয়ার্ড’ এসজেডিএ’র তৎকালীন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকেরই একমাত্র জানার কথা। পুলিশের তদন্তকারী দল এক দফায় মালদহে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞসাবাদও করে বলে দাবি করেছে। তবে এখনও তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিরোধীরা সরব হন।
পুলিশের একটি সূত্রই জানিয়েছে, এসজেডিএ’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং সে সময় মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকের নিরাপত্তার দায়িত্বে পুলিশ কর্মীরাই ছিলেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আপ্তসহায়করা তাঁদের নিজেদের লোক ছিলেন। পুলিশ তাঁদের সঙ্গেও যোগাযোগ করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। |