শহরের বিভিন্ন জায়গায় বসানো ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বদলানোর অভিযোগ ওঠায় বুধবার সে ব্যাপারে খোঁজ নিলেন শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান গৌতম দেব। প্রসাসনিক সূত্রে খবর, তিনি এসজেডিএ’তে গিয়ে আধিকারিকদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চান। সব শুনে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন তিনি। গৌতমবাবু বলেন, “তদন্ত চলায় এ সব নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাই না। তবে এটুকু বলছি যথাযথ তদন্ত করে কোথায় কী করা হচ্ছে তা জনসমক্ষে জানানো হবে।”
এসজেডিএ’র একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বদলানোর অভিযোগের বিষয়টি পুলিশকে খতিয়ে দেখতে বলা হবে। তা ছাড়া যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের যে বিশেষজ্ঞ দল বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখছে তাদেরকেও বিষয়টি জানানো হবে। কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, যে ধরনের ক্যামেরা বসানোর কথা জানানো হয়েছিল তা না মেনে নিম্ন মানের ক্যামেরা বসানো হয়েছে। তাই কোনও রকম অনুমতি না নিয়েই গভীর রাতে সেগুলি ঠিকাদার সংস্থা বদলাচ্ছে। অভিযোগ ওঠায় ফের তাদের কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। নজরদারির জন্য পুলিশকেও জানানো হয়েছে। |
শহরের নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন জায়গায় ৫৫ টি অত্যাধুনিক ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় এসজেডিএ। প্রায় ৮ কোটি টাকা খরচ করে গত বছর পুজোর আগে ক্যামেরাগুলি বসানো হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যামেরা চালু-ও করা হয়। সেখানে এসজেডিএ’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান গোদালা কিরণ কুমার এবং পুলিশের এক কর্তাও উপস্থিত ছিলেন। ক্যামেরা বসানোর বরাত পাওয়া সংস্থা এম এস কোম্পানিসকে কাজের জন্য সিংহভাগ টাকাই দিয়ে দেওয়া হয়।
ত্রিফলা আলো, মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানে নিকাশি তৈরি, শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানো-সহ বিবিন্ন প্রকল্পের কাজ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তা তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর কাজের মান এবং সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদার সংস্থাকে বরাত দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান পদের দায়িত্ব নিয়ে গৌতমবাবু দফতরের এক রিপোর্টে দেখেন বেশির ভাগ টাকা মিটিয়ে দেওয়া হলেও ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। এর পরেই অন্যান্য প্রকল্পের কাজের সঙ্গে এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। বন্ধ রাখা হয় ওই সমস্ত প্রকল্পের কাজ। সে ব্যাপারে তদন্তের কাজ চলছে। এরই মধ্যে পুলিশের তরফে শহরের নিরাপত্তার স্বার্থে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা তাদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা জানানো হয়। এসজেডিএ কর্তৃপক্ষের দাবি, সেকারণেই ঠিকাদার সংস্থার কাছে চিঠি দিয়ে যে টাকা তাদের দেওয়া হয়েছে সেই মতো কাজ কী হয়েছে তা তাদের বুঝিয়ে দিতে বলা হয়। এর পরেই ঠিকাদার সংস্থার তরফে শহরের একাধিক জায়গায় বসানো ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা গভীর রাতে বদলানো হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। তদন্ত চলাকালীন কেন এ ভাবে ক্যামেরাগুলি বদলানো হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অন্য দুটি প্রকল্পের কাজে দুর্নীতির অভিযোগে ধৃত বাস্তুকার এবং ঠিকাদারদের আইনজীবীরাও।
|