ছবিটা বদলায়নি কায়রোর হাসপাতালের। মেঝেতে শোয়ানো সাদা কাপড়ে মোড়া সারি সারি মৃতদেহ। গদি দখলের লড়াইয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে শ’য়ে শ’য়ে প্রাণ।
রবিবার সকালে কায়রোয় একটি মসজিদের সামনে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের জন্য জড়ো হয়েছিলেন কয়েক হাজার মুরসি-সমর্থক। গত দু’দিনে মিশরীয় সেনা এবং মুরসি-বিরোধীদের গুলির মুখে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ২০০ জন মুরসি-সমর্থক। আহত অন্তত পাঁচ হাজার। তারই প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ-জমায়েত ছিল। সেখানেই ফের গুলি চালাল সেনা। মিশরে প্রথম গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুরসির সমর্থক দল মুসলিম ব্রাদারহুডের দাবি, নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১২ জন। আটকও হয়েছেন জনা কুড়ি। |
প্রতিবাদী মুরসি সমর্থক। রবিবার কায়রোয়। —রয়টার্স। |
এত রক্তপাতের পরেও গণতন্ত্রের দাবি থেকে এক চুলও পিছু হটতে রাজি নয় মুসলিম ব্রাদারহুড। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতেই বছর ২৪-এর আহমেদ আলি বললেন, “একটা একটা করে সব ক’টা প্রাণ চলে যাওয়ার আগে পর্যন্ত আমরা এখান থেকে নড়ব না।” অবশ্য মিশর সরকার সূত্রের খবর, রবিবার সেনা গুলিতে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে বা যাঁরা আটক হয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকেই সশস্ত্র জঙ্গি। নিহতের সংখ্যা নিয়েও স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মুখপাত্র খালেদ এল-খাতিব জানান, শুক্র ও শনিবার মিলিয়ে ৮০ জনের বেশি মানুষ
মারা যাননি। আহতের সংখ্যাও মেরেকেটে আটশো।
মিশরের এই অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত মার্কিন সরকারও। এ দিন মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি কথা বলেন মিশর সেনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। “মিশরে এখন সঙ্কটজনক অবস্থা তৈরি হয়েছে। সংঘাতের পথ ছেড়ে সমাধানের পথ খোঁজার জন্য সমস্ত রাজনৈতিক দলকেই হিংসা ত্যাগ করতে হবে।” বলেন তিনি।
চলতি মাসের ৩ তারিখে গদিচ্যুত হন ৬১ বছরের মুরসি। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ব্রাদারহুডের কয়েক জন সদস্যের সঙ্গে সেনাদের হাতে আটক রয়েছেন তিনি। |