নির্বাচন পর্ব থিতিয়ে যেতেই উত্তরের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষিপ্ত গণ্ডগোল শুরু হয়েছিল শুক্রবার সকাল থেকেই। শনিবার তারই জের রইল কখনও আলিপুরদুয়ার কখনও বা দক্ষিণ দিনাজপুরে। এমনকী উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে একটি রাজনৈতিক দলের পোস্টারে এক শিশুর প্রাকৃতিক কাজ সারাকে কেন্দ্র করেও লাগল রাজনৈতিক রং। সিপিএম-কংগ্রেসের সেই সংঘর্ষে আহত হলেন বেশ কয়েকজন।
তবে এর মধ্যে জলপাইগুড়ির আলিপুরদুয়ারের ঘটনাটি বড়। শুক্রবার রাতে সেখানে একাধিক মহিলার শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। বামেদের দাবি, ওই মহিলারা সকলেই তাঁদের সমর্থক। এর জেরে তৃণমূলের পার্টি অফিসে ভাঙচুরের পাল্টা অভিযোগ উঠেছে।
আলিপুরদুয়ারের বিবেকানন্দ পঞ্চায়েতে শুক্রবার রাতে স্থানীয় এক সিপিএম বাম সমর্থককে মাদর করছিলেন শাসক দলের সমর্থকেরা। গ্রামেরই এক মহিলা তাতে বাধা দেন। এগিয়ে আসেন পাড়ার অন্য মহিলারাও। এই সময়ে তাঁদের শাড়ি ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই মহিলাদের দাবি, তাঁরা কোনও দলের সমর্থক নন। এলাকার এক যুবককে মারধর করা হচ্ছে দেখে প্রতিবাদ করেছিলেন তাঁরা। সেই ‘অপরাধেই’ তৃণমূলের লোকজন তাঁদের উপরে চড়াও হয়ে ‘শ্লীলতাহানি’ করে বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, চেচাখাতা এলাকাতও তাণ্ডব চালায় তৃণমূল সমর্থকেরা। জখম হয়েছেন ৬ জন। ওই ঘটনায় দুজনকে আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুনীল ঘোষ বলেন, “ভোটের আগে থেকেই এলাকায় তৃণমূল ভয় দেখাচ্ছিল। ভোট মিটতেই এ বার সন্ত্রাস শুরু করেছে।” স্থানীয় তৃণমূল নেতা তপেন কর অবশ্য বলেন, “পুরো ঘটনাটাই মিথ্যে।”
অন্যদিকে, শামুকতলা থানার ডাঙ্গি এলাকায় শুক্রবার রাতে তৃণমূল কংগ্রেসের একটি পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধে। আলিপুদূয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, “অভিযোগ জমা পড়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
শনিবার দুপুরে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থানার মাটিকুন্ডায় এক সিপিএম সমর্থকের বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, কংগ্রেসের একটি পোস্টারে এলাকার একটি শিশু প্রাকৃতিক কাজ সারছিল। তা দেখেই ক্ষেপে ওঠেন এলাকার কংগ্রেস সমর্থকেরা। বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে। পরিণতিতে বাধে সংঘর্ষ। পরে পুলিশ লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লাঠির আঘাতে সিপিএমের দুই সমর্থক জখম হয়েছেন অভিযোগ।
অন্যদিকে, গোয়ালপোখর থানার ধরমপুর এলাকাতে ফরওয়ার্ড ব্লক ও কংগ্রেসের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন চার জন। পুলিশকে সেখানেও পরিস্থিতি সামাল দিতে মৃদু লাঠি চালাতে হয়। |