র্যান্টি মার্টিন্স নয়, মোহনবাগানের চোখ ক্যামেরুনের জাতীয় দলের এক স্ট্রাইকারের দিকে। পল এমিলে বিয়াগা এখন অবশ্য খেলেন মিশরের প্রিমিয়ার লিগ ক্লাব হারাস এল হুডুড ক্লাবে। সব ঠিকঠাক চললে ওডাফার সঙ্গী হিসাবে পলকে দেখা যাবে করিম বেঞ্চারিফার টিমে।
ওডাফার শহরে আসার কথা ৭ অগস্ট। তার দিন চারেক আগেই ট্রায়াল দিতে শহরে এসে পড়ার কথা পলের। তবে শুধু ক্যামেরুন নয়, আসছেন আইভরি কোস্টের আর এক স্ট্রাইকার আবু কোনে-ও। আপাতত এই দু’জনকে দেখা হবে ট্রায়ালে। পছন্দ হলে তবেই দলে নেওয়া হবে।
আবুর চেয়েও পলের জীবনপঞ্জী ও সিডি বেশি পছন্দ হয়েছে কর্তাদের। কারণ, ওডাফা ওকোলির মতোই ক্লাব পর্যায়ে ম্যাচ প্রতি গোলের গড় ক্যামেরুন স্ট্রাইকারের। ছয় গজ বক্সের আশে পাশে ভয়ঙ্কর। তুরস্ক ছাড়াও আলিজিরিয়ার ক্লাবে খেলেছেন ছাব্বিশ বছরের এই সুঠাম চেহারার ফুটবলারটি। কলকাতায় খেলে যাওয়া রজার মিল্লার দেশের ফুটবলার পল খেলেছেন ক্যামেরুনের জাতীয় যুব ও সিনিয়ার দলে।
করিম বেঞ্চারিফার বাছা দুই ফুটবলারকেই ট্রায়ালে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন কর্তারা। এ বার তাঁরা কোনও ঝুঁকি নিতে চান না। ইস্টবেঙ্গল থেকে চেনা স্ট্রাইকার টোলগে ওজবেকে দু’কোটি টাকা দিয়ে এনেও গতবার ডুবেছিল মোহনবাগান। এ বার তাই গোয়া-পুণের মডেল অনুসরণ করে নতুন কোনও স্ট্রাইকার আনার দিকে ঝুঁকেছেন সবুজ-মেরুন কর্তারা। এমন দেশের ফুটবলার তাঁরা আনতে চান, যাদের ফিফা র্যাঙ্কিং ভারতের চেয়ে অনেক উপরে। আইভরি কোস্টের র্যাঙ্কিং এখন ১৩। ক্যামেরুনের ৭১। প্রভাবশালী এক কর্তা বললেন, “চার বিদেশি নিয়ে আবাসিক শিবিরে যাব বলেই শিবির পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই শুধু কোচ নয়, কর্তা, সদস্য-সমর্থক সবাই দেখুক নতুন ফুটবলারটিকে। ক্যমেরুনের স্ট্রাইকারই আমাদের প্রথম পছন্দ। র্যান্টির চেয়েও ভাল গোলগেটার মনে হচ্ছে পলকে। তা সত্ত্বেও ট্রায়ালে দেখা হবে তাকে।”
বিদেশি নির্বাচনের তৎপরতা দেখানোর পাশাপাশি ক্লাবের গ্যালারি এবং মাঠ সংস্কার নিয়েও দেরিতে হলেও নড়েচড়ে বসেছেন সবুজ-মেরুন কর্তারা। এ দিন বিকেলে ক্লাবে সচিব অঞ্জন মিত্রের সঙ্গে বৈঠকে বসেন সহসচিব সৃঞ্জয় বসু এবং অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত। প্রেসিডেন্ট টুটু বসু তাঁদের প্রতিশ্রুতি দেন, তাঁর বাবার নামে তৈরি গ্যালারির জন্য তিরিশ লাখ টাকা সোমবারের মধ্যে দিয়ে দেবেন। মোহনবাগান দিবসের উৎসবের প্রস্তুতির মধ্যেই খোলা হল গ্যালারি নির্মাণের জন্য টেন্ডার। ক্লাবের পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য ইউ বি-র কাছ থেকে প্রাপ্য টাকাও মঙ্গলবারের মধ্যে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র বললেন, “টাকার জন্য কাজ আটকে গিয়েছিল। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেপ্টেম্বরের মধ্যে গ্যালারির কাজ শেষ করব বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চেষ্টা করছি যদি কিছু কলকাতা লিগের ম্যাচ এ বার করা যায়। মঙ্গলবার থেকেই কাজ শুরু হবে গ্যালারির।”
ইস্টবেঙ্গলের মতোই মোহনবাগান গ্যালারির নীচেও তৈরি হবে আন্তর্জাতিক মানের নতুন ড্রেসিংরুম, জিমন্যাসিয়াম। সঙ্গে রেফারিদের ঘর, ডক্টরস রুম, কর্পোরেট অফিস।
বৃষ্টির মধ্যেও মোহনবাগান দিবসের উৎসবের জন্য তৈরি করা হচ্ছে সুদৃশ্য মঞ্চ। মরণোত্তর বাগান-রত্ন এ বার দেওয়া হচ্ছে প্রয়াত বলাই দাস চট্টোপাধ্যায়কে। তবে অনুষ্ঠানের বড় চমক পুণেতে এশীয় অ্যাথলেটিক্স মিটে রুপোজয়ী আশা রায়কে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ হিসাবে স্বীকৃতি। শতবর্ষপ্রাচীন ক্লাবের পক্ষ থেকে সিঙ্গুরের মেয়েটির হাতে তুলে দেওয়া হবে শৈলেন মান্না স্মৃতি পুরস্কার ও পঞ্চাশ হাজার টাকা। পুরস্কৃত হবেন মোহনবাগানের দুই ঘরের ছেলে সুব্রত ভট্টাচার্য ও প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য ক্রিকেটার সামি আহমেদকে সংবর্ধিত করা হবে ফুটবলার ডেনসন দেবদাস এবং ক্রিকেটার শুভময় দাসের সঙ্গে। তিন জনই পাচ্ছেন পঁচিশ হাজার টাকা ও ট্রফি। উৎসব শুরু দুপুর দু’টোয়। |