নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সিআইডি চার্জশিট দিয়েছিল আগেই। তাদের হাত থেকে তদন্তের দায়িত্ব নেওয়ার পাঁচ মাসের মাথায় গুড়াপের হোমে তরুণীর অপমৃত্যুর মামলায় চার্জশিট জমা দিল সিবিআই। শুক্রবার মোট পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ওই চার্জশিট পেশ করা হয়েছে চুঁচুড়ার মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে। চার্জশিট জমা দিলেও গুড়াপ কাণ্ডে তারা আরও তদন্ত চালিয়ে যেতে চায় বলে আদালতে জানানয় সিবিআই।
হুগলির গুড়াপে ‘দুলাল স্মৃতি সংসদ’ নামে একটি হোমের পাঁচিলের পাশে মাটি খুঁড়ে সেখানকারই মানসিক ভারসাম্যহীন আবাসিক তরুণী গুড়িয়ার পচাগলা দেহ উদ্ধার হয় ২০১২ সালের ১১ জুলাই। এই ঘটনা নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য। রাজ্যের মহিলা হোমগুলি কী ভাবে চলছে, সেই প্রশ্ন উঠে যায়। গুড়িয়ার মৃত্যু নিয়ে পুলিশি তদন্ত চলাকালীন ওই হোমের আরও এক তরুণীর দেহ মেলে। তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
তদন্তে নামে সিআইডি। প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে উঠে আসে ওই হোমের সম্পাদক উদয়চাঁদ কুুমারের নাম। অভিযোগ, উদয়চাঁদ এবং তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গেরা নিয়মিতই হোমের আবাসিকদের ধর্ষণ করতেন। বহু আবাসিক তরুণীকে ধর্ষণের পরে খুন করে নদীর চরে পুঁতে ফেলা হয়েছে। খুন-ধর্ষণ ছাড়াও সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় উদয়চাঁদ এবং তাঁর কিছু সঙ্গীকে। পরে জামিন পান উদয়-সহ অনেকেই। এফআইআরে প্রথমে ছ’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল। উদয়চাঁদ ছাড়াও তাতে নাম ছিল শ্যামল ঘোষ, সন্দীপ দাস এবং হোমের তিন গাড়িচালক সোমনাথ রায়, বিশ্বনাথ মুর্মু ও রঞ্জিত মান্ডির। সিআইডি ওই বছরের অক্টোবরে চার্জশিট জমা দেয়।
আদালত সিআইডি-র তদন্তে সন্তুষ্ট না-হয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয়। পরে তদন্তের ভার দেওয়া হয় সিবিআই-কে। গত ১ মার্চ সিবিআই গুড়াপ কাণ্ডের তদন্ত শুরু করে। তার পরে বর্ধমানের জামালপুরে দামোদরের চর থেকে এক আবাসিকের দেহ উদ্ধার করে সিবিআই। উদয়চাঁদ এবং অন্যদের ফেরা গ্রেফতার করা হয়। সিবিআই-এর চার্জশিটে উদয়চাঁদ-সহ অভিযুক্ত ছ’জনের মধ্যে চার জনের নাম রয়েছে। বাদ গিয়েছে সন্দীপ দাস ও রঞ্জিত মান্ডির নাম। যোগ হয়েছে ওই হোমের তৎকালীন সুপার বুলবুল চৌধুরীর নাম।
|