প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যের কার্যকাল কবে শেষ হচ্ছে, তা নিয়ে চাপান-উতোর চলছেই। তারই মধ্যে আচার্য-রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি ব্যাখ্যা করলেন শিক্ষামন্ত্রী।
শুক্রবার রাজভবনে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের সঙ্গে দেখা করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, উচ্চশিক্ষা সচিব বিবেক কুমার এবং রাজ্য উচ্চশিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সুগত মারজিৎ। উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্সির জন্য নতুন অস্থায়ী উপাচার্যের খোঁজ শুরু হল কেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উল্লেখ করে তা বোঝানো হয়েছে আচার্যকে।
প্রেসিডেন্সি সূত্রের খবর, বর্তমান উপাচার্য মালবিকা সরকারের কার্যকাল শেষ হওয়ার কথা ৩০ সেপ্টেম্বর। কিন্তু তার আগে, ১৫ অগস্ট তাঁর ৬৫ বছর বয়স হয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ওই বয়সের পরে আর উপাচার্য-পদে থাকা যায় না। পরবর্তী উপাচার্যের খোঁজে তিন সদস্যের সার্চ কমিটি বা সন্ধানী কমিটি গড়েছে রাজ্য সরকার। |
উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, মালবিকাদেবীর মেয়াদ কবে শেষ হওয়ার কথা, আচার্য-রাজ্যপাল তা জানতে চেয়েছিলেন। কী বলা হল তাঁকে? এ দিন রাজভবনে আলোচনা সেরে বেরোনোর সময় বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ব্রাত্যবাবু। সুগতবাবু অবশ্য জানান, প্রেসিডেন্সির আইন নিয়ে আচার্য কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করে জানতে চেয়েছিলেন। তাঁর কাছে সেগুলি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, আচার্যকে উপাচার্যের বয়ঃসীমা সংক্রান্ত নিয়মের কথা বোঝানো হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্সিতে এখনও স্ট্যাটিউট বা বিধি তৈরি হয়নি বলে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা যাচ্ছে না। সেই জন্য ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের এক জন অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য।
মালবিকাদেবী বৃহস্পতিবারেই জানিয়েছিলেন, বয়সের বিষয়টি তাঁর নিয়োগপত্রে উল্লেখ করা হয়নি। তাঁর দাবি, অস্থায়ী উপাচার্যের ক্ষেত্রে বয়সের ওই ঊর্ধ্বসীমা প্রযোজ্য নয়। মালবিকাদেবীর পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রেসিডেন্সির শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকেই। তাঁদের দাবি, মালবিকাদেবীর কার্যকাল আরও বাড়ানো হোক। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রেসিডেন্সি এখন সবে গড়ে উঠছে। এই সময়ে মালবিকাদেবীর নেতৃত্বের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা। নিজেদের সই সংবলিত দাবিপত্র তাঁরা আচার্যের কাছে জমা দেবেন বলে জানান।
যদিও উচ্চশিক্ষা দফতরের অনেকে মনে করছেন, বয়সের সীমা স্থায়ী উপাচার্যের ক্ষেত্রে কার্যকর হলে অস্থায়ীর ক্ষেত্রে তা কার্যকর না-হওয়ায় কোনও কারণ নেই। মালবিকাদেবী অবশ্য শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
নতুন অস্থায়ী উপাচার্যের জন্য রাজ্যের গড়া সন্ধানী কমিটিতে আছেন রাজ্য উচ্চশিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সুগত মারজিৎ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস এবং আইএসআইয়ের শিক্ষক, অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার। উপাচার্য বাছাইয়ের জন্য তিন জনই বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের তালিকা তৈরি করবেন। সেখান থেকে তিন জনের নাম সুপারিশ করে পাঠানো হবে রাজ্য সরকারের কাছে। এ ব্যাপারে আলোচনার জন্য আজ, শনিবার সন্ধানী কমিটির তিন সদস্যের ফের বৈঠকে বসার কথা।
|