খালি হাতেই ঢাকা ফিরছেন দীপু মণি
বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে কার্যত খালি হাতেই কাল দেশে ফিরছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী দীপু মণি।
ঢাকা ভাল করেই জানে যে স্থলসীমান্ত চুক্তি ভারতীয় সংসদে পাশ করানোর প্রকৃত চাবিকাঠি রয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের হাতে। সেই অনুযায়ী আজ রাজ্যসভার প্রধান বিরোধী নেতা অরুণ জেটলির সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করলেন দীপু মণি। কিন্তু বরফ গলল না। দীপু মণির আবেদনে আজ ইতিবাচক সাড়া দেননি জেটলি। শুধু বলেছেন, দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে জানাবেন।
পাশাপাশি আজ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন দীপু মণি। ইফতার সেরেছেন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদের সঙ্গে। সামগ্রিক দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হলেও স্বাভাবিক ভাবেই মুখ্য বিষয় ছিল তিস্তা এবং স্থলসীমান্ত চুক্তি। কিন্তু তিস্তার জল গড়ায়নি, সীমান্ত নিয়েও জট ছাড়ার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি।
জেটলি-দীপু মণি বৈঠকের পর বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, যদিও এটি বিদেশনীতির বিষয় এবং তাঁরা বাংলাদেশ-বিরোধীও নন, তবুও সীমান্ত চুক্তির প্রশ্নে সরকারের আনা বিলটিকে সমর্থন করার সম্ভাবনা অদূর ভবিষ্যতে নেই। বিজেপি-র এক নেতার কথায়, “বাংলাদেশের ভোট তো আমাদের উদ্বেগের বিষয় হতে পারে না!”
বৈঠকের পর দীপু মণি অবশ্য জানিয়েছেন যে তিনি আশাবাদী যে ভারত দ্রুত তাদের ‘অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া’ শেষ করবে। ভারতের জনপ্রতিনিধিদের প্রতি তাঁর আহ্বান, গত সাড়ে চার বছরে দু’দেশের মধ্যে যে অগ্রগতির সুফল পাওয়া গিয়েছে, এ বার তার ভিতের উপর দাঁড়িয়ে তাঁরা কিছু করে দেখান। তাঁর কথায়, “জেটলির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন যে ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নে তাঁর দলের সমর্থন রয়েছে। ভারতীয় সংসদে স্থলসীমান্ত চুক্তি সমর্থন করার জন্য আমি জেটলিকে অনুরোধ করেছি। তিনি জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে সতীর্থদের সঙ্গে কথা বলে তার পর জানাবেন।”
বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়-সূত্র সীমান্ত চুক্তি এবং তিস্তা দু’টি বিষয় নিয়েই মুখ খুলেছে। সুত্রের বক্তব্য, “স্থলসীমান্ত চুক্তির বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং দীপু মণির কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই বিলটিকে আসন্ন বর্ষাকালীন অধিবেশনে সংসদে পেশ করা হবে।” পাশাপাশি তিস্তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সূত্রের বক্তব্য, “বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে যে ভারত সরকার এ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য তৈরির চেষ্টা। তিস্তা নিয়ে দু’দেশ তথ্য-পরিসংখ্যান ভাগ করে নিচ্ছে।”
বৈঠকের পর আজ কিছুটা হতাশা ছিল দীপু মণির গলায়। এই দু’টি চুক্তি ফলপ্রসূ না হলে বাংলাদেশের নিবার্চনে কি তার প্রভাব পড়বে না? এই প্রশ্নের উত্তরে বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, “চুক্তিগুলি সম্পন্ন না হলে তা অবশ্যই হতাশাজনক হবে। তার পরিণামও দেশে পড়তে পারে। কিন্তু মানুষ তো দেখেছেন যে আগের সরকার এই বিষয়গুলিতে আদৌ উদ্যোগীই হয়নি। এগুলি তো আজকের বিষয় নয়, দশকের পর দশক জুড়ে ঝুলে রয়েছে। হাসিনা সরকার যে এই চুক্তিগুলির একেবারে অন্তিম পর্যায়ে নিয়ে এসেছে, আশা করি সেটা এখন সবাই বুঝবেন।’’
নৈশভোজেও বিষয়গুলি নিয়ে সলমন খুরশিদেরও সঙ্গে কথা হয়েছে দীপু মণির। দীপু বললেন, “গণতন্ত্রে এটা সর্বত্রই দেখা যায়, যে কোনও বিষয় নিয়ে বিভিন্ন বিরুদ্ধ মত তৈরি হচ্ছে। আবার এমন এক একটা সময় আসে, যখন জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখে ক্ষুদ্র স্বার্থকে ঝেড়ে উঠে দাঁড়াতে হয় আমাদের। আশা করব ভারতের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সেটা করবেন।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.