ফের গৃহযুদ্ধের সামনে দাঁড়িয়ে মিশর
সুনসান রাস্তাঘাট। মোড়ে মোড়ে কালো পোশাকে লাঠি হাতে সেনার জটলা। কিন্তু তাহরির স্কোয়ারের সামনের চিত্রটা একেবারে উল্টো। যুযুধান দু’পক্ষ একে অপরের দিকে মুখ করে গলা ফাটিয়ে চেঁচিয়ে যাচ্ছে। আর তাদের মাঝে বালির বস্তা দিয়ে ব্যারিকেড করে দাঁড়িয়ে সেনা। রাস্তায় টহল দিচ্ছে সাঁজোয়া গাড়ি। আকাশে সেনা বিমান। ফের গৃহযুদ্ধের আশঙ্কায় সন্ত্রস্ত মিশরবাসী। উদ্বিগ্ন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাও।
গত ৩ জুলাই মিশরের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুরসিকে দুর্নীতির অভিযোগে সেনাবাহিনী গদিচ্যুত করার পর থেকেই দেশের জনগণ সরাসরি দু’ভাগে বিভক্ত। তার উপর মুরসির বিরুদ্ধে প্যালেস্তাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাসের সঙ্গে যোগসাজশে ২০১১ সালে কয়েকটি থানা এবং জেলে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন মুরসি সমর্থকেরা। মুরসির দল মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্য এসাম এল-এরিয়ান সেনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে তিনি লিখেছেন, “যাঁর হাত ধরে আরব বসন্তের একটা সফল রূপদান সম্ভব হয়েছিল আজ সেই মুরসিই সেনার হাতে নির্যাতিত।” তাঁর মতে, জেলে হামলা চালানোর অভিযোগ একেবারে মিথ্যে। নিজের পক্ষে কথা বলার জন্য কোনও আইনজীবী পর্যন্ত দেওয়া হয়নি মুরসিকে। কেউ জানতেই পারছে না শুনানির নামে ঠিক কী চলছে। সেনার কুৎসিত চেহারাটা সবার সামনে চলে এসেছে বলেই মনে করছেন এরিয়ান। আর তাই সেনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদই এক মাত্র পথ বলেই জানালেন তিনি। সেনার অভিযোগের বিরোধিতা করা হয়েছে হামাসের তরফেও।
শুক্রবার মুরসির মুখোশ নিয়ে সমর্থকদের প্রতিবাদ। ছবি: এপি।
অন্য দিকে সেনাপ্রধান জেনারেল আব্দেল ফতেহ্ আল-সিসি মুরসি সমর্থকদের বিরুদ্ধে পথে নামার ডাক দিয়েছেন। ২৩ জুন মিশরের একটি আদালত জানায়, হামাস জঙ্গিরা ২০১১ সালে জেলে হামলা চালিয়ে বন্দিদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করে। তখন সেনা বাহিনীর তরফে জানানো হয়, মুরসি এই ঘটনায় হামাস জঙ্গিদের সাহায্য করেছিলেন। তার পরেই ওই আদালত মুরসিকে ১৫ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। সেনা অভ্যুত্থানে গদিচ্যুত হন মুরসি। যদিও মুরসি প্রথম থেকে দাবি করে আসছেন, ২০১১-য় আরব বসন্ত চলাকালীন হোসনি মুবারক-বিরোধীদের গ্রেফতার করে জেলে পোরা হয়েছিল। তখন মুবারক-বিরোধীরাই জেলে হামলা চালিয়ে বন্দিদের উদ্ধার করেন। এই ঘটনায় তাঁর বা হামাস জঙ্গিদের যোগ ছিল না।
মুরসিকে গ্রেফতার করা হতে পারে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ২৮ জুন থেকে তাহ্রির স্কোয়ারে ধর্নায় বসেন মুরসি-সমর্থকেরা। অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে মুরসি-বিরোধীদের পথে নামার ডাক দেন সিসি। উল্টো দিকে মুরসি-সমর্থকদের শুক্রবারের মধ্যে ধর্না তোলার আদেশ দেন। না হলে ফলাফল ভাল হবে না বলেও নাকি হুমকি দিয়েছেন সিসি। আর সিসি-র বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ জানার পর থেকেই উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রপুঞ্জ। গত ৮ জুলাই মুরসি বিরোধী-আর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ৫০ জন মুরসির সমর্থক নিহত হয়েছিলেন। এখনও যদি দু’পক্ষের কেউই তাদের জেদ না ছাড়ে তা হলে গৃহযুদ্ধ আসন্ন বলে মনে করছে রাষ্ট্রপুঞ্জের পর্যবেক্ষক দল। এই পরিস্থিতিতে মিশরের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। মহাসচিব বান-কি-মুন অবিলম্বে মুরসিকে ছেড়ে দেওয়ার আবেদন জানানোর পাশাপাশি মুরসির বিরুদ্ধে চলা মামলার স্বচ্ছতা বজায় রাখারও আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
কিন্তু গৃহযুদ্ধ না গণতন্ত্র, কোন পথে হাঁটছে মিশর তা সময়ই বলবে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.