নিরাপত্তার স্বার্থে শহরে বসানো ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা ঠিকাদার সংস্থা বদলে দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে ফের বিতর্ক দানা বাঁধছে। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ভাবে পুলিশে সে ব্যাপারে অভিযোগ না জানানোয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বুধবার শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানায় এসজেডিএ’র তরফে অভিযোগ করা হয়। পুলিশেরই একটি সূত্র জানিয়েছে, তাতে কেবল জানানো হয়, শহরের রাস্তায় ক্যামেরা বসানোর কাজ করা হচ্ছে। তা খতিয়ে দেখা হোক। ‘অভিযোগ’ স্পষ্ট না করে দায়সারা ভাবে তা জানানো নিয়ে ক্ষুব্ধ পুলিশের একটি মহলও। অভিযোগ ঠিক মতো না পেলে অভিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে পুলিশের তরফে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সমস্যা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে পুলিশের উপরেই দোষ পড়বে। তা জানিয়ে এসজেডিএকে অভিযোগের বিষয় স্পষ্ট করে ফের জানাতে বলা হয়েছে।
দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার সংস্থার তরফে গভীর রাতে শহরে বসানো ক্যামেরাগুলি বদলে দিলেও এসজেডিএ’র তরফে সরাসরি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে গড়িমসি মনোভাব নিয়ে সরব বিরোধী বামেরা। অভিযোগ জানাতে এসজেডিএ’র ভূমিকাকে তারা হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন। অভিযুক্তদের একাংশকে বাঁচাতেই এসজেডিএ কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করে অভিযোগ দিচ্ছে না বলে তারা দাবি করেন। এসজেডিএ’র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক শরদ দ্বিবেদী অবশ্য দাবি করেন, “আমাদের তরফে বিস্তারিত জানিয়েই পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে।” পুলিশের তরফে অবশ্য অভিযোগে সমস্ত বিষয়টি পরিষ্কার করে জানানোর ক্ষেত্রে খামতি রয়েছে বলেই জানানো হয়েছে।
প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “এসজেডির ভূমিকা হাস্যকর হয়ে উঠেছে। শাসক দলের বিধায়ক তথা এসজেডিএ’র প্রাক্তন চেয়ারম্যানের সময় ওই কাজ হয়েছে। তা ছাড়া শাসকদলের নেতাদের অনেকেই নানা ভাবে ওই কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। তাঁদের আড়াল করতেই স্পষ্ট করে অভিযোগ জানাতে চাইছে না এসজেডিএ কর্তৃপক্ষ।” বর্তমান কর্তৃপক্ষ দুর্নীতি আড়াল করতে সচেষ্ট হলে মানুষই এর বিচার করবে বলে তিনি দাবি করেন। শহরের নিরাপত্তার স্বার্থে বসানো ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার মান এবং বরাত পাওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। শুরু হয়েছিল তদন্তও। তার মধ্যেই ঠিকাদার সংস্থার তরফে গভীর রাতে ক্যামেরাগুলি বদলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এসজেডিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল পুলিশের তরফে শহরের নিরাপত্তার স্বার্থে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরাগুলি তাদের যথাযথ ভাবে হস্তান্তর করতে বলা হয়েছিল। এর পরেই এসজেডিএ ঠিকাদার সংস্থাকে কোথায় কী ক্যামেরা বসানো হয়েছে তা বুঝিয়ে দিতে বলে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই গভীর রাতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় বসানো ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরাগুলি বদলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অথচ এসজেডিএ ব্যবস্থা না নেওয়ায় নিম্নমানের যে ক্যামেরা বসানো হয় বলে অভিযোগ তার সবই বদলে দেওয়া হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
|