|
|
|
|
প্রসঙ্গ মোদীর ভিসা |
চিঠি-বিতর্ক ঝামেলাই বাড়াল সাংসদদের
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
একেই বলে হিতে বিপরীত। মোদীকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করতে গিয়ে নিজেরাই বিপাকে পড়েছেন!
রাজ্যসভায় উত্তরপ্রদেশের নির্দল সাংসদ মহম্মদ আদিবের উদ্যোগে সাংসদদের সই করা একটা চিঠি গিয়েছিল খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দফতরে। মোদী যাতে ভিসা পান, আমেরিকায় গিয়ে সম্প্রতি তার জন্য সওয়াল করে এসেছেন রাজনাথ। তার পরই সাংসদদের এই পত্রবাণ! তবে তাতে আলাদা করে লাভ কতটা হয়েছে, তা অবশ্য নিশ্চিত নয়। মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জেন সাকিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “যদি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভিসার জন্য আবেদন করেন, তা হলে বিবেচনা করে দেখা হবে আবেদনটি আইন ও নীতি অনুযায়ী যথাযথ কি না। এখনও পর্যন্ত তিনি ভিসার জন্য আবেদন করেননি।” এর আগেও যত বার মোদীর মার্কিন ভিসা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে, আমেরিকার জবাব এটাই হয়ে এসেছে।
তার চেয়েও বড় ফ্যাসাদ হল, স্বাক্ষরকারী হিসেবে যে সব সাংসদের নাম চিঠিতে ছিল, তাঁদের অনেকেই দাবি করছেন, চিঠিটি জাল। প্রায় এক ডজন সাংসদ ওই চিঠির সঙ্গে তাঁদের যোগ নেই বলে দাবি করেছেন। ইউপিএর প্রাক্তন শরিক ডিএমকে নেতা করুণানিধিও আজ জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর দলের কেউ এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেননি। ডিএমকে কখনও দেশের বিদেশনীতিতে হস্তক্ষেপ করেনি। যদি দলের সঙ্গে আলোচনা না করে কোনও সাংসদ এই চিঠিতে স্বাক্ষর করে থাকেন, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও পিছপা হবে না দল।
গোটা ঘটনায় উল্লসিত বিজেপি। কারণ, অন্য বিষয়ে মোদীর বিরোধিতা করা হলে বিজেপিকে তা খণ্ডন করার জন্য আসরে নামতে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ঘটছে উল্টো। মোদীর বিরোধিতা করে যাঁদের স্বাক্ষর রয়েছে, তাঁরাই এখন এক-এক করে পিছু হঠছেন। এই চিঠি যে আসলে জাল, সেটা প্রমাণ করার জন্য যিনি সবথেকে বেশি সরব হয়েছেন তিনি সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি। যিনি গত কালই সংবাদমাধ্যমের কাছে শুধু এই চিঠির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ক্ষান্ত হননি, লিখিত আকারে দলের পক্ষ থেকে বিবৃতিও দিয়েছেন।
সীতারামের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, নিজের সই দেখেই তিনি বুঝে গিয়েছিলেন, এ নিয়ে কারচুপি হয়েছে। লোকসভার জন্য সাধারণত সবুজ রঙের চিঠি ও রাজ্যসভার জন্য লাল রঙের হয়। সীতারামও প্রথমে ধন্দে ছিলেন রং নিয়ে। পরে দেখেন সবুজ রঙের চিঠিতে তাঁর সই রয়েছে। আর তার উপরে ভারতীয় সাংসদদের নাম ও স্বাক্ষর। সীতারামের বক্তব্য, সিপিএম কোনও দিনই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় মেটানোর জন্য অন্য দেশের দ্বারস্থ হয় না। আমেরিকা হলে তো কথাই নেই! তবে সংখ্যালঘু সিপিআই নেতা আজিজ পাশা আবার দাবি করে বসেছেন, তিনি সীতারামকে সই করতে দেখেছেন। অথচ গত কাল থেকে সীতারাম গলা ফাটিয়ে বলে আসছেন, এই চিঠির বিন্দুবিসর্গ তিনি জানেন না।
সিপিএম নেতাদের আফশোস, বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহের মার্কিন সফর নিয়ে রাজনৈতিক আক্রমণ করার সুযোগ ছিল। এই চিঠি-বিতর্কে সেই মোড়টা ঘুরে গেল। কতকটা একই রকম ভাবছেন বিজেপির মধ্যেকার মোদী-বিরোধীরাও। যেমন মুরলীমনোহর জোশী এ দিন বলেছেন, রাজনাথ মোটেই মোদীর ভিসার জন্য আবেদন করে আসেননি। এটা সরকারের মাথাব্যথা, দলের নয়।
|
পুরনো খবর: ওবামাকে চিঠি, সই অস্বীকারে বিতর্ক তুঙ্গে |
|
|
|
|
|