মুম্বইয়ে মাত্র ১২ টাকায় ভরপেট খানার হদিশ দিতে গিয়ে কংগ্রেসকে বিপাকে ফেলেছেন দলের নতুন মুখপাত্র রাজ বব্বর। তাঁর হয়ে সাফাই গাইতে গিয়ে আজ বিতর্ক আরও বাড়িয়ে তুললেন কংগ্রেসের আর এক মুখপাত্র রশিদ মাসুদ। এক ধাপ এগিয়ে দিল্লিতে ৫ টাকায় পেটচুক্তিতে থালিরও ঠিকানা দিলেন তিনি।
যোজনা কমিশন দারিদ্রের সংখ্যাতত্ত্ব প্রকাশের পর গত কাল কংগ্রেসের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন মুখপাত্র রাজ বব্বর। দেশে গরিবের সংখ্যা কমার ব্যাপারে সরকারের কৃতিত্ব দাবি করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। কিন্তু
|
রশিদ মাসুদ |
মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে পাল্টা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। রাজ বব্বর বলেন, “মুম্বইয়ে এখনও ১২ টাকায় ভরপেট খাবার পাওয়া যায়। বড়া পাও-সব্জি, এমনকী পেট ভরা ভাতও।” রাজ বব্বরের এই মন্তব্য নিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে চড়াও হওয়ার সুযোগ ছাড়েননি বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, দারিদ্র নিয়ে রসিকতা করছেন রাজ। বিজেপির সেই অভিযোগের জবাব দিতে আজ মুখ খোলেন রশিদ মাসুদ। তিনি বলেন, “মুম্বইয়ে ১২ টাকায় খাবার পাওয়া যায় কি না জানি না, কিন্তু দিল্লিতে এখনও পাঁচ টাকায় পেট ভরা খাবার মেলে।” জানতে চাওয়া হয়, দিল্লির কোথায় এমন খাবার পাওয়া যায়? জবাবে তিনি বলেন, “জামা মসজিদ এলাকায় গেলেই এমন থালি মিলবে।” রশিদ এ-ও দাবি করেন, খাবারের জন্য তাঁর নিজেরই দিনে পাঁচ টাকার বেশি খরচ হয় না।
রাজ ও রশিদের দুই মন্তব্য নিয়ে আজ যথেষ্ট হইচই হয়। অস্বস্তিতে পড়ে যায় কংগ্রেসও। কংগ্রেসকে আরও চাঁচাছোলা আক্রমণে নেমে পড়ে বিজেপি। শুধু তাই নয়, সরকারকে কটাক্ষ করতে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও যোজনা কমিশনের উপাধ্যক্ষ মন্টেক সিংহ অহলুয়ালিয়াকে ৩৩ টাকা করে দু’টি মানি অর্ডার পাঠিয়ে দেন দিল্লি বিজেপি সভাপতি বিজয় গোয়েল। কারণ যোজনা কমিশনের মতে, শহরে কেউ দৈনিক ৩৩ টাকা খরচ করলে তাঁকে আর দরিদ্র বলা যাবে না।
পরিস্থিতি বেগতিক হওয়ায় অবশেষে কংগ্রেসের তরফে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, “দারিদ্র নিয়ে এ ভাবে রাজনীতি করাটা ঠিক হচ্ছে না। দারিদ্রের সংখ্যাতত্ত্ব নিয়েও রাজনীতি করা উচিত নয়।” বস্তুত যোজনা কমিশনের সংখ্যাতত্ত্ব প্রকাশের পর কালই কংগ্রেসের এক নেতা বলছিলেন, দলের তরফে যে ভাবে কৃতিত্ব নিতে সাংবাদিক বৈঠক করা হচ্ছে, তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ, দরিদ্রের সংখ্যা কমলেও এখনও বহু মানুষ দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন। সেই স্পর্শকাতরতার কথা মাথায় রাখা উচিত। বস্তুত হয়েছেও তাই।
|