সিটি-অটোর মধ্যে এক কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে শিলিগুড়ি। মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনায় অভিযুক্ত অটো-চালক সঞ্জয় রায় গ্রেফতার হলেও ঘটনার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা রুখতে পথে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এলাকাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, “সিটি-অটোর চালকদের একাংশ মহিলা যাত্রীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। পুলিশ-প্রশাসন ঠিকঠাক নজরদারি করলে এমন হত না।” কাল, শুক্রবার অটোচালকদের একাংশের এ ধরনের ‘দৌরাত্ম্য’ রুখতে মোমবাতি নিয়ে মৌনী মিছিলের ডাক দিয়েছেন নিগৃহীতার শুভার্থীরা।
পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, যাতে ওই ধরনের ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার আভারু রবীন্দ্রনাথ বলেন, “শহরে নজরদারি বাড়ানো দরকার। এই মুহূর্তে পুলিশের অভাব রয়েছে।” বুধবার জলপাইগুড়ি আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক অভিযুক্ত অটো চালককে ১৪ দিন জন্য জেল-হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
মঙ্গলবার রাতে সেবক রোডে একটি শপিং মলের অদূরে ঘটনাটি ঘটে। একাদশ শ্রেণির ছাত্রীটি টিউশন পড়ে সিটি-অটোয় (সাধারণ অটোর চেয়ে আকারে বড়) চেপে ফিরছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, আট জন বসার জায়গা থাকা ওই অটোর পিছনের আসনে তিন জন যাত্রী ছিলেন। চালকের পাশে যাত্রী নেওয়ার নিয়ম না থাকলেও অটোচালক ছাত্রীটিকে তার পাশের আসনে বসায়। অন্য যাত্রীরা নেমে যাওয়ার পরে অটোচালক ছাত্রীটির উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। মেয়েটির চিৎকার শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে হাজির হন। ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে চালককে একপ্রস্ত মারধরের পরে পুলিশের হাতে তুলে দেয় জনতা।
ঘটনাস্থল থেকে ভক্তিনগর থানা বড়জোর দু’কিলোমিটার দূরে। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় নেওয়ায় এলাকায় ক্ষোভ ছড়ায়। সেই প্রসঙ্গ তুলেই ভক্তিনগর থানার সামনে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখায় ডিওয়াইএফ। এর পরে থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসীদের একটা বড় অংশ। চালকের পাশে বসার নিয়ম নেই। তা ছাড়া, কমিশনারেট চালুর পরে পুলিশের যে ২০টি মোবাইল ভ্যানকে টহলদারি করতে দেখা যেত, সেগুলি তুলে নেওয়া হয়েছে কেন, সে প্রশ্নও ওঠে।
শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পরিবহণ আধিকারিক রাজেন সুনদাস বলেন, “সিটি-অটোয় চালকের পাশে কাউকে বসানো যায় না। নিয়ম ভাঙা রুখতে ফের অভিযান হবে।” ছাত্রীটির পড়শিদের দাবি, “অটোচালকদের একাংশ বেপরোয়া, দুর্বিনীত। যেন সকলের সঙ্গে বোঝাপড়া রয়েছে। এর প্রতিকার হওয়া দরকার। পুলিশ-প্রশাসনের টনক নড়াতে শুক্রবার মোমবাতি নিয়ে মৌনী মিছিল হবে।”
‘শিলিগুড়ি সিটি-অটো ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’-এর সম্পাদক নির্মল সরকার জানান, তাঁরাও চান ওই চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তিনি বলেন, “আমরা নির্যাতিতা মহিলার পরিবারের প্রতি সহানুভূতিশীল।” |